শিরোনাম
লকডাউনের খবরে সদরঘাট-বিমানবন্দর স্টেশনে উপচে পড়া ভিড়
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২১, ১৪:৪৩
লকডাউনের খবরে সদরঘাট-বিমানবন্দর স্টেশনে উপচে পড়া ভিড়
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউনে যাচ্ছে সরকার। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন বেশিরভাগ মানুষ।


রবিবার (৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর সদরঘাট ও বিমানবন্দর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লেগেছে। ইতোমধ্যে সকালে চাঁদপুর, ভোলা, সুরেশ্বর, নড়িয়া, মুলফৎগঞ্জ, চন্ডিপুর, নোমরহাট, গঙ্গাপুর, দুলারচর, মুন্সিগঞ্জ, মোহনপুরসহ বিভিন্ন জায়গার লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। এদিকে হুড়োহুড়ি করে যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে দেখা গেছে।


লঞ্চে প্রবেশের শুরুতে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার ও মাস্ক পরার জন্য বারবার সচেতন করা হলেও ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা অনেকেই। ৬০ শতাংশ ভাড়া নিলেও অর্ধেক যাত্রী নেয়ার বিধিনিষেধ মানছে না বেশিরভাগ লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে ঘাটে ও লঞ্চে মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। লালকুঠি ঘাট থেকে সকালে একমাত্র বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায় গ্রিনলাইন ওয়াটার ওয়েজ নামে একটি লঞ্চ। সেখানে যাত্রীর চাপ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাত্রী নিচ্ছের তারা।


চাঁদপুরগামী সুমন নামে এক যাত্রী বলেন, সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে লকডাউন। শহরে বসে থাকার চেয়ে গ্রামে যাওয়া ভাল তাই গ্রামে ফিরছি।


চাঁদপুরগামী সোনারতরী লঞ্চের টিকিট বিক্রেতা হারুন বলেন, অন্যদিনের চেয়ে আজ বেশি চাপ। বেশি যাত্রী থাকলেও আমরা অর্ধেক যাত্রী নিয়েই যাচ্ছি।


গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের টিকেট কাউন্টার জানান, যাত্রীর চাপ অন্যদিনের চেয়ে বেশি। তবে আমরা অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলছি।


৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ জানায়, আমরা আমাদের আগের ভাড়ার সঙ্গে ১০০ টাকা যোগ করেছি। আগে ৭০০ টাকা ভাড়া ছিল এখন ৮০০ টাকা করা হয়েছে।


বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্যমতে, রবিবার (৪ এপ্রিল) সদরঘাট থেকে দূরপাল্লার ৮৫টি লঞ্চ ছেড়ে যায়। বরিশালের উদ্দেশে গতরাতে ছেড়ে যায় ৬টি লঞ্চ ও সকালেই সবগুলো ঢাকা ফিরেছে।


বরিশাল থেকে ঢাকাগামী এমভি মানামী লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, বরিশাল থেকে ঢাকা মানুষ কম ফিরছে। আজ একদম যাত্রী কম ছিল। সোমবার থেকে লকডাউন তাই কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেনা।


এদিকে লোকাল ট্রেনগুলোতে শোভন চেয়ারে এক সিটে একজন করে বসার কথা থাকলেও তিন থেকে চারজন করে বসছেন। তাদের কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।


রবিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় সিরাজগঞ্জগামী লোকাল ট্রেনে পরিবার নিয়ে ওঠেন আরমান হোসেন। আসন না পেয়ে পরিবারের ৪ সদস্যকে নিয়ে দাঁড়িয়েই রওনা দিয়েছেন তিনি।


হোসনে আরার মতো এমন আরো অন্তত ২৫ জনকে একটি বগিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ওই বগিতে তখন প্রতিটি আসনে বসে ছিলেন চার থেকে পাঁচজন করে যাত্রী।


আরমান নামে এক যাত্রী বলেন, আগামীকাল সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তাই নির্ধারিত সময়ের আগে বাড়ি রওনা দিয়েছি। আজ যেতে না পারলে এক সপ্তাহের জন্য আটকে যেতে হবে।


আরেকটি বগিতে চার ফুটের একটি আসনে গাদাগাদি করে বসেছেন টাঙ্গাইলের চারজন যাত্রী। তাদের মধ্যে সালাউদ্দিন নামের একজন বলেন, লোকাল ট্রেনে আমরা সবসময় এভাবে গাদাগাদি করে যাতায়াত করি। কিন্তু লকডাউনের ঘোষণায় ট্রেনে যাত্রী অনেক বেশি। চাইলেও এখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াত করা সম্ভব নয়।


বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রী অনেক বেশি। ধারণা করা হচ্ছে- লকডাউনের ঘোষণায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।


তবে তিনি দাবি করেন, স্টেশনে মাস্ক ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ট্রেনে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করতেও দেয়া হচ্ছে না।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com