শিরোনাম
ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণ
আদালত প্রাঙ্গণে মজনুর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৫৭
আদালত প্রাঙ্গণে মজনুর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ
বিবার্তা প্রতিবদেক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় হয়েছে আজ। এ জন্য বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় মামলার একমাত্র আসামি মজনুকে।


এরপর তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। আদালতে হাজতখানায় নেয়ার পথে পুলিশ সদস্যদের প্রতি হাত উঁচু করে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয় মজনু। কী কারণে এই হুঁশিয়ারি, জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোনো কিছু বলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, মজনুর কাঁধের ওপরে একটি শার্ট রাখা ছিল। সেটি নামাতে বললে সে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে।


আদালতে নেয়ার পর সে বলতে থাকে, ‘আমারে ছাইড়া দেন। আমি তো কোনো অন্যায় করিনি। আমি এতিম। আজ এক বছর যাবৎ আমি জেলে। আমি ধর্ষণ করিনি।’


আদালতের এজলাসে দুপুর ২টা ২৯ মিনিটে হাজির করা হয় তাকে। এ সময় খুবই উচ্চস্বরে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে মজনু। সে আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। ভবন থেকে লাফ দেয়ার হুমকি দিয়ে বলে, ‘আমারে ছাইড়া দেন। আমি রিকশা চালাই। জেলে আমাকে ডাল আর কচুর ভর্তা খেতে দেয়। আমারে ছাইড়া দেন।’


বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় দিকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার একমাত্র আসামি মজনুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।


বুধবার (১৮ নভেম্বর) রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহম্মেদ অরেঞ্জ বলেন, ‘ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি মজনুর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর)। মামলাটির কার্যক্রম রাষ্ট্রপক্ষ ১৩ কার্যদিবসে শেষ করতে সক্ষম হয়েছে। আসামি মজনুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছে। তাই আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রত্যাশা করছি আসামি মজনুর সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।'


অপরদিকে আসামি মজনুর আইনজীবী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মজনুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। রায়ে মজনু খালাস পাবেন বলে আশা করছি।’


এর আগে, ১২ নভেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন।


এই মামলার ২৪ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। এর আগে গত ২৬ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহারের আদালত অভিযোগ গঠন করেন। গত ১৬ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
গত ১৬ মার্চ ঢাকা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক আবু সিদ্দিক মজনুকে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।


গত ৯ জানুয়ারি ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার আসামি মজনুর সাত দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। রিমান্ড শেষে গত ১৬ জানুয়ারি আদালতে ধর্ষণের ঘটনায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে সে। জবানবন্দি শেষে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে মজনু কারাগারে রয়েছে।


উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৫টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে ওই ছাত্রী বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কুর্মিটোলা বাসস্টেশনে নামার পর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করতে থাকে। মাঝপথে তাকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ঘটে। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরে ওই ছাত্রীর। পরে তিনি রিকশায় করে বান্ধবীর বাসায় যান। সেখান থেকে বান্ধবীসহ অন্য সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।


বিবার্তা/খলিল/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com