শিরোনাম
দুর্নীতি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে ডা. জাফরুল্লাহ'র পরামর্শ
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:১০
দুর্নীতি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে ডা. জাফরুল্লাহ'র পরামর্শ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধান্ত্রীর উদ্দেশ্য করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, পাপিয়াকে ধরে, ওকে ধরে, বিচ্ছিন্নভাবে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। দুর্নীতি বন্ধ করতে চাইলে আগে নিজের বাড়ি থেকে ঠিক করতে হয়। শুরু করতে হবে আপনার বাড়ি থেকে। তারপর আমাদেরও সম্পিতর তথ্য প্রকাশ করেন। তারপর প্রশ্ন করেন, জাফরুল্লাহ'র এই সম্পত্তি কোথায় থেকে অর্জিত হলো। কেবল অন্যেরটা দেখবো, আমারটা দেখবো না এটা হতে পারে না।


বৃহস্পতিবার ( ২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার-নিপীড়ন- হয়রানি ; ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরসহ সারাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নামে মামলা ও সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।


গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।


সমাজের নানা স্তরে দুর্নীতির উদাহরণ টেনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “আজকে দুর্নীতি কোথায় পৌঁছেছে, সবচেয়ে বড় দুর্নীতি সরকার স্বয়ং। এখানে মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার হরণ করে, এখানে মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ,তার চেয়ে বড় দুর্নীতি কি হতে পারে? মালেকের দুই তলা, সাত তলা দুটা বাড়ি, আফজালের ১০টা বাড়ি, বা ১০ কোটি থেকে অনেক বেশি দুর্নীতি আমি মনে করি সরকারের। সরকার তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে।


“সরকারের অন্যায় আচরণ দেশকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আজকে সরকারকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই, এখনও সময় আছে, সংশোধন প্রয়োজন।”


ভিপি নূর প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “আজকে আমি খুব বেশি মর্মবেদনায় আছি। আজকে ভিপি নূর … সে যদি অন্যায় করে থাকে, সেটার বিচার হবে। তা বলে তাকে হয়রানি করা যাবে না।


“ছাত্র রাজনীতি একটা প্রসেশন করে, তাদের বের হতে দেবেন না, সেটা তো হয় না। আপনারা জনগণকে বের হতে দিচ্ছেন না। সেজন্য দেশটা নৈরাজ্যের দিকে চলছে।”


ধর্ষণের অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক ছাত্রী রবিবার রাতে লালবাগ থানায় নূরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।


মামলার প্রধান আসামি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুন, যিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। নূর এই পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক।


মামলা দায়েরের পর সোমবার রাতে ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে নূর ও তার ৭ জন সহযোগীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।


পুলিশি ধরপাকড়ের সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “যখন দেশে অনাচার বেড়ে যায়, ব্যথায় মানুষ নীল হয়ে যায়, তখনই ছাত্রসমাজ জাগে, ছাত্রসমাজ সচেতন করে। যখন চূড়ান্তরকম অব্যবস্থাপনা তখনই ছাত্রসমাজ রাস্তায় নামে। সেদিনও যারা রাস্তায় নেমেছে, তারা কি গাড়ি ভেঙ্গেছে? কাউকে মেরেছে? পুলিশ লাঠি দিয়ে .. সোটা দিয়ে… পরে উল্টা তাদের নামে মামলা দিয়েছে।
“এ জাতীয় স্বৈরাচার নীতি কখনও দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব বন্ধ করেন, এটা আপনার স্বার্থে। আজকে প্রয়োজন ন্যায়-নীতি, সুষ্ঠু সুশামন; সুশাসন না হলে হবে না।”


ডিজিটাল আইনকে ‘অগণতান্ত্রিক, অনৈতিক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “ডিজিটাল সিকিউরিট আইন বিনা বিচারে হত্যার সামিল। আজকে রাজনীতিবিদদের সহনশীল হতে হবে। ক্রিটিসিজম সহ্য করতে হবে।


“আজকে এখানে মনে রাখা দরকার, দুর্নীতি কোন পর্যায়ে আছি আমরা। সরকার তো নিজেই দুর্নীতিগ্রস্থ। তারা নিজে অন্ধ হয়ে গেছে। তারা ভুলভ্রান্তি দেখতে পাচ্ছেন না। ফলে সবার কণ্ঠরোধ করেছেন।”


পেঁয়াজ আমদানি ইস্যুতে ভারতের সমালোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করতেও ছাড়েন না তিনি।


“ভারতের হঠাৎ অনৈতিকভাবে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেন। পঁচা পেঁয়াজ পাঠান। এ জাতীয় খেলা নিয়ে আমরা তো কখনো সাহস করে বলতে পারি না।


“ভারতের সঙ্গে কিসের বন্ধুত্ব? যে বন্ধু আমার স্বার্থ দেখে না, একতরফা তার সাথে বন্ধুত্ব হতে পারে না। শোষকের সাথে শাসিতের বন্ধুত্ব হয় না।”


সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক সঙ্কট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বাংলাদেশ সৌদি শ্রমিকদের সঙ্কট বিষয়ে তিনি বলেন, “যখন করোনা আসে, আমি তখন বলেছিলাম আমাদের উচিৎ হবে, সারা পৃথিবীতে আমাদের এক কোটি শ্রমিক ভাই-বোনেরা বিদেশে আছেন, তাদের চাকরি নিশ্চিত করা।


“এত দিন তারা আমাদের দেখাশোনা করেছে, সরকারের উচিত হবে কয়েক কোটি ডলার তাদেরকে পাঠানো, দেশগুলোর সাথে সমঝোতা করা।”


ভারতের করোনার টিকা বাংলাদেশে ট্রায়াল করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভারত তো অন্যের জন্য ঠিকাদারি করছে। ভারতের তো এটা নিজস্ব আবিস্কার বা কিছু না। একটি আন্তর্জাতিক জায়গায় গেলেও ভারতীয়রা নিজেদের সবসময় ভারতীয় ভাবে, কিন্তু আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক ভাবি। ফলে আমাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারিনা আমরা।


“আমাদের স্বার্থ যে জোরেশোরে বলতে হবে, সেটায় ব্যর্থ হচ্ছি আমরা। এর একটা কারণ আমাদের দেশের সুশাসন নেই, গণতন্ত্র নেই, আমি কথা বলতে পারছি না।


বিবার্তা/জাহিদ/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com