শিরোনাম
চীনা প্রেসিডেন্ট ঢাকা আসছেন ১০ অক্টোবর
গুরুত্ব বাড়ছে বাংলাদেশের, উদ্বেগে পাকিস্তান
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০১৬, ০৮:৪৬
গুরুত্ব বাড়ছে বাংলাদেশের, উদ্বেগে পাকিস্তান
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে। আর এজন্যই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। আগামী ১০ অক্টোবর তিনি বাংলাদেশে আসতে পারেন বলে কূটনীতিক সূত্র জানিয়েছে। তবে তার এই সফর নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশকে নিয়ে চীনের আগ্রহ বাড়ুক, এটা মোটেও কামনা করছে না পাকিস্তান।


বাংলাদেশ সফরকালে চীনা প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় মিলিত হবেন। এ দুই নেতা ১৫ ও ১৬ অক্টোবর ভারত সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোয়ায় অনুষ্ঠিত বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) সম্মেলনে যোগ দেবেন। আর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংও যোগ দেবেন ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে। গোয়াতেই এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।


ভারত বর্তমান ব্রিকসের (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) চেয়ারম্যান। সব মিলিয়ে বিশ্ব রাজনীতির অঙ্গনে বাংলাদেশ এই মুহূর্তে একটি বহুল আলোচিত নাম। বলার অপেক্ষা রাখে না, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গুরুত্ব আরো বেড়েছে। জন কেরির ঢাকা সফরের আগে ঢাকা ঘুরে গেছেন ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী (আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) রোরি স্টুয়ার্ট। টেরেসা মের মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়া রোরি স্টুয়ার্টের এটা প্রথম বাংলাদেশ সফর।


গত ২৩ জুন ব্রিটেনে গণভোট ও গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর ব্রিটেনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং বাংলাদেশে ব্রিটেনের সহযোগিতার ধরন নিয়ে আলোচনা করতেই রোরি স্টুয়ার্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন।


সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র চীনের প্রেসিডেন্টের সফর প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। জানা গেছে, ঢাকা-বেইজিং কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চলতি বছরে চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের ঢাকা সফরের আলোচনা চলছে অনেক দিন ধরে। বছরের শুরুতে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানাতে চিঠি দেন। সেই চিঠি এবং কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগের মধ্য দিয়ে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সফরটি হতে পারে বলে আভাস দেয় বেইজিং।


পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চীনের প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরের দিন-তারিখ এখনও সুনির্দিষ্ট করে বলার সময় আসেনি। আমরা উভয়েই একটি সময়কে টার্গেট করে প্রস্তুতি শুরু করেছি। তবে চীনের প্রেসিডেন্ট আগামী ১০ থেকে ১২ অক্টোবর ৩ দিনের সফরে ঢাকা আসতে পারেন এমন একটি ধারণা পাওয়া গেছে।


প্রেসিডেন্টের আসন্ন সফরের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হওয়ার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ঢাকার কর্মকর্তারা। চীনের প্রেসিডেন্টের সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগের পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়ন এবং সামরিক সহযোগিতার বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে চায় ঢাকা। সফরকালে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হবেন প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং।


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে এই সম্পর্ক আরো গভীর হবে। সম্প্রতি চীনের জিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী নানজিং এ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রাদেশিক নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


এদিকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক রক্ষা করে আসছে। ভারত মহাসাগর কিংবা দক্ষিণ চীন সাগর প্রশ্নে বাংলাদেশ কোনো পক্ষ অবলম্বন করেনি। চীন বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশী। চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ গুরুত্ব দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে গিয়েছিলেন ২০১৪ সালে। তখন বেশ কয়েকটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বেশ কয়েকটি মৈত্রী সেতু চীন তৈরি করে দিয়েছে। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুতেও চীনা কন্ট্রাক্টরদের ভূমিকা রয়েছে।


উল্লেখ্য, চীন এই মুহূর্তে এশিয়ার অর্থনীতিতে এক নম্বরে এবং ভারতের অবস্থান তৃতীয়। ফলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে চীন ও ভারত যে ফ্যাক্টর, তা অস্বীকার করা যাবে না। বাংলাদেশ এই দুটি দেশের সঙ্গে ভারসাম্যমূলক নীতি অনুসরণ করে আসছে।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com