মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলার আসামি বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার (৯ আগস্ট) দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয় ২-এর উপপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, দুদকের অনুসন্ধানে ওসি প্রদীপ কুমার ও তার স্ত্রীর নামে-বেনামে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে স্ত্রীর নামে চট্টগ্রাম মহানগরে ছয়তলা বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট, একাধিক গাড়ি ও অন্যান্য সম্পদের প্রমাণ পাওয়া যায়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে আসে, টেকনাফ থানার সদ্য বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অবৈধ অর্থে চট্টগ্রামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। স্ত্রী চুমকি কারণের নামে করেছেন মৎস্য খামার, বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি, বিপুল পরিমাণ কৃষি-অকৃষি জমি। স্ত্রীর নামে তিনি ব্যাংকে রেখেছেন বিপুল পরিমাণ টাকা। বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০৯ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পান। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর কুঞ্জুরী গ্রামে। তার বাবা হরেন্দ লাল দাশ ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) নিরাপত্তা প্রহরী। তার দুই সংসারে রয়েছে পাঁচ ছেলে ও ছয় মেয়ে। প্রদীপের ভাই সদীপ কুমার দাশ সিএমপির ডবলমুরিং থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত। তাদের আরেক ভাই দিলীপ কুমার দাশ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের হেডক্লার্ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতে তার সৎ ভাইয়েরা থাকেন।
স্ত্রী চুমকির নামে যত সম্পদ: প্রদীপ দাশের স্ত্রী চুমকি গৃহিণী হলেও দুদকে জমা দেয়া হিসাব বিবরণীতে তাকে মৎস্য খামারি হিসেবে দেখানো হয়েছে। ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূলধনে শুরু করা মৎস্য খামারে চুমকি প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। মৎস্য চাষের লাভের টাকায় কিনেছেন চট্টগ্রাম নগরীতে জমি, গাড়ি-বাড়ি। হিসাব বিবরণীতে চুমকির স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- নগরীর পাথরঘাটা এলাকায় চার শতক জমি (দাম ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা)।
ওই জমিতে গড়ে তোলা ছয়তলা ভবনের (মূল্য এক কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার); পাঁচলাইশে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কেনা হয় ৬ গণ্ডা ১ কড়া ১ দন্ত জমি (দাম এক কোটি ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৬০০ টাকা); ২০১৭-১৮ সালে কেনা হয় কক্সবাজারে ঝিলংজা মৌজায় ৭৪০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট (দাম ১২ লাখ ৩২ হাজার টাকা)। সব স্থাবর সম্পদের মূল্য দেখানো হয়েছে তিন কোটি ৫৯ লাখ ৫১ হাজার ৩০০ টাকা। এছাড়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দেখানো হয়েছে- প্রাইভেটকার (দাম পাঁচ লাখ টাকা), মাইক্রোবাস (দাম সাড়ে ১৭ লাখ টাকা) ও ৪৫ ভরি স্বর্ণ। ব্যাংকে ৪৫ হাজার ২০০ টাকা দেখানো হয়েছে।
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]