শিরোনাম
যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২০, ১৬:৫২
যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শনিবার সারাদেশে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কার মধ্যেই এবারের ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে যে আনন্দ-উচ্ছাস থাকার কথা তা এবার ম্লান করে দিয়েছে মহামারী করোনাভাইরাস, সাথে যোগ হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা।


করোনা মোকাবেলায় ও সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকারের নির্দেশনায় এবার খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। সারাদেশের ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে।


রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ তার পরিবারের সদস্য এবং কয়েকজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গভবনের দরবার হলে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।


রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন জানান, রাষ্ট্রপ্রধান তার পরিবারের সদস্য এবং কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ওই ঈদ জামাতে ইমামতি করেন বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা সাইফুল কবীর।


এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত হয়নি। শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানেও ঈদ জামাত এবার অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের ৬টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের প্রধান জামাত এবার বায়তুল মোকাররম মসজিদেই অনুষ্ঠিত হয়েছে।


প্রত্যেকটি জামাতেই মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। সকাল ৭টা থাকে প্রতিটি জামাত চলার সময় বিপুলসংখ্যক মানুষকে মসজিদের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। মসজিদে জায়গা না পেয়ে দক্ষিণ গেটে বাইরে স্টেডিয়ামের সামনের সড়কে অনেককে নামাজে অংশ নিতে দেখা গেছে।


শনিবার সকাল ৭টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ ক্বারি কাজী মাসুদুর রহমান।


ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামান ডিএসসিসি মেয়রের সাথে ঈদের প্রথম জামাতে নামাজ আদায় করেন।


এরপর পর্যায়ক্রমে ৭টা ৫০, ৮টা ৪৫, ৯টা ৩৫, ১০টা ৩০ এবং ১১টা ১০ মিনিটে
অনুষ্ঠিত হয় শেষ ঈদ জামাত।


দ্বিতীয় জামাত সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। এ জামাতের ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী, মুকাব্বির থাকেন ক্বারী হাবিবুর রহমান মেশকাত।


তৃতীয় জামাত সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা এহসানুল হক, মুকাব্বির ছিলেন মাওলানা ইসহাক।


চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে। এ জামাতের ইমামতি করেন পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম, মুকাব্বির ছিলেন মো. শহীদুল্লাহ।


পঞ্চম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে। এ জামাতের ইমামতি করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ূর রহমান খান, মুকাব্বির ছিলেন খাদেম হাফেজ মো. আব্দুল মান্নান।


ষষ্ঠ ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১১ টা ১০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক উপ-পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রব মিয়া, মুকাব্বির ছিলেন খাদেম হাফেজ মো. আব্দুর রাজ্জাক।


নামাজ শেষে খুতবা পেশ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নির্দেশনা মেনে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখেন মুসল্লিরা।


নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করা হয়। পাশাপাশি সম্প্রতি বৈশ্বিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও নিহতদের জন্য দোয়া করা হয়েছে। করোনা থেকে মুক্তির জন্য মুসল্লিরা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান।


তবে ঈদের নামাজ শেষে চির পরিচিত দৃশ্য মুসল্লিদের হাত মেলানো ও কোলাকুলির দৃশ্য এবার চোখে পড়েনি। করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ থেকে বিরত থাকেন মুসল্লিরা।


প্রত্যেকটি জামাতেই দক্ষিণ গেট দিয়ে মুসল্লিদের সারি ধরে আর্চওয়ে দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈদুল আযহা’র জামাত সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ- মসজিদুল জামিআয় অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম খতীব ড. সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন। এছাড়া,বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল জামে মসজিদে সকাল ৮ টায় ঈদ-উল-আজহা’র জামাত অনুষ্ঠিত হয়।


এদিকে রাজধানীর গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদে ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল ৬টা, দ্বিতীয়টি ৮টায় এবং তৃতীয়টি ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়।


এদিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।


পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান, সামাজিক সুরক্ষা বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাসহ সাধারণ মুসল্লিরাও অংশগ্রহণ করেন।


মিরপুরের কাজীপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল ৭টা, দ্বিতীয়টি ৮টা এবং তৃতীয়টি ৮টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়।


এছাড়া ঐতিহ্যবাহী সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকার মসজিদ এবং ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।


লক্ষ্মীবাজার নূরাণী জামে মসজিদে সকাল ৮ টায়, লক্ষ্মীবাজার মিয়া সাহেব ময়দান খানকা শরীফ জামে মসজিদে সকাল ৭ টায়, লালবাগ জে এন সাহা রোডস্থ বায়তুস সালাম জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭ টায় প্রথম ঈদ জামাত। এখানে সকাল সাড়ে ৮ টায় দ্বিতীয় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। লালবাগ গফুর মসজিদে প্রথম জামাত সকাল সোয়া ৮টায় ও দ্বিতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়।


কারওয়ান বাজার আম্বর শাহ জামে মসজিদে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটে ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের প্রধান খতিব ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর,


নগরীর চকবাজার ইসলামবাগ বড় মসজিদে সকাল ৭ টায় ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব শাইখুল হাদিস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, এছাড়া সকাল ৮ টায় ও সকাল ৯ টায় আরো দু’টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।


সেগুন বাগিচাস্থ মসজিদে নূর-এ সকাল সাড়ে ৭ টায় ঈদ জামাতে ইমামতি করেন খতীব মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম সুবহানী, ঢাকার কামরাঙ্গীরচর জামিয়া নুরিয়া মসজিদে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটে ঈদ জামাতে ইমামতি করেন নুরিয়া মসজিদের খতিব ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াযী, কামরাঙ্গীরচর রহমতিয়া জামে মসজিদে সকাল ৭ টায় ঈদ জামাতে ইমামতি করেন খতিব মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, আকসা হুজুরপাড়া কামরাঙ্গীরচর মসজিদে সকাল ৭ টায় ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, ঢাকার ডেমরার ঐতিহ্যবাহী দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া মাদরাসা জামে মসজিদে সকাল ৭ টায় ঈদ জামাতে ইমামতি করেন খতীব মাওলানা মো. মনিরুল ইসলাম এবং ডেমরার বড় ভাঙ্গাস্থ আল আকসা জামে মসজিদে ( আলহাজ নান্নু মুন্সি) সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।


এছাড়া মহাখালীর মসজিদে গাউসুল আজমে ৩টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com