শিরোনাম
তথ্য যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:১৪
তথ্য যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো গুজ‌বে কান দে‌বেন না। সত্য তথ্য না জানা বা যাচাই-বাছাই না করা পর্যন্ত শেয়ার দে‌বেন না। এতে দে‌শের ক্ষ‌তি, সমা‌জের ক্ষ‌তি ও ব্যক্তির ক্ষ‌তি হয়।


বুধবার (৮ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জা‌তিক স‌ম্মেলন কে‌ন্দ্রে তৃতীয় বাংলা‌দেশ ডি‌জিটাল ‌দিবস ২০২০ সম্মাননা প্রধান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ত‌ব্যে তি‌নি এ আহবান জানান।


প্রধানমন্ত্রী বাটন টিপে ‘আমার সরকার’ অ্যাপের উদ্বোধন করে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কথা বলেছিলাম, এটা আজ বাস্তব।


তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ স্থাপনের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত রচনা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু দেশকে উন্নয়ন অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে সে কর্মসূচি। পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর নেয়া কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করে। শিক্ষার হার বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছিলাম, মানুষের মধ্যে যখন স্বচ্ছলতা আসছিল তখন ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর উন্নয়ন কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়।


এর আগে ৯০ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় তখন একটি মোবাইল ফোনের দাম ছিল এক লাখ টাকা। মোবাইল ফোনের কল করলেও ১০ টাকা, ধরলেই ১০ টাকা মিনিট বিল আসতো। বিএনপির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোর্শেদ খানের একক কোম্পানি একচেটিয়া ব্যবসা করার ফলে মোবাইলের দাম কমেনি। তখনকার সরকারের অজ্ঞতার কারণে ব্রডব্যান্ড নিতে পারেনি। বিশাল সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে যায়। এভাবে তারা দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যায়।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর কয়েকটি কোম্পানিকে মোবাইল ফোন বিক্রির অনুমতি দেয়া হলো। প্রতিযোগিতার কারণে মোবাইল ফোনের দাম ও কল চার্জ কমতে থাকে। এখন এক লাখ নয়, দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে মোবাইল পাওয়া যায়। কৃষক এখন মোবাইলের মাধ্যমে ফোন করে ছবি পাঠিয়ে ফসলের, গরু-ছাগল, হাস-মুরগি সবকিছুর চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল সেবা দিতে পারছি। ৯৯৯ ও ৩৩৩ এ ফোন করে সেবা নিচ্ছে। যে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম তা এখন সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে।


তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা এবং দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার জন্য আমরা ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলি। এখন সব অফিস-আদালত কম্পিউটাইজ হয়ে গেছে। ই-টেন্ডারের কারণে টেন্ডার বাক্স ছিনতাই বন্ধ হয়ে গেছে।


আমরা ৮ হাজার পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল করেছি। ৩ হাজার ৬০০ ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন ১৬ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করছে। আইটি খাতে গত পাঁচ বছরে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার ইন্টারনেট গ্রাহক সৃষ্টি হয়েছে।


শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর কল্পনা নয়, এটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে। আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি, যার কারণে দেশ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল এখন সবাই ভোগ করছে। এর মাধ্যমে আমাদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। সবাই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। দেশের বেশিরভাগ জায়গায় ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি রয়েছে। এছাড়া দুর্গম এলাকায়ও ব্রডব্যান্ডের কানেকটিভিটি দেয়া হবে।


তিনি আরো বলেন, দেশে ই-পাসপোর্ট প্রস্তুতের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই এটি চালু হবে। এছাড়া কৃষিতে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা আজ অনস্বীকার্য। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও গ্রামীণ জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ই-কৃষির অবদান রয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের দেশের তরুণ-তরুণীকে আউটসোর্সিং বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি করে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের আওতায় লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় প্রফেশনার আউটসোর্সিং ট্রেনিং প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে তরুণ-তরুণীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আউটসোর্সিং বিষয়ে প্রকল্পভিত্তিক কাজ করার সুযোগ থাকবে।


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এম জিয়াউল আলম স্বাগত বক্তব্য দেন।


এসময় ডিজিটাল প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় অনুষ্ঠানে ১৫ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়া হয়।


বিবার্তা/এনকে/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com