শিরোনাম
দেশজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট, দুর্ভোগ
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:৪৭
দেশজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট, দুর্ভোগ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে প্রথমে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি ছিল দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৪ জেলায়। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের ২০ জেলায়। শ্রমিকদের এ কর্মবিরতি ছিল যাত্রীবাহী বাসের ক্ষেত্রে।বুধবার (২০ নভেম্বরা) থেকে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সারা দেশে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট।


সড়ক মহাসড়কে যা দুই একটি পরিবহন ও ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি বের হয়েছে তাও চলতে দিচ্ছে না পরিবহন শ্রমিকরা।দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থামিয়ে চাবি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে।ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা।যার ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।এছাড়াও শ্রমিকরা দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে।


পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সারা দেশে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিঘ্ন ঘটছে। ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ধর্মঘটে বাজারে পণ্য সরবরাহ কমে গেছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির।


এদিকে, দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি জেলা ছাড়া প্রায় সারা দেশেই বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। কোনো কোনো জেলায় বাস চালানোর চেষ্টা করলেও তা আটকে দিচ্ছে পরিবহন শ্রমিকরা।


সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল, কাঁচপুরসহ ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে অবস্থান নিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। অনেক স্থানে রাস্তার ওপর রাখা হয়েছে বড় বড় যানবাহন। ফলে রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।


নারায়ণগঞ্জের পরিবহন শ্রমিকরা ঢাকার অংশে যানবাহন প্রবেশ ও এখান থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। গাড়ির মালিকরা বলছেন, মূলত এটি শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ধর্মঘট। এখানে মালিকপক্ষের কোনো কিছু নেই।


জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাসায় তার সঙ্গে বৈঠকে বসেন পরিবহন নেতারা। তবে সমঝোতা হয়নি। পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি তারা। সমাধান খুঁজতে একই স্থানে আজ সন্ধ্যায় আবার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।


বিধিমালা প্রণয়ন না করেই গত ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয় বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন। গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশব্যাপী নজিরবিহীন আন্দোলনের ফলে করা হয় এ আইন। আইনে ট্রাফিক নিয়ম ভঙে জরিমানা বেড়েছে হাজার গুণ পর্যন্ত। বেড়েছে কারাদণ্ডও। পরিবহন মালিক, শ্রমিকরা এতে অসন্তুষ্ট। তারা আইনটিকে কঠোর আখ্যা দিয়ে সংশোধনের দাবি করে আসছেন। গত রবিবার থেকে নতুন আইন প্রয়োগ শুরুর পরদিন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, কোনো চাপে পিছু হটবেন না। এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ধর্মঘটের ডাক আসে।


বিভিন্ন জেলায় বাস চলাচল বন্ধ রাখার পর মঙ্গলবার সারা দেশে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরিসহ পণ্য পরিবহনের যান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।


গতকাল সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের আহ্বায়ক মো. রুস্তম আলী খান নতুন আইন স্থগিত রাখাসহ ৯টি দাবিতে বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের এ কর্মবিরতি চলছে। পণ্যবাহী পরিবহনের ধর্মঘট শুরু হলে পণ্য পরিবহন বাধার মুখে পড়বে ও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।


পরিষদের নেতারা বলছেন, হালকা লাইসেন্স দিয়ে ভারী গাড়ি চালানো যায় না। ভারি গাড়ি চালানোর জন্য বিআরটিএ লাইসেন্স দিচ্ছে না। হালকা লাইসেন্স দিয়ে ভারি গাড়ি চালাতে গেলে জরিমানা করা হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। এ জরিমানা একজন চালক কিভাবে দেবেন- তাই তারা গাড়ি চালাবেন না। নতুন আইনে চালকের লাইসেন্সের পয়েন্ট কাটা হবে। এ আইন বাংলাদেশে চলে না।


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com