ছাত্রলীগের বুয়েট শাখা কয়েকজন নেতাকর্মীর হাতে নির্মমভাবে নিহত একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ ঢাকায় আর পড়বেন না।
জানা গেছে, মঙ্গলবার তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ছাড়পত্র (টিসি) নিয়েছেন। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হবেন তিনি।
ইতিমধ্যে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হতে ঢাকা বোর্ড তাকে অনুমতি দিয়েছে।
এর আগে ঢাকায় আর পড়ালেখা করবেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ফায়াজ। ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন ফায়াজ।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকর্মীদের ফায়াজ বলেন, ভাইকে হারিয়ে আমি একা হয়ে পড়েছি। ঢাকায় থাকার এখন কোনো মানে হয় না।
তিনি বলেন, ‘ফাহাদ ভাই আমার অভিভাবক ছিলেন। আমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে যে সম্পর্কটি ছিল তা এক কথায় প্রকাশ করা যাবে না। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক এমন ছিল যে মা–বাবার কথা তেমন মনেই হতো না। আর সেই ভাই এখন নেই। কার জন্য তা হলে ঢাকায় পড়ে থাকব। বড় ভাইকে হারিয়ে মা-বাবা এমনিতেই দিশেহারা। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা আর না, কুষ্টিয়াতে পড়াশোনা করব। এটিই পরিকল্পনা।’
উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের দিন ফায়াজ কুষ্টিয়াতেই ছিলেন। আবরার ফাহাদ যেদিন (রবিবার) কুষ্টিয়ার পিটিআই সড়কের বাড়ি থেকে চলে যান, সেদিন সকালে ঘুমিয়ে ছিলেন ফায়াজ।
ফায়াজ বলেন, ‘ভাই যাওয়ার সময় মা ডেকেছিল। কিন্তু শুয়েই ছিলাম। আমাকে শুয়ে থাকতে দেখে ভাই বলল, তাড়াতাড়ি ঢাকায় চলে আসবি। আমি ঘুমের ঘোরেই হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়েছিলাম। ভাইয়ের সঙ্গে এটিই ছিল আমার শেষ কথা।’
কান্নারত কণ্ঠে তিনি বলেন, এখন ভাই নেই, ঢাকায় আমি কার কাছে যাব?
ভাইয়ের এমন হত্যাকাণ্ড ঘটনার পর কি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ফায়াজ! তাই ঢাকায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত? এমন প্রশ্ন ওঠার আগেই নিজের আবেগের কথা জানালেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কোনো ভয় থেকে নয়, সত্যি কথা হচ্ছে- ঢাকাতে নিয়ে ভাই (ফাহাদ) আমাকে ঢাকা কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। সব ছিল ভাইয়ের ইচ্ছায়। ঢাকায় ও আমার অভিভাবক ছিল। বাবা-মা ওর হাতেই আমাকে তুলে দিয়েছিল। ভাই আমাকে সেভাবে যত্ন ও দেখভালও করতেন। এই যেমন ধরুন- মেসে পানি নেই, ভাইকে বলতাম, তিনি ব্যবস্থা করে দিতেন। এখন ও নেই, সেখানে কী করে থাকব আমি।’
বিবার্তা/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]