ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে মশা মারার কয়েল, ইলেক্ট্রিক ব্যাট, স্প্রে, ক্রিম, লোশন ও মশারির চাহিদা বহুগুণ বেড়েছে। বেচাকেনা হচ্ছে রমরমা। সুযোগ বুঝে এসব সামগ্রীর দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে পাইকারি বাজারে মশারির দাম বাড়েনি বলে জানিয়েছেন পাইকারি বিক্রেতারা। মশারির কোনো ঘাটতি নেই বলেও জানান তারা। ঈদের আগে বাজারে মশারির চাহিদা বেশি থাকলেও এখন কমে আসছে।
ফুলবাড়ীয়া সিটি সুপার মার্কেটের পাইকারি মশারি বিক্রেতা মো. শফিকুল ইসলাম বিবার্তাকে বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধির পর লোকাল বাজারের মশারির দাম বেশি হয়। তবে পাইকারি বাজারে মশারির দামের কোন হেরফের হয়নি। মশারির দাম ৫ থেকে ৬ মাস আগে যেমন ছিল, এখনো তেমন আছে। তবে ক্রেতার চাপ থাকায় খুচরা বাজারে মশারির দাম কিছুটা বেশি নিয়েছেন বিক্রেতারা।
তিনি বলেন, ঈদের আগে মশারির বেচাকেনা খুব ভালো ছিল। ঈদের পর প্রথম সপ্তাহে মানুষের সমাগম কম ছিল। তারপর ৫-৬ দিন বিক্রি ভালো ছিল। এর থেকে থেকে মশারি বিক্রি কমে আসছে।
দোকানে সাজিয়ে রাখা মশারি দেখিয়ে তিনি বলেন, মশারি এখন যেমন সাজিয়ে রেখেছি, কিছু দিন আগে এভাবে সাজিয়ে রাখতে পারতাম না। ক্রেতার চাপ ছিল অনেক। দোকানে ভিড় লেগেই থাকত। সব সময় বেচাকেনার ওপর থাকতে হতো। ব্যবসাও ভালো হয়েছে।
পাইকারি বাজারে ছোট মশারির দাম ৯০-১০০ টাকা, বড় মশারির দাম ১১০-১৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ভালোমানের মশারি ৪০০-৫০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট মশারি ২০০ টাকা ও বড় মশারি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ধানমন্ডি-১৫ নম্বরের ফুটপাতে আব্দুল মান্নান নামে একজন মশারি বিক্রি করছেন। তিনি বিবার্তাকে বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের কারণে মশারির চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে মশারি দাম একটু বেশি। আগের থেকে মশারি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে।
বর্তমানে চাহিদার দিক থেকে ম্যাজিক মশারি সব চেয়ে এগিয়ে। এ মশারির সুতা চিকন ও নরম হওয়ায় ফ্যানের বাতাস সহজেই প্রবেশ করতে পারে। যে কারণে এ মশারির চাহিদা বেশি।
ফুলবাড়ীয়া সিটি সুপার মার্কেটের নিউ ব্রাদার্স বেডিং স্টোরের নুরুল আমিন বিবার্তাকে বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে মশারির চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। তবে এখন চাহিদা কমে আসছে। ঈদের পর থেকে বেচাকেনা কমছে। এখন প্রতিদিনই মশারির চাহিদা কমছে।
তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গুতে মশারির চাহিদা বেশি হলেও পাইকারি বাজারে দাম বাড়েনি। আগে যেমন ছিল এখনো তেমন আছে। তবে লোকাল বাজারে দাম বাড়িয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।
গাবতলী থেকে আসা মানিক মিয়া নামে একজন পাইকারি মশারি ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন রেকর্ড পরিমাণ মশারি বিক্রি করেছি। এখনো অনেক চাহিদা আছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৬৫ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৫৯ হাজার ৩০ জন। বর্তমান দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৫৬২ জন। এদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে রোগী ৩ হাজার ৮১ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে ভর্তি রোগী ২ হাজার ৪৮১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় (২৫ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ২৬ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১ হাজার ২৫১ জন্য নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের মধ্যে ঢাকায় ৫৭৭ জন ও ঢাকার বাইরে ৬৭৪ জন।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৭৩টি মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনিস্টটিউট (আইইডিসিআর)। এর মধ্যে ৮৮টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫২ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিবার্তা/আকরাম/উজ্জ্বল/রবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]