শিরোনাম
রোহিঙ্গারা না ফিরলে ভাসানচরে পাঠানো হবে: মন্ত্রী
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০১৯, ০৮:৩৪
রোহিঙ্গারা না ফিরলে ভাসানচরে পাঠানো হবে: মন্ত্রী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বৃহম্পতিবার (২২ আগস্ট) থেকে কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইনে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু মিয়ানমার এখনো রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারেনি। ফলে আসন্ন প্রত্যাবাসন আবারো বাতিল হতে যাচ্ছে। তবে প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, যারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাইবেন না তাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে পাঠানো হবে। পাশাপাশি কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে যেসব বেসরকারি বিদেশি উন্নয়ন সংস্থা প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) থেকে প্রত্যাবাসন শুরু হবে। কিন্তু পত্রপত্রিকায় তো নেতিবাচক খবর পাচ্ছি। শুনতে পাচ্ছি, কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যাতে ওরা মিয়ানমারে ফিরে না যায়। শিবিরগুলোতে লিফলেটও বিতরণ করা হচ্ছে।


লিফলেটগুলোতে বলা হচ্ছে যে ৫টি দাবি না মানলে রোহিঙ্গারা ফেরত যাবে না। কিন্তু ইস্যুটা হচ্ছে, বাংলাদেশ কেন নট বি হোস্টেজ টু দেয়ার ডিমান্ড, রোহিঙ্গাদের ডিমান্ডে বাংলাদেশকে হোস্টেজ করা যাবে না, এটা ঠিক নয়। আগেও এসব কারণে রোহিঙ্গারা যায়নি। কিন্তু না গেলে ভবিষ্যৎটা তাদের খারাপ হবে। কারণ তাদের তো আমরা এতদিন বসিয়ে খাওয়াতে পারব না। তাদের পেছনে আমরা কোটি কোটি টাকা খরচ করছি। বিদেশিরা যে সাহায্য করছে আগামীতে এ সাহায্যও কমে যাবে।


তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের ফেরত যাওয়া উচিৎ। নিজের দেশে গেলে তারা তাদের ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে পারবে। আর তারা যে দাবি-দাওয়ার কথা তুলেছে, তা তাদের নিজের দেশে গিয়েই অর্জন করা উচিৎ।


সর্বশেষ যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে কেউই ফিরে যেতে রাজি হচ্ছে না- এমন অবস্থায় বাংলাদেশ কী করবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, না গেলে তারা ভুল করবে। যারা যাবে না, উই সুড টেক দেম, ফোর্স দেম টু ভাসানচর, তাদের ভাসানচরে পাঠিয়ে দিতে হবে।’


জানা গেছে, ৩ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তালিকার মধ্যে মাত্র ১০০ জনের মতো রোহিঙ্গা ফিরে যেতে রাজি হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেতে রাজি হওয়া রেলিটিভ টার্ম। ভয়েই অনেকে ফিরে যেতে রাজি হচ্ছে না। কারণ শিবিরগুলোতে এখন নতুন নতুন নেতা তৈরি হচ্ছে, তারা সবাইকে বলছে যে ফিরে যাওয়ার কথা বলবে তাকে গুম করে ফেলবে। এটা খুবই বাজে পরিস্থিতি। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ফেরত যেতেই হবে।


মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা তাদের জন্য অনেক কঠোর পরিশ্রম করছি। মিয়ানমার তো এমনিতেই রোহিঙ্গাদের নিতে চায় না। এখন মিয়ানমার ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। তাদের জন্য বাড়িঘর তৈরি করেছে, তাই এখন তাদের ফিরে যাওয়া উচিৎ।


এদিকে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জো এইচটে গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) নেপিডোতে সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে জানান, ২২ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যবাসন শুরু করতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্মত হয়েছে। প্রথম ধাপে ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে আনা হবে।


জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছে, প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়।


২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন প্রায় ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে মিয়ানমারের নাগরিক প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন।


বিবার্তা/রবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com