শিরোনাম
‘৫৭ ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি’
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০১৭, ১৩:৩৫
‘৫৭ ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি ৫৭ ধারা বাতিলের দাবিতে সাংবাদিক আজ রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আইসিটি আইন থেকে ৫৭ ধারা প্রত্যাহার এবং অন্য কোনো আইনে এ ধারাগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, এই আইনের ধারাগুলো সংবিধান পরিপন্থী এবং স্বাধীন মতপ্রকাশ ও সাংবাদিকদের প্রতি হুমকি। মিডিয়ার কণ্ঠরোধের জন্য এই আইন করা হচ্ছে।


প্রতিবাদ সমাবেশটির আয়োজন করে এশিয়ান জার্নালিস্ট চেরিটেবল সোসাইটি। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ সম্পাদক সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও ছড়াকার আবু সালেহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মঈন চৌধুরী প্রমুখ।


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রস্তাবিত খসড়া নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘এই আইনের খসড়ার ১৯ ধারায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার সব বিষয় বিদ্যমান থাকায় আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ এই ধারায়ও তথাকথিত মানহানি, সামাজিকভাবে অপদস্ত করার চেষ্টাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে নেয়ার বিধান বিশেষভাবে রাখা হয়েছে। যদিও আইনমন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছিলেন, ৫৭ ধারাটি থাকছে না। কিন্তু প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৯ ধারায় আরো শক্তভাবে তা রাখা হচ্ছে।’


এটা সাংবাদিকদের সাথে তামাশা উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা এটা ভেবে উদ্বিগ্ন যে প্রস্তাবিত খসড়ার ১৫ এর ৫ ধারা চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আরেকটি বড় বাধা হবে। কারণ এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কোনো বক্তব্য সরকারি ভাষ্যের বিপরীত হলে তা ‘ডিজিটাল সন্ত্রাসী অপরাধ’ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক বিধান সাংবাদিক সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে।’


অনলাইন গণমাধ্যমবিষয়ক নীতিমালার খসড়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, এতেও ৫৭ ধারাসহ তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিধানগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই খসড়া নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ এতেও কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কথিত মানহানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে নেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।



মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অন্তরায় ৫৭ ধারাসহ একই ধরনের অন্যসব বিধিবিধান বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কথিত মানহানির অভিযোগকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে নেয়ার বিধান বাতিলের দাবি জানান তারা। এ ধরনের বিষয়ের প্রতিবিধানের জন্য সবার আগে প্রেস কাউন্সিলে যাওয়া বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানান তারা।


এম আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, সরকারের কোনো নীতিমালা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম তাদের সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল মিডিয়া তথা ওয়েবসাইট, অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে কোনো রকম হস্তক্ষেপ সাংবাদিক সমাজ মানবে না না।


তিনি ৫৭ ধারায় গ্রেফতার যুগান্তরের বিজনেস এডিটর হেলাল উদ্দিনের মুক্তি ও সাংবাদিকদের ওপর সব হামলার নিন্দা জানিয়ে এসব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। একই সঙ্গে সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় যত মামলা আছে তা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তারকৃত সকল সাংবাদিকদের মুক্তিরও দাবি জানান তিনি।


কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই এই আইন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এই আইন করেছে। সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, গুম, খুনের বিরুদ্ধে যাতে সাংবাদিকরা লিখতে না পারেন সে জন্য এই আইন।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com