শিরোনাম
ঢাবি সাংবাদিক সমিতির জঙ্গিবাদ বিষয়ক সেমিনার
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ২২:১৫
ঢাবি সাংবাদিক সমিতির জঙ্গিবাদ বিষয়ক সেমিনার
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশই হোক বিজয়ের অঙ্গীকার শ্লোগানে জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।


মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সেমিনার কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।


সমিতির সভাপতি ফরহাদ উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ফররুখ মাহমুদের পরিচালনায় সেমিনারে জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।


আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম, ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াদুল করিম, সাবেক সভাপতি এম এম জসীম প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মানুষের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে যুদ্ধ, জঙ্গিবাদসহ সবই নির্মূল করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন হয় শিক্ষার। এই শিক্ষা শুধু শ্রেণিকক্ষের শিক্ষা নয়, এই শিক্ষা সমাজ, সংস্কৃতি, খেলা-ধুলা ও পারিবারিক শিক্ষা। তরুণ প্রজন্মকে এই শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।


উপাচার্য আরও বলেন, জঙ্গিবাদকে খণ্ডিতভাবে দেখার সুযোগ নেই। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা মোকাবেলায় গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, হতাশা মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করে। আর নেতিবাচক সংবাদ হতাশা তৈরি করে। তাই গণমাধ্যমকে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনে সতর্ক হতে হবে।


সেমিনারের মূল প্রবন্ধে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, শুধু আর্থিক অস্বচ্ছলতা নয়, হতাশ তরুণদের খুব সহজে জঙ্গিবাদে যুক্ত করা সম্ভব। তরুণটি কোন পরিবারের সেটা মুখ্য নয়, মুখ্য হলো সে তার সামনে কোনো আশার আলো দেখতে পাচ্ছে কি না। তাদের সামনে কোন রোলমডেল আছে কি না। যাকে তারা আদর্শ জ্ঞান করে অনুসরণ করতে পারে।


তিনি বলেন, জঙ্গি সমস্যার কারণে উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটি-হাঁটি-পা করে এগুনো বাংলাদেশ বর্তমানে এক গভীর সংকটে পতিত হয়েছে। জঙ্গিবাদ দমন করা না গেলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি অর্জন সম্ভব হবে না। এ জন্য জঙ্গি প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য দরকার।


অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, আমরা একটি ভোগবাদী সমাজে প্রবেশ করেছি। এর ফলে ছেলে মেয়েরা তাদের আবদার বাড়িয়ে যাচ্ছে। আবদার পূরণ না হলে, তারা হতাশ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে এক সময়ে তারা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হচ্ছে। মিডিয়াকে এই ধরনের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশে অত্যন্ত সচেতন হতে হবে। এ সময় তিনি পরিবারকে সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখারও পরামর্শ দেন।


ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষণ্নতার কারণেই তরুণদের সন্ত্রাসবাদে যুক্ত করা সহজ হচ্ছে। আর এর মূল কারণ হচ্ছে অর্থিক স্বল্পতা, চাকরি স্বল্পতা, পারিবারিক কলহ ও যথাযথ শিক্ষার অভাব।


সন্ত্রাসবাদের লড়াইয়ে সবাইকে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় মিডিয়ার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লাইভ সম্প্রচারে মিডিয়াকে আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে।


তিনি বলেন, বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে পারে। সন্ত্রাসবাদ আমাদের অস্তিত্বজনিত সমস্যা নয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে এটাকে সমূলে নির্মূল করা যাবে।


ইলিয়াস খান বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পড়ালেখার বাইরে অন্য কোনো জ্ঞান নেই। যার কারণে তারা নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে ফেলছে। এর প্রতিকারে প্রয়োজন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো।


এম এম জসীম বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণমাধ্যমের একটা নীতিমালা থাকা উচিত যে, কোন কোন সংবাদ প্রকাশিত হবে এবং কোনটি হবে না।


রিয়াদুল করিম বলেন, নীতিমালার পাশাপাশি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালাও থাকাও জরুরি।


বিবার্তা/লাভলু/মনোজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com