হাজংদের জীবন সংগ্রাম
আজ আর বিট্রিশ বিরোধী আন্দোলন নেই, নেই এই বাংলায় জমিদার প্রথা।
সময়ের বিবর্তনে থেমে গেছে হাজং বিদ্রোহ
জান দেব তবু ধান দেব না।
আপনি কি জানেন, ইতিহাসখ্যাত
টংক আন্দোলনের লড়াকু জাতি, এ’দেশের ভূমিজ সন্তান;
হাজংরা কেমন আছে?
আপনি কি দেখেছেন,
সুসং রাজবংশের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে হাজংদের জীবন? বিজয়পুরের সাদামাটির
মতো তাদের সহজ-সরল গ্রাম?
১৯৪৬ সালের ৩১ শে জানুয়ারী ক্যালেন্ডারের রক্তাক্ত পাতায় রাশিমনি দিবস।
একজন নারীর সম্ভ্রম রক্ষায়
আরেকজন নারীর জীবন বলিদান।
এই মহিয়সী নারীর আত্মত্যাগ
ইতিহাস কি মনে রাখবে?
মনে রাখবে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ?
বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালবাসায়
বহেরাতুলীর বুকে কেউ কি আসবে?
হাজং মাতা শহীদ রাশিমনির স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে?
কেউ কি দেখেছেন, টংক
আন্দোলনের কিংবদন্তী নারী কুমুদিনী হাজংয়ের অভাবের সংসার!
তাঁর মাটির ঘরে নিভে যাওয়া দীপ !
দেখেননি, পাথিনপড়া লজ্জাবতী হাজং মেয়ের নিষ্পলক মায়াবী চোখের কোণে লুকিযে থাকা কষ্ট!
এই ধরিত্রী জানে, এক সময়
হাজংদের ছিল মাইলের পর মাইল সোনালী ফসলের মাঠ!
গোয়ালভরা গরু, পুকুরভরা মাছ!
সেইসব দৃশ্যপট পাল্টে গেছে, এখন তারা নিজভূমে পরবাসী, মালিক থেকে দিনমজুর।
লক্ষী দেবী আজ তাদের পাশে নেই, জানি না, কোন অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সে!
তাদের সদা হাস্যোজ্জ্বৌল
লালটুকটুকে মুখে দেখি
পুষ্টিহীনতার ছাপ!
তাদের স্বপ্নভরা চোখে
ঝাঁকে ঝাঁকে জোনাকির
মেলা বসে না আর!
জলাশয়ে দল বেঁধে হাজং রমনীদের জাখামারার
ধুম পড়ে না আর।
দোলপুজা, দেউলি উৎসব
আর চরমাগা গানে পাহাড়ি ঝর্ণার ছন্দ হারিয়ে গেছে।
গারো পাহাড়ের পাদদেশে হাজং পল্লীতে ভালবাসার বাহারি রঙের প্রজাপতি উড়ে না আর!
হাজংদের ভাগ্যের নদীটি
আজ স্রোতহীন, মৃত ।
কবি ও লেখক: সুজন হাজং
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]