শিরোনাম
আমরা ছোটোরা মেতে উঠতাম তারাবাতি উৎসবে
প্রকাশ : ০১ মে ২০১৮, ১৭:১২
আমরা ছোটোরা মেতে উঠতাম তারাবাতি উৎসবে
লুৎফর রহমান রিটন
প্রিন্ট অ-অ+

টাটকা সুবাসে কী যে জাদু ছিলো রুটি আর হালুয়াতে
সেই খুশবুতে মেতে উঠতাম শবে বরাতের রাতে।
আগরবাতির সৌরভে ছিলো ধর্মীয় কিছু রীতি 

 

গরিব ভিখিরি হাসিমুখে নিতো এক সন্ধ্যার প্রীতি।
গাজর কিংবা পেঁপের হালুয়া বানাতো খালাম্মারা
এ-বাড়ি সে-বাড়ি বিলিবন্টনে মায়েদের ছিলো তাড়া। 
সুজির হালুয়া খুবই শাদামাটা বুটের হালুয়া মজা
(পুরান ঢাকার চকে পাওয়া যেতো নেশেস্তা আর গজা।) 

 

নারকেলে-দুধে সেউই কিংবা বর্ফি বানাতো মামি
তেজপাতা আর এলাচের স্বাদ মনে হতো কতো দামি!
শেমাইর বাটিতে পেস্তা বাদাম ও কাঠ বাদামের কুঁচি 
ঝাল মাংসের সঙ্গে পরোটা বনেদি বাড়ির রুচি।
কিশমিশ ছিল মাস্ট আইটেম শেমাই-এর রেসিপিতে 
চাইতো সকলে গরিবের হাতে অল্প হলেও দিতে।

 

আটার রুটির পাশাপাশি ছিলো চালের রুটির চল 
সন্ধ্যার পরে রুটি সংগ্রহে গরিব শিশুর দল-- 
কোত্থেকে যেনো জুটতো বাড়ির আলোকিত প্রান্তরে!
(ওরা কি জানতো পোলাও-কোর্মা আমরা খাচ্ছি ঘরে!!)

 

বড়দের ছিলো সারারাত ধরে বন্দেগি-ইবাদত 
পূণ্যের লোভে দান খয়রাতে আহা সে কী কসরৎ! 
মসজিদে গিয়ে শত রাকাতের সেজদায় থেকে নুয়ে...
সারা বছরের পাপগুলো ওরা একরাতে নিতো ধুয়ে!

 

আমরা ছোটোরা মেতে উঠতাম তারাবাতি উৎসবে
শবে বরাতের ভিন্ন মাত্রা শিশুদের কলরবে।
পটকাবাজিতে মুর্‌রার নাম ছিলো যে সবচে চড়া 
'মুর্‌রা' বাতির কাজটাই ছিলো প্যানিক সৃষ্টি করা!
লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে দ্রুত ছুটতো সে ভীতু লোকেদের পিছু 
কানমলা আর ধমক জুটেছে নিয়মিত কিছু কিছু!

 

মুর্‌রার ভয় পেতো না ছোটরা, বড়রাই ছিলো ভীত 
পথচারীদের নৃত্য করাতো মুর্‌রারা নিয়মিত! 
রাতের আকাশে আলোকসজ্জা আতশ-অগ্নি-দ্রোহে
বাতাসে ভাসতো বারুদের ঘ্রাণ পটকার সমারোহে।

 

আপারা জ্বালাতো রেলিং-এ সিঁড়িতে অজস্র মোমবাতি
আহা কৈশোর! আলোময় তোকে খুঁজি আমি আতিপাতি...

 

অটোয়া ০১ মে ২০১৮

 

বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com