
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক, ভাষাসৈনিক এবং একুশে গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তিত্বসহ সর্বস্তরের মানুষ।
শনিবার (২৮ মে) দুপর ১টায় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ শহিদ মিনারে আনার পরে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। জাতীয় পতাকা আবৃত মরদেহে উপস্থিত বিশিষ্ট নাগরিকর ও সংগঠনগুলো বিকাল ৩ টা অব্দি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জানাজার উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের উদ্দেশ্যে মরদেহ নেয়া হয়।
এরপর বিকাল ৪টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেখানে জানাজা শেষে বিকাল সাড়ে ৫টায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও একুশের গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও স্পিকারের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পনের পর থেকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ, মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদ, বাংলাদেশ সাহিত্য একাডেমি, সারগাম ললিতকলা একাডেমি, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন শিল্প সংস্থা, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার ইত্যাদিসহ আরো বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনগুলো ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়াও, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ মানুষ তাঁর কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জানিয়েছেন, দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে শহিদ মিনারে রাখা হবে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ। ৪ টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেখানে জানাজা শেষে বিকাল সাড়ে ৫টায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হবে।
বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, তিনি একুশে গানের রচয়িতা হিসেবে এর রক্ষণাবেক্ষণের চিন্তা আমৃত্যু করে গেছেন। হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ও তিনি আামাকে তার স্বরচিত একুশে গান অসাম্প্রদায়িক ঐক্য ও দেশমাতৃকার ভালোবাসা লালন করার জন্য সর্বস্তরের মানুষকে তাগিদ দিতে বলেছেন। তিনি যেমন তার সৃষ্টিতে অসাম্প্রদায়িক দেশ ও দেশের ঐক্যের কথা বলেছেন ব্যক্তি জীবনেও তিনি তার সাহসিকতাপূর্ণ একজন মানুষ হিসেবে আমাদের স্মৃতি হয়ে চলে গেলেন। মরহুমের প্রতি তিনি আত্মার মাগফিরারত কামনা করেন।
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী ছেলে অনুপম চৌধুরী রেজা বলেন, আমার বাবা বাংলাদেশের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তিনি সবসময় বাংলাদেশে তাকে দাফন করার কথা বলতেন বিদেশে থাকা অবস্থায়। তাই তার ভালোবাসার জায়গায় শেষ বারের মতো নিয়ে এসেছি। রেজা চৌধুরী সকলের কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার সঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় প্রেসক্লাব সার্বিক সহযোগিতা করছে।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী গত ১৯ মে (বৃহস্পতিবার) ভোরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
বিবার্তা/সাইদুল/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]