শিরোনাম
তারুণ্যে দীপ্ত আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২১, ১৫:৫৬
তারুণ্যে দীপ্ত আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

“...বহু বৃদ্ধকে দেখিয়াছি যাঁহাদের বার্ধক্যের জীর্ণাবরণের তলে মেঘলুপ্ত সূর্যের মতো প্রদীপ্ত যৌবন। তরুণ নামের জয়-মুকুট শুধু তাহারই যাহার শক্তি অপরিমাণ, গতিবেগ ঝঞ্ঝার ন্যায়, তেজ নির্মেঘ আষাঢ় মধ্যাহ্নের মার্তন্ড প্রায়, বিপুল যাহার আশা, ক্লান্তিহীন যাহার উৎসাহ, বিরাট যাহার ঔদার্য, অফুরন্ত যাহার প্রাণ, অটল যাহার সাধনা, মৃত্যু যাহার মুঠিতলে।”


জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের যৌবনের গান পড়ে তারুণ্যে দীপ্ত অনেক যুবকের হয়তো মনে মনে হাসি পায়। নিজের তারুণ্য শক্তি আর সক্ষমতার ওপর অগাধ বিশ্বাস চারপাশে আর খুঁজতে চায় না ওমন তেজী বৃদ্ধকে। কিন্তু নজরুলেরই সেই বৃদ্ধ আশেপাশে সহসা খুঁজে পাওয়া না গেলেও একটা দুটো মানুষ কেমন নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করে।


তেমনি এক তারুণ্যে দীপ্ত মানুষ আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি যেন নজরুলের তারুণ্যের এক বাস্তব উদাহরণ। এক জীবন যিনি পার করছেন একটা জাতিকে বই পড়ানোর গুরুত্ব বোঝানোর জন্য। আলোকিত মানুষের সন্ধানে যার অনুসন্ধিৎসু মন সদাই তৎপর।


তিনি বলেন, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়’। সেখানে স্বপ্নই যদি দিন দিন ছোট হয়ে আসে তাহলে? এর জন্যই তিনি মানুষকে বইয়ের জগৎটা চেনানোর জন্য জীবনভর সাধনা করেছেন এখনো করে যাচ্ছেন। গ্রন্থের ভুবন অবারিত স্বপ্নের ভূবন। স্বপ্নবান মানুষ তৈরিই তার ব্রত।


যুগের হাওয়ায় কত রীতিনীতি বদলে গেছে। এখন আর পরিবারে কিংবা সমাজে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে গল্প করতে পারেন কিংবা করেন এমন মানুষ নেই। একবিংশ শতাব্দীতে বেড়ে ওঠা সন্তানেরা বিনোদনের জন্য আর গল্প শোনে না। ঠাকুরমার ঝুলির মুখ বন্ধ, আরব্য রজনী, আলীবাবা চল্লিশ চোর কিংবা সোনার কাঠি-রুপার কাঠির পঙ্খীরাজের সেই রাজকুমার এখন চোখের সামনে টিভির পর্দায় হয়তো দেখা যায় কিন্তু মনের চোখ দিয়ে কল্পনা করার কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। তাই হয়তো শিশুর স্বপ্নের আকারও বড় হয় না।


কিন্তু তিনি চান মানুষ বই পড়ুক। নিজের জগতকে বইয়ের জগতের মতো বিস্তৃত করে নিজেকে আলোকিত করুক। সেই লক্ষে তার প্রতিষ্ঠিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ‘আলোকিত মানুষ চাই’ স্লোগানে কাজ করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন।


একটি সমাজের মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়ে তাকে তার স্বপ্নের সমান বড় করার চেষ্টায় নিয়োজিত ব্যক্তিই আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। ‘আলোকিত মানুষ চাই’স্লোগান দেয়ার দীর্ঘদিন পরেও যিনি দেখছেন ‘আলোকিত মানুষ নাই’। স্বার্থান্ধ আর স্বার্থপরতার গাঢ় অন্ধকারে কোনো কিছুই যেখানে ভালো করে দাঁড়াতে পারে না সেখানে তিনি আলোর মশাল জ্বেলে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠানকে। হয়তোবা দেশের কোনো এক প্রান্ত থেকে একদিন সেই আলোকিত মানুষের দেখা মিলবে যে কখনো আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের সাক্ষাতও পায়নি। কিন্তু ছোঁয়া পেয়েছে তার বইপড়া কর্মসূচির।


আজ তার জন্মদিন। ৮২ বছর বয়সী এই মানুষটির কর্মব্যস্ততা দেখলে মনে হয় ২৮ বছরের কোনো যুবক। চির তরুণ এই মানুষটির জন্য নিরন্তর শুভ কামনা।


বিবার্তা/অনামিকা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com