শিরোনাম
টানা নাইট করছেন তো মরছেন!
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০১৯, ১০:০৭
টানা নাইট করছেন তো মরছেন!
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

হাসপাতাল, হোটেল, সংবাদমাধ্যম, নিরাপত্তা এজেন্সি, তথ্যপ্রযুক্তি, কারখানার পাশাপাশি পরিষেবা ক্ষেত্রের এমন অনেক পেশা আছে, যাতে নাইট ডিউটি করতে হয়। মানে রাত জাগতে হয়। রাতে কাজ করতে হয়। কিন্তু এতে ভয়াবহ ক্ষতি হয়ে যেতে পারে মানবদেহের। এর ফলে চিকিৎসকরা ক্যান্সারের আশঙ্কা করছেন।


তারা বলছেন, এমন একটি জিনিস যা কোনো বস্তু বা পদার্থ কিংবা রাসায়নিক নয়, আদতে একটি অভ্যাস-তা হলো নাইট ডিউটি। রাতে লাগাতার কাজ করাকে কার্সিনোজেনিক আখ্যা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিজ্ঞানীরাও।


ডব্লিউএইচওর অধীন ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) সংস্থার গ্রুপ-২ মনে করছে, টানা রাত জাগলে শরীরের জৈব ঘড়ি বা বায়োলজিক্যাল ক্লকের ভয়াবহ পরিবর্তন হয়। ফলে তৈরি হয় স্তন, প্রস্টেট, পায়ু, অন্ত্রসহ নানারকম ক্যান্সার।


গত জুনে ফ্রান্সের লিঁয়তে ডব্লিউএইচওর এক বৈঠকে অংশ নেন ১৬টি দেশের ২৭ জন বিজ্ঞানী। তারা আইএআরসির সদস্য। গত দেড় দশকে সারা দুনিয়ায় হওয়া অনেক গবেষণার সঙ্কলন করে তারা এক প্রকার নিশ্চিত, টানা নাইট শিফটে কাজ করার জেরে শরীরে জন্ম নিতে পারে ক্যান্সার।


বিজ্ঞানীদের এ মূল্যায়ন সম্প্রতি বিজ্ঞানপত্রিকা ল্যান্সেট-অঙ্কোলজির জুলাই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। এরপরই দুনিয়ায়জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিষয়টি ফলাও করে ছেপেছে ইউরোপিয়ান সোসাইটি ফর মেডিকেল অঙ্কোলজির মতো ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের সংগঠনও।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, নাইট শিফট বলতে শুধু নাইট ডিউটি করাকেই নয়, ভূমধ্যসাগর পেরোনো রাতভরের বিমানযাত্রাকেও এর আওতায় ফেলা হচ্ছে। সারা দুনিয়ায় প্রতি পাঁচজন কর্মীর মধ্যে একজন নাইটি ডিউটি করেন। তাই আশঙ্কাও অনেক বড়।


ভারতীয় ক্যান্সার শল্য-চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় জানান, ডিউটি রোস্টার তৈরির ব্যাপারে ভারতে যেহেতু পশ্চিমের মতো স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রতিফলন নেই, তাই টানা রাত জেগে কাজ করার কুপ্রভাব আমাদের দেশে ঢের বেশি।


কেন টানা নাইট শিফটে কাজ করাকে কার্সিনোজেনিক বলা হচ্ছে? এমন বিষয়ে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল খান জানান, প্রকৃতি আমাদের জন্য রাতকেই নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ঘুমের জন্য।


আমরা যদি কেউ টানা সেই নিয়ম ভেঙে চলি, তাহলে আমাদের শরীরের জৈব ঘড়ি তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। তখন শরীরের উপর চাপ বাড়ে। সেটা সামলাতে, বলা ভালো, তার প্রতিক্রিয়ায় সারা শরীরেই অসংখ্য ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরি হয়। সেগুলোই আসল খলনায়ক। বিভিন্ন অঙ্গে ক্যান্সারপ্রবণ টিউমারের জন্ম দিতে এসব ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ভূমিকা রাখে।


তিনি মনে করেন সপ্তাহে একদিন বা মাসে চার-ছ’দিন নাইট ডিউটিতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। সমস্যাটা তখনই- যখন দিনের পর দিন কেউ রাতেই কাজ করে চলেন।


বিবার্তা/রবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com