শিরোনাম
অনিচ্ছায় বৃষ্টিতে ভিজে গেলে...
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০১৯, ১৫:০২
অনিচ্ছায় বৃষ্টিতে ভিজে গেলে...
মডেল: আমির পারভেজ ও জাকিয়া ইমি
শাহনাজ শারমিন
প্রিন্ট অ-অ+

আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে... জানি নে, জানি নে... কিছুতেই কেন যে মন লাগে না... এই চঞ্চল সজল পবন-বেগে... উদ্ভ্রান্ত মেঘে মন চায়... মন চায় ঐ বলাকার পথখানি নিতে চিনে... মেঘমল্লারে সারা দিনমান... বাজে ঝরনার গান।


চলছে আষাঢ় মাস। যখন তখন মেঘ আর বৃষ্টির বাগরাম। এ সময়ে বৃষ্টি হবে এটাই স্বাভাবিক। এমন দিনে ঘর ছেড়ে বাইরে যেতে কার ইচ্ছে করে বলুন? কিন্তু কাজকর্মতো ফেলে রাখা যায় না। বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজে যায় মনটাও। ব্যস্ত এ জীবনে বর্ষা কি সত্যিই স্বস্তি এনে দিতে পারে! তরুণদের যেমন উচ্ছ্বাসে ভিজে ওঠার প্রবণতা দেখা যায়। তেমনি রয়েছে অনেক ঝামেলা।


কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হয়ে বৃষ্টিতে ভিজে গেলে জ্বর, সর্দি, কাশিতে পুরো নাস্তানাবুদ অবস্থা। বৃষ্টি বিলাস কিংবা অনিচ্ছাকৃত ভেজা, সবক্ষেত্রেই প্রয়োজন বাড়তি কিছু সতর্কতা। নাহলে অসুস্থতায় ভুগতে হতে পারে। জেনে নিন বৃষ্টিতে ভিজে গেলে কী করা উচিত সেই সম্পর্কে কিছু তথ্য।


ভেজা কাপড় বদলে ফেলুন


বাইরে থেকে বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গে ভেজা কাপড় পাল্টে শুকনা কাপড় পরে ফেলুন। বেশিক্ষণ ভেজা কাপড়ে থাকলে সর্দি-কাশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে যত দ্রুত সম্ভব ভেজা কাপড় বদলে ফেলা ভালো।


কুসুম গরম পানিতে গোসল করে নিন


বৃষ্টির পানিতে ভেজার পরে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন। এতে শরীরে লেগে থাকা সব জীবাণু ধুয়ে যাবে। বৃষ্টির কারণে সর্দি-কাশি হওয়ার ঝুঁকিও কমে যাবে গোসল করে নিলে। গোসলের সময় অবশ্যই অ্যান্টিসেপটিক সাবান ব্যবহার করবেন। গোসলের পর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।


ব্রাশ দিয়ে ঘষে পা ধুয়ে ফেলুন


বৃষ্টি মানেই পা কাদায় মাখামাখি। রাস্তার ধুলোময়লা এবং রোগজীবাণু সব পায়ে লেগে যায় বৃষ্টিতে। তাই বাড়ি ফিরেই ব্রাশ দিয়ে ঘষে পা ধুয়ে ফেলুন। পা ধোয়ার সময় অ্যান্টিসেপটিক সাবান ব্যবহার করুন। নখের ফাঁকে জমে থাকা কাদামাটিও ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।


হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে নিন


গোসলের পর চুল শুকানোর পালা। দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা ছিলেন। তাই চুল শুকাতে দেরি করা চলবে না। দ্রুত চুল শুকাতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করুন। চুলগুলোকে শুকিয়ে ঝরঝরে করে নিন।


এক কাপ মশলা চা খান


সর্দি ও কাশি প্রতিরোধে মশলা চা অত্যন্ত উপকারী। আদা, এলাচ, তেজপাতা, লবঙ্গ, দারুচিনি দিয়ে তৈরি গরম গরম এক কাপ চা পান করে নিন। চায়ের প্রতি চু্মুকে সতেজ হয়ে উঠবেন আপনি।


গরম স্যুপ খান


শরীরের তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর এক বাটি গরম স্যুপ খেয়ে নিন। ভেজিটেবল, কর্ন কিংবা থাই যেটা আপনার পছন্দ সেটাই রাখুন খাবার তালিকায়। তবে খেয়াল রাখুন স্যুপটি যেন প্রচুর পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ হয়। সম্ভব হলে স্যুপে আদার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।


ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খান


ভিটামিন সি সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সর্দি কাশি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। লেবু ও লেবু জাতীয় সব টক ফল ভিটামিন সি’র চমৎকার উৎস। আমলকী, কমলা, মালটা, আঙুর, পেঁপে, আনারস, জাম ইত্যাদি ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। তাই সর্দি-কাশির কবলে পড়তে না চাইলে কিছু ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেয়ে নিন।


বোল্ড স্কাই


মেঘ-বৃষ্টির দিনে মনটা তো ভিজতেই পারে যখন-তখন। চাইলে ক্ষণিকের জন্য শহুরে হালচাল ভুলে বাস্তবেও আপনি ভিজতে পারেন বৃষ্টিতে। তবে হুটহাট বৃষ্টিতে যদি ভিজে যায় আদরের সোনামনি, তখন মনে জমে শঙ্কার মেঘ। স্বাভাবিকভাবেই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু কম আর তাই সচেতন থাকতে হবে।


যদি এমন হয় যে আপনি অফিস যাওয়ার পথে ভিজে গিয়েছেন তাহলে মাথা ঠাণ্ডা রেখে পুরো আত্মবিশ্বাসে কাজে মনোযোগী হন। বিব্রতবোধ করার কিছুই নেই। কারণ এই বৃষ্টির দিনে ভিজবেন এটাই স্বাভাবিক। মানুষের ভাবনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভেজা শরীরে থাকলে অসুখ হতে পারে। তাই চটজলদি নিজেকে আর নিজের কাপড়কে শুকিয়ে নিন।


যদি সম্পূর্ণ ভিজে গিয়েও থাকেন তাহলেও সর্বোচ্চ ১০ মিনিট লাগবে নিজেসহ কাপড় শুকাতে। প্রথমে একটি ফ্যানের জোগাড় করুন। কারণ আজকালতো সব অফিসে বা কাজের জায়গায় এসি থাকে। ফ্রানের তেমন একটা লক্ষ্য করা যায় না। তাই ফ্যানের নিজে দাড়িয়ে থাকুন ১০ মিনিটে পুরো ভিজে অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেয়ে শুকিয়ে যাবে কাপড়। তবে টেবিল বা স্টান্ড ফ্যান হলে বেশি দ্রুত ভিজে কমে শুকানো সম্ভব হবে।


আর যারা বৃষ্টিতে বাইক চালান


বাংলাদেশে যে সকল সময়ে বাইক চালানো বিপদজনক তার মধ্যে অন্যতম হলো বৃষ্টির মধ্যে বাইক চালানো। বাইক চালকদের বর্ষাকালে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।


বর্ষাকালে বাইকে সব সময়ে রেইনকোট সাথে নিয়ে চলতে হবে। বৃষ্টি আসলে বা আসার সম্ভবনা দেখা দিলেই রেইনকোট পরে ফেলতে হবে।


রেইনকোট এবং হেলমেট যেন উজ্জল রং এর হয়, অন্য চালক সহজেই যেন আপনাকে দেখতে পায়। মানিব্যাগ, ঘড়ি, মোবাইল ইত্যাদি রেইনকোটের ভেতরে ঢুকিয়ে নিতে হবে।


বাইক ধীরে চালাতে হবে এবং সামনের গাড়ী থেকে বেশ খানিকটা দূরে থাকতে হবে। ওভারটেকিং করা যাবে না। সামনে সমস্যা দেখলে সাবধানে ব্রেক চাপুন। কাদা, তৈলাক্ত, ঘাষযুক্তস্থানে ব্রেক করবেন না।


বেশি বৃষ্টির কারণে অন্ধকার হয়ে গেলে লোবিম এ হেডলাইট জ্বালিয়ে বাইক চালাতে হবে। রাস্তায় পানি জমে গেলে বেশি সাবধানতা অবলম্বন করুন।


শরীর ভিজে গেলে যত দ্রুত সম্ভব শরীর শুকানোর ব্যবস্থা করুন, নাহলে হাইপোথার্মিয়া বা শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে আপনাকে অসুস্থ করে ফেলবে।


বর্ষাকালে বজ্রপাত আরেকটি বড় সমস্যা। রাস্তার মধ্যে বজ্রপাত দেখলে বড় গাছের পাশে দাড়াবেন না বরং কোন পাকা বিল্ডিং এ আশ্রয় নিন। বৈদ্যুতিক তার/খুটি থেকে দূরে থাকুন।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com