প্রতিদিনের সঙ্গী হয়ে যে জিনিসটি আমাদের সঙ্গে থাকে তা হলো জুতা। যেখানেই থাকুন আর যে পরিবেশেই থাকুন পায়ে যদি আরামদায়ক জুতা না থাকে তবে আপনি কোথাও আরাম করে সময় কাটাতে পারবেন না। জুতা যেকোনো ব্র্যান্ড কিংবা উপাদানেরই হোক না কেন তাতে দাগ-ছোপ তো হবেই। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই জুতাটি নিজের জৌলুস হারিয়ে বাতিলের তালিকায় পড়ে যায়। কিন্তু আর নয়।
মোম পলিশ
জুতাকে সুন্দর ও দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য পানি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো মোম পলিশ করা। জুতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে এর ওপর মোমবাতি ঘষে সামান্য রোদে রাখতে হবে।
কাপড়ের জুতা
কাপড়ের জুতা পরিষ্কারের জন্য তা টুথব্রাশ দিয়ে ঘষতে পারেন। এ জন্য বেকিং সোডার সঙ্গে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ও পানি মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
রাবারের জুতা
যেসব জুতায় রাবার আছে, সেগুলোর দাগ পরিষ্কারের জন্য রাবারই সবচেয়ে ভালো। এ জন্য আগে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর একটি ইরেজার দিয়ে দাগগুলো ভালোভাবে ঘষতে হবে।
চামড়ার জুতা
চামড়ার জুতা নিয়মিত পরিচর্যা করলে দীর্ঘদিন ভালো থাকে। এ জন্য বাজারে রং ও পলিশ পাওয়া যায়। এ ছাড়া চামড়ার জুতা ফ্যাকাশে হয়ে গেলে তাতে সমান পরিমাণ ভিনেগার ও পানির মিশ্রণ ব্যবহার করা যায়। এ মিশ্রণ জুতার ওপর স্প্রে করে ঘষতে হবে।
দুর্গন্ধ
মানুষের দেহে ছয়টি স্থানে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, ১. পায়ের পাতা, ২. হাটুর ভাঁজে, ৩. গোপনাঙ্গে ৪. আন্ডার আর্মসে, ৫. মুখে. ৬. মাথার ত্বকে। আর মাঝে মুখ আর পায়ের গন্ধ নিয়ে মানুষ বেশি বিব্রতকর অবস্থায় পরে যান। আর পায়ে দুর্গন্ধ হওয়া বিব্রতকর ও অস্বস্তিকর একটি সমস্যা। পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার পিছনে মূল কারণ পা ঘেমে যাওয়া এবং এই ঘামের কারণে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয় যা বিশ্রি দুর্গন্ধ তৈরি করে। যাদের পা খুব বেশি ঘামে তাদেরকে এই সমস্যায় বেশি পড়তে হয়। দুর্গন্ধ হওয়ার কারণে জুতো খোলার সাথে সাথেই বিশ্রী চারদিকে ছড়িয়ে পরে যা বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্ম দেয়।
কমলার খোসা
জুতোর মাঝে কয়েকটি কমলার খোসা সারারাত রেখে দিন। কমলার খোসা জুতোর দুর্গন্ধ শুষে নিবে। ব্যবহারের সময় অবশ্যই কমলার খোসা ফেলে দিন।
বেবি পাউডার
বেবি পাউডার শুধু মাত্র বাচ্চাদের ত্বকের যত্নে ব্যবহার ছাড়াও নানা কাজে ব্যবহার করা যায়। জুতোর দুর্গন্ধ দূর করতেও এটি বেশ কার্যকর। জুতো পড়ার আগে পায়ে কিছুটা পাউডার ছিটিয়ে নিন, পাউডার যেন বেশি না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
বেকিং সোডা
বেকিং সোডা পায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে বেশ কার্যকরী। জুতো বা মোজা পড়ার পর কিছটা বেকিং সোডা ছিটিয়ে এইভাবে সারা রাত রেখে দিন। পরের দিন সকালে ব্যবহারের আগে বেকিং সোডা দূর করে নিন।
টি ব্যাগ
ব্যবহৃত টি ব্যাগ জুতোর ভিতরে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে বাঁধা দেয় তাই প্রথমে ফুটন্ত পানিতে টি ব্যাগ কয়েক মিনিট রেখে দিন। এটিকে তুলে ঠাণ্ডা হলে জুতোর মধ্যে রেখে দিন এক ঘণ্টা। এরপর টি ব্যাগটি ফেলে দিন জুতা ব্যবহার করুন।
ভিনেগার
ভিনেগার ব্যবজারে অ্যাসিডিক পরিবেশ তৈরি হয় ফলে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে না। এর জন্য যেকোনো ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন, তবে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ভালো কাজ দেয়। একটি পাত্রে ৬/৮ কাপ গরম পানিতে ১/২ কাপ ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণে ১০/১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রেখে তারপর সাবান দিয়ে পা ধুয়ে ফেলুন যেন ভিনেগারের গন্ধ না থাকে।
পেপার
আর হাতের কাছে যদি অন্য কিছু না পার তাহলে পেপার বা টিস্যুর মাঝে বডি-স্প্রে প্রেস করে সারা রাত জুতার মাঝে রেখে দিন। তারপরা সকালে উঠে এই পেপার ফেলে দিয়ে জুতা পরুন। দুর্গন্ধ কমে যাবে।
ফুট স্প্রে
বাজারে এখন অনেক রকম ফুট স্প্রে আছে। যা ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে পায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে পারেন। যদি ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে আপনার সমস্যা হয় বা সমস্য না হয় তাহলে এই সব রেডি ফুট-স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।
সংরক্ষণ
জুতা বাসায় সংরক্ষণ করতে গেলে প্রায়ই সঠিক আকৃতি থাকে না। সে জন্য এতে বেশি করে পুরনো কাগজ ঢুকিয়ে রাখতে হবে। তাতে আকৃতি নষ্ট হয় না। এ ছাড়া ভেতরে শুষ্ক কাগজ দিয়ে পলিথিনের ভেতর বেঁধে দীর্ঘদিন রাখা যায়।
ক্লাস, ইন্টারভিউ, কোথাও ঘুরতে যাওয়া অথবা প্রতিদিনের অফিস- একেক জায়গায় আপনার পোশাক যেমন ভিন্ন তেমনই আপনার পায়ের জুতাজোড়াও হয়ে থাকে ভিন্ন। তাই যখনই জুতা পরবেন পোশাকের সাথে তা মানিয়ে নিন আগে। না বুঝেই যেকোনো কালারের জুতা কিনবেন না। ভেবে নিন কোন কোন রঙের জামার সাথে এটা ব্যবহার করতে পারবেন। তাই রঙ বুঝে জুতা কিনুন, যাতে একের বেশি পোশাকের সাথে তা বেমানান না হয়ে যায়।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]