পরিচ্ছন্নতা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সুন্দর ঘরের প্রথম শর্ত। একটি ঘরে বলতে গেলে কাজ কম না। গৃহিনীদের এই কাজ সামলাতে গিয়ে ধৈর্য্য আর থাকে না। তবে একা হাতে সবটাই পরিষ্কার করতে গেলে আপনার বিরক্তির মাত্রা বাড়বে।
এদিকে সারাদিন বাইরে থাকা চাকুরীজীবিরা মনে করেন বাসার মানুষটি নিশ্চয়ই ঘরে আরামেই দিন কাটাচ্ছে। কিন্তু শুধু ঘরের মানুষটিই জানেন তার দিনটা কাজের চাপে কেমন কাটে! তবে কাজের ক্ষেত্রে পুরুষ কি নারী, উভয়কেই এই ব্যস্ত শহরে মানিয়ে নিতে হয়।
আসলে দৈনন্দিন জীবনে আমরা ঘর গোছানো থেকে শুরু করে বাড়ীর অন্যান্য কাজ এমন কি ব্যবহার্য অনেক ক্ষেত্রে সহজ কাজগুলো করি ঠিকই কিন্তু কেউ সময় নেই বেশি আবার কেউ সময় কম লাগে। প্রতিনিয়তই কম-বেশি নানা সমস্যার মুখোমুখি হই আমরা। সামান্য একটু জ্ঞানের অভাবে হয়তো অনেক সময় সমস্যার সমাধান করতে পারি না। তখন খুব অসুবিধায় পড়তে হয়।
অথচ একটু কৌশল জানা থাকলে কিন্তু নিজেই যেকোনো কাজকে আর কাজ মনে হবে না। মনে হবে যেনো খেলা। এক্ষেত্রে জেনে নিন কিছু টিপস-
ঘরের ভ্যাপসা গন্ধ দূর করতে
অনেকদিন ঘর বন্ধ থাকলে কিংবা অব্যবহৃত ঘর খুললে একটা ভ্যাপসা গন্ধ বের হয়। তৎক্ষণাৎ দু’তিনটে দেয়াশলাই-এর কাঠি জ্বালার। দেখবেন দু’তিন মিনিটের মধ্যে ঘর থেকে গন্ধ চলে যাবে।
আসবাবের যত্নে
কাঠের আসবাবপত্র ঠাণ্ডা চা-পাতা ফোটানো জল দিয়ে পালিশ করলে ঝকঝকে হয়ে উঠবে।
ফ্রিজের দাগ দূর করতে
ফ্রিজের গায়ে দাগ ধরে গেলে স্পঞ্জে টুথপেস্ট লাগিয়ে ঘষুন। দাগ উঠে যাবে।
জানালা ও দরজার কাঁচ ঝকঝকে দেখাতে
জানালা, দরজার কাঁচ ঝকঝকে করে তুলতে মিহি চক গুঁড়োর সঙ্গে জল আর স্পিরিট অথবা কেরোসিন মিশিয়ে কিছুক্ষণ কাঁচের ওপর মাখিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে খবরের কাগজ দিয়ে মুছে নিন।
বাথরুম পরিস্কারে
ডিটারজেন্টের সঙ্গে একটা লেবুর রস ও এক চামচ ফিনাইল মিশিয়ে বাথরুমের টাইলস ঘষে দেখুন, কেমন ঝকঝক করে।
পোশাকের যত্নে
গরম পোশাক বা সিল্কের পোশাক ধোওয়ার পর যদি ইউক্যালিপটাস তেল মেশানো জলে ডুবিয়ে নেন তাহলে পোকায় কাটার ভয় থাকবে না। আবার পোশাকের ঔজ্বল্ল্য বাড়বে। তবে এক বালতি জলে তেলের পরিমাণ হবে দু-টেবিল চামচ। তবে উলের পোশাক ধোওয়ার পর এক বালতি জলে আধ চামচ গ্লিসারিন দিয়ে তাতে ডুবিয়ে নিন। পোশাকের নরম ভাব বজায় থাকবে।
বাচ্চাদের জামাকাপড়ের যত্ন
বাচ্চাদের জামাকাপড় বা কাঁথায় যদি তার বমির দুর্গন্ধ থেকে যায়, তবে কাচার পর জলে আধ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে তাতে জামাকাপড় ডুবিয়ে নেবেন। দুর্গন্ধ দূর হবে।
কাপড়ের সুগন্ধ ধরে রাখতে
ইস্ত্রি করার সময় কাপড়ে যে জল ছেটান তাতে কয়েক ফোঁটা পারফিউম ফেলে দিন। ইস্ত্রি হওয়া গোটা কাপড়টি সুগন্ধ ধরে রাখবে।
চড়ুই পাখি তাড়াতে
ঘরে চড়ুই পাখি বাসা বাঁধতে চায়। যদি চড়ুই পাখি তাড়াতে চান তাহলে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দু-চার টুকরো কর্পূর জ্বালিয়ে দিন। আর ঘরমুখো হবে না।
সেলাই খুলে গেলে
আজকাল রেডিমেড পোশাকগুলোর সেলাই তেমন একটা মজবুত হয় না। প্রায়ই সেলাই খুলে আসে। তখন আবার সেটাকে সেলাই করে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। কিন্তু বাইরে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে যদি সেলাই খুলে যায়, তখন কী করবেন? জেনে নিন একটি সহজ সমাধান। এমন বিপদ থেকে আপনাকে উদ্ধার করবে সেফটিপিন। সেলাই খোলা অংশটুকু একসঙ্গে করে নিন। সেলাই যেদিকে সেদিকে সেলাই খোলা জায়গায় সেফটিপিন দিয়ে সূচ ঢোকানোর মতো কয়েকবার ওপর-নিচ করুন। তারপর সেফটিপিন আটকে দিন। ব্যস, হয়ে গেল কাজ চালানোর মতো অবস্থা! এরপর বাড়ি ফিরে খুলে যাওয়া অংশটুকু সেলাই করে নিতে ভুলবেন না যেন!
চশমা ঝকঝকে করতে
চশমা ঝকঝকে পরিষ্কার রাখতে হলে এক ফোঁটা ভিনিগার দিয়ে কাঁচ পালিশ করুন। আবার নতুনের মতো দেখাবে।
ব্যাগের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
আসল চামড়ায় তৈরি যে কোনো জিনিস বেশ দামি হয়। তাই চামড়ার তৈরি জিনিসের চাহিদা মেটাতে তৈরি হয় কৃত্রিম চামড়ার জিনিসপত্র। কৃত্রিম চামড়ার ব্যাগ আমরা অনেকেই ব্যবহার করি। এসব ব্যাগের উজ্জ্বলতা ঠিক নতুনের মতো রাখাতে যা করবেন- হালকা গরম পানির সঙ্গে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে নিন। তারপর এই পানিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে ব্যাগ মুছে নিন। মাঝে মাঝে এভাবে মুছলে দীর্ঘ দিন ব্যাগ থাকবে উজ্জ্বল।
পা কিংবা মোজার দুর্গন্ধ এড়াতে
শীতের দিনে জুতা পরলে অনেকের পায়ে দুর্গন্ধ হয়। আবার কেউ কেউ দুর্গন্ধের জন্য জুতাই খুলেন না। মোজায় গন্ধ হয় মূলত পা থেকে। পায়ের পাতা থেকে এক ধরনের ঘাম বের হয় যা এই দুর্গন্ধের জন্য দায়ী। জেনে নিন এই দুর্গন্ধ দূর করবেন কিভাবে- ফেলে দেওয়া চায়ের লিকার দিয়ে অতি সহজেই এ দুর্গন্ধ দূর করা যায়। চায়ের লিকার পানিতে ফুটিয়ে পানি ছেঁকে নিন। সহনীয় গরম থাকতেই এই পানিতে ২ পায়ের পাতা ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই যথেষ্ট। জুতা পায়ে সারা দিন চলাফেরা করলেও পায়ে বা মোজায় আর গন্ধ হবে না। লিকারের পরিবর্তে টি ব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন। মনে রাখবেন, পা সব সময় পরিষ্কার রাখলে পায়ে দুর্গন্ধ এমনিতেই কম হয়।
পুড়ে গেলে
হঠাৎ কোথাও সামান্য পুড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে টুথপেস্ট বেশি করে লাগিয়ে নিন। জ্বলা কমে যাবে আবার ফোঁস্কাও পড়বেনা। গরম চায়ে জিহ্বা পুড়লে মধু মেখে নিন জিহ্বায় কিছুক্ষণ রাখুন যাদুর মত কাজ করবে। পানে চুন খেয়ে জিহ্বা পুড়লে খাঁটি সরষে লাগিয়ে চিহ্বায় চামুচ দিয়ে আঁচড়াতে থাকুন সব চুন জিহ্বা থেকে আস্তে আস্তে বেড়িয়ে আসবে।
ফ্লাস্ক পরিষ্কারে
ফ্লাক্সের ভেতরে অংশ ভালভাবে ধুতে হলে ফ্লাক্সে গরম জল ভর্তি করুন। তাতে কয়েক টুকরো কাগজ ফেলে দিন। ঘণ্টাখানেক পর ভাল করে ঝাঁকিয়ে নিয়ে জল ফেলে দিন। ভেতরের যাবতীয় নোংরা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
গৃহিনী আর চাকুরিজীবী হোন না কেনো ঘরের কাজগুলো গুছিয়ে করলে খুব কম সময়ে আর ঝামেলা ছাড়াই আপনার দিনটি সুন্দর কাটবে।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]