কালের বিবর্তন, উন্নত চিন্তা, অজানাকে জানার কৌতুহলে পরির্বতন হচ্ছে জীবন-যাত্রা। ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে সমাজের রূপ পরিবর্তনও। পাল্টে যাচ্ছে আমাদের ধ্যান-ধারণা, রুচি। কালের যাত্রায় যতটুকু আমাদের এগিয়ে যাওয়া শিশু-কিশোরদেরও সমানুপাতিক হারে যোগ হয়েছে এই যাত্রায়। প্রথম সিঁড়ি থেকেই তাদের পাকা-পোক্ত করার প্রতিযোগিতা। এগিয়ে যাওয়ার মিছিলে কোমলমতি শিশুদের জন্য কত কি না আয়োজন!
সময়ের সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে অনেক কিছুই। যেমন খেলাধুলার জন্য প্রয়োজনীয় যে মাঠ তা তো দিনে দিনে কমেই যাচ্ছে। বিশেষ করে ছোটদের দৌড়াদৌড়ির জায়গা নেই বললেই চলে। এরপর আছে সময়ের অভাব। পড়াশোনার চাপ তো আছেই, যতটুকু সময় পাওয়া যায় তা তো চলে যায় কম্পিউটার আর টেলিভিশনের সামনে।
শিশুরা সাধারণত দৌড়ঝাপ, খেলাধুলা এগুলো পছন্দ করে। অনেক সময় ঘরের অনেক দামী জিনিসপত্র নষ্ট করে। এজন্য আমরা প্রায় সময় তাদের শাসন করি। এক্ষেত্রে অনেক সময় আমরা না বুঝে বাড়াবাড়ি করে ফেলি।
আর যদি বলি ব্যায়ামের কথা। ব্যায়াম বা এক্সারসাইজের কথা আসলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দৌড়াদৌড়ির কথা, জিমে ঘাম ঝরানো বা বয়স্কদের রাস্তায়, মাঠে বা পার্কে হাঁটাহাঁটি বা খালি হাতে ব্যায়ামের কথা। কিন্তু এ তরুণ ও বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদেরও ব্যায়ামের প্রয়োজন, সেটা আমরা মোটেও মনে রাখি না। অথচ সুস্থ শরীরের জন্য সুষম খাবারের পাশাপাশি তাদেরও ব্যায়ামের প্রয়োজন। তবে সব শিশুর জন্য কিন্তু সমান ব্যায়াম নয়।
শরীর তো শোধ নিতে ছাড়ে না। একটা সময়ে শুরু হয়ে যায় শরীরে ব্যথা, বিশেষ করে ঘাড় ও কোমরে। স্থূলতা সমস্যাও দেখা দিতে পারে। হতে পারে হজমের সমস্যা আর মানসিকও। এসব সমস্যা যাতে ধারেকাছে না আসতে পারে সে জন্য ছোটদেরও ব্যায়াম করা দরকার। কম-বেশি সব বাচ্চারই শরীরচর্চার ইচ্ছা থাকে।
মা-বাবার উচিত সেই ইচ্ছাটা আরো বাড়িয়ে দেওয়া। এ জন্য অবশ্য জিমে যাওয়ার দরকার নেই। বাড়িতেই বসেই করা যায়। আর তাই যত কম বয়সে শুরু করা যায় ততই ভালো।
শিশুদের ব্যায়ামের বিষয়টি পুরোপুরি তাদের ওপর ছেড়ে দিলে চলবে না। মা-বাবাকে শিক্ষকের ভূমিকায় থাকতে হবে। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গী হতে হবে। ওয়ার্ক আউটের সময় বাচ্চাদের ভঙ্গি ঠিক থাকছে কি না, সেদিকে নজর রাখতে হবে। অন্যথায় হিতে বিপরীত হতে পারে। তাদের অনুশীলনে তাড়াহুড়া করা যাবে না। এতে ইনজুরির আশঙ্কা থাকে। এ কারণে ছোটদের ব্যায়ামে সাবধান হওয়া জরুরি। আবার এমন কিছু ব্যায়াম করানো যাবে না যাতে তাদের মধ্যে শরীরচর্চার প্রতি অনীহা বা ভীতি চলে আসে।
দুই হাত ও দুই হাঁটু মাটি রেখে হামাগুড়ি দেওয়ার অবস্থায় থাকতে হবে। এবার ডান হাত সামনে তুলে বাঁ পা পেছনের দিকে শূন্যে টানটান করাতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে এ সময় পিঠ যেন সোজা থাকে। শরীরটা যেন এদিক-ওদিক বেশি না দোলে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড করার পর হাত ও পা বদল করতে হবে। অর্থাৎ এবার বাঁ হাত সামনে তুলে ডান পা পেছনের দিকে টানটান করতে হবে। এভাবে কয়েকবার করাতে হবে। এ ব্যায়ামে পিঠ ও কোমরের পেশি সুদৃঢ় হবে। তা ছাড়া ভারী ব্যাগ বহন, ঝুঁকে পড়াশোনা করার ফলে কোমরে ব্যথা হওয়ার শঙ্কা থেকে তাদের দূরে রাখবে।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]