শিরোনাম
নতুন বছরে জীবনের কাছে নতুন অঙ্গীকার
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৮:১০
নতুন বছরে জীবনের কাছে নতুন অঙ্গীকার
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

নতুন বছরের নতুন দিনের শুরু। আর তাই চলুন না জীবনটাকে নতুন করেই শুরু করা যাক। কি বলেন? অতীতের কষ্ট ভুলে অতীতকে শিক্ষা হিসেবে কাজে লাগিয়ে নতুন এক শুভ সূচনা করা যায়। উৎসাহ-উদ্দীপনা-উদ্যমের মধ্য দিয়ে নতুন বছরের শুরুতে নতুন সূচনার জন্য অনেকেই তাই বছরের প্রথম দিনটিকে বেছে নেন।


তবে এ ক্ষেত্রে দেখা যায় নতুন নতুন নানা প্রতিজ্ঞা জীবনের সামনে চলে আসে যা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। জীবনটাকে সুন্দরভাবে সাজান। আর একবারে সব কষ্ট ভুলে সহজ কিছু ভেবে নিন তো। করেই নিন কিছু অঙ্গীকার। জীবনযাপনে আনুন কিছু রীতিনীতি।


নিজের শিক্ষা ও জ্ঞানকে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দিন। শর্তহীনভাবে নিজেক ভালোবাসুন। আপনি যেমনই হোন না কেন, মনে আক্ষেপ করবেন না। নিজের পছন্দ, ভালোবাসা এবং আন্দের বিষয়গুলো কি কি তা লিখে রাখুন।


সময়মত ঘুমানো, আবার ঘুম থেকে ওঠা। কেননা ঘুমের অভাবে জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রাতে ৮ ঘণ্টার ঘুমের পরামর্শ বহু পুরনো। নতুন বছরে তাই ঘুমের বিষয়ে গুরুত্ব দিন। ঘুম পরদিনের কাজের শক্তি জোগায়। আর সকাল সকাল উঠে পড়ার চেষ্টা করবেন। অযথাই মোবাইলের স্নুজ বাটন চেপে নিজের বারোটা বাজাবেন না।


বিশ্রামের গুরুত্ব কোনভাবেই এড়িয়ে চলা যাবে না। সব সময় কাজে পড়ে থাকার কারণে বহুরোগ দেখা দেয়। এমনটা চলতে থাকলে দেখা দেবে উদ্বেগ, হৃদযন্ত্র সংশ্লিষ্ট রোগ, উচ্চ রক্তচাপসহ মস্তিষ্কের সমস্যা।
জীবনের চারদিক থেকে নেতিবাচক মানুষগুলোকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা হাতে নিন। আপনি নিজেই সরে আসুন। ইতিবাচক ও সফল মানুষের সংস্পর্শ আপনাকে ক্রমশ ওপরের দিকে নিয়ে যাবে।


আসলে পরামর্শ হিসেবে অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও, যা সারাবছর মেনে চললে আপনার আমার সবার জন্য অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।


হাসিখুশি থাকা
পাওয়ার অব পজিটিভিটি অনুসারে, হাসিখুশি থাকার চ্যালেঞ্জের জন্য একটি খালি নিন। যখনই আপনার সঙ্গে ভালো কিছু ঘটবে, তা কাগজে লিখে জারে ভরে রাখুন। এরপর সপ্তাহ বা মাস শেষে জার খালি করে ঘটনাগুলো পড়ে দেখুন। এতে মন ভালো হয়ে যাবে।


স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
নতুন বছর জুড়ে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার চ্যালেঞ্জটি রক্ষা করা আবশ্যক। অ্যাডামের মতে, আপনি কি কি খাচ্ছেন তা লিখে রাখতে পারেন। তাহলে পরবর্তীতে বুঝতে পারবেন যে, কোন খাবারটি তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং কোনটি খেতে হবে। অবশ্যই অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।


কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা
হোম ইকোনোমিস্ট ব্রেট গ্রাফ মনে করেন, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা এমন একটি ব্যাপার যেটিকে এই নতুন বছরে আমাদের সবাইকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া উচিত। সব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা উচিত। যেমন প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা উচিত। সেই একই ভাবে যা কিছু ভালো ঘটে এবং যার মাধ্যমে ঘটে তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকা এবং তা প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ।


সঞ্চয় করা
খুব হিসেব না হলেও একটু হিসেব করে ভবিষ্যতের জন্য রাখতে পারেন। ওয়াশিংটন পোস্ট অনুসারে, শতকরা প্রায় ৪০ থেকে ৫০ ভাগ মানুষ বছরের শুরুতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই তিন মাসের বেশি তা টিকিয়ে রাখতে পারে না। শতকরা প্রায় ১৯ ভাগ মানুষ সারা বছর তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করে থাকে। মানসিকতা ও ফিটনেস বিশেষজ্ঞ এবং ‘মোটিসিজ’ নামক ওয়েলনেস প্রোগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া সাত্রা বলেন, ‘জমানোর জন্য একটি মাসিক নির্ধারিত টাকা আলাদা করে রাখা দরকার। যদি মনে হয় নিজের কাছে রাখা সম্ভব নয় তাহলে ডিপোজিট করতে পারেন।’


ওজন কমানো
মাইন্ড এবং ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সোনিয়া বিশ্বাস করেন, নতুন বছরে ওজন কমানোর চ্যালেঞ্জটি পূর্ণ করা সম্ভব। তিনি উপদেশ দেন, ঘরে দুইটি বোর্ড রাখার জন্য। একটিতে আপনি যেমন শারীরিক গঠন চান সেরকম ছবি বা আপনার পছন্দের পোশাক যেটি ওজন বৃদ্ধির কারণে পরতে পারছেন না এবং অপর বোর্ডে আপনার বর্তমান ছবি যাতে আপনি খুশি নন এবং আপনার সঙ্গে তুলনা করা যায় এমন ফ্যাটি মানুষের ছবি লাগান। বোর্ড দুইটি এমন জায়গায় রাখবেন যাতে আপনি সব সময়, প্রতিদিন দেখতে পান। এই বোর্ড দুইটি আপনাকে মনে করিয়ে দেবে, আপনাকে আসলে কি করতে হবে।


ব্যায়াম করা
নিউট্রিশন এবং শারীরিক শক্তি বিষয়ক কোচ অ্যাডাম বলেন, ‘প্রতিদিন ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আপনি প্রথম দিন মাত্র ৫ মিনিট ব্যায়াম করতে পারেন। পরের দিন আরো পাঁচ মিনিট যোগ করুন অর্থাৎ ১০ মিনিট ব্যায়াম করুন। এভাবে ৫ মিনিট করে বাড়াতে থাকুন আপনার ব্যায়ামের সময়। মাস শেষে দেখবেন আপনি অনায়াসে ২০ মিনিট ব্যায়াম করতে পারছেন। নিজেকে এই নিয়মে অভ্যস্ত করে তুলুন।’


অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলা
ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলার ধারণাটি আসে রোনাল্ড এবং গ্যালিনার কাছ থেকে। যারা ‘ইট ওয়েল, মুভ ওয়েল, লিভ ওয়েল : ৫২ ওয়েস টু ফিল বেটার ইন অ্যা উইক’ এর সহ-লেখক। তাদের মতে, প্রতি মাসে ঘরের একটি অংশ বা রুমের দিকে মনোনিবেশ করা দরকার। মাসের প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে ঘর পরিষ্কার ও অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে দেওয়া উচিত। আসবাবপত্রগুলোর জায়গা পরিবর্তন করে দেওয়া উচিত। এটি অনেকাংশে আমাদের মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে। এই ধরনের কাজের মাধ্যমে সব কিছুতে নতুন উদ্যম তৈরি হয়।


সদয় হওয়া
ব্রেট মনে করেন, নতুন বছরে নিজের এবং অন্যের প্রতি সদয় হওয়া উচিত। নিজের ভুলক্রটিতে গভীর শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। এভাবে এক সপ্তাহ নিজেকে প্রস্তুত করে পরবর্তীতে অন্যের প্রতিও সদয় থাকার চেষ্টা করুন। আপনার ব্যস্ত প্রতিবেশীর সঙ্গে ডিনার করতে পারেন কিংবা ঘরে ফেরা ক্লান্ত সঙ্গীকে স্বেচ্ছায় কফি বানিয়ে দিতে পারেন। আপনি যদি কারো প্রতি সদয় ভাব পোষণ করেন তাহলে সেও আপনার প্রতি সদয় হবে। অর্থাৎ কারো জন্য স্বেচ্ছায় কিছু করা যাতে সে খুশি হয়। তবে মনে রাখবেন আপনি এমন কিছু করলেন যার বিনিময় আশা করেন, তাহলে সেটা সদয় হওয়ার লক্ষণ নয়।


অতীতের বিষয়ে নিজেকে এবং অন্যদের ক্ষমা করতে শিখুন। সামাজিক জীবনে অভ্যস্ত হোন। তাহলে দেখবেন সব কিছুই অনেক ক্ষেত্রে সহজ হয়ে গেছে।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com