শিরোনাম
আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও...
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:২৭
আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও...
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভালোবাসাই নারী ও পুরুষের মাঝে হৃদয়ের অটুট বন্ধন তৈরি করে দেয়। তৈরি করে সাংসারিক বন্ধন। ভালোবাসা ছাড়া কোনো সাংসারিক কিংবা দাম্পত্য জীবন সুখের হয় না।


পারস্পারিক যোগ্যতা আর ভালোলাগা থেকে জন্ম নেয় ভালোবাসা। ভালোবাসার শুভ পরিণতি ঘটে বিয়ের মাধ্যমে। ঠিক যেনো এমন করে গানের কথায় প্রকাশ পায় প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে আর দাম্পত্যের সম্পর্ক।


আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও ... আমি চিরদিন তোমারইতো থাকবো তুমি আমার আমি তোমার ... এ মনে কি আছে পারোযদি খুঁজে নাও ... আমি তোমাকেই বুকে ধরে রাখবো তুমি আমারআমি তোমার ... কেন আজ সরে আছো দূরে কাছে এসে হাত দু’টোধরো ... শপথের মন কাড়া সুরে আমায় তোমারই তুমি করো ও ...তোমারই স্বপ্ন দুচোখেই আমি আঁকবো ... ওপারের ডাক যদি আসেশেষ খেয়া হয় পাড়ি দিতে ... মরণ তোমায় কোনদিনও পারবেনাকভু কেড়ে নিতে ও ... সুখে দুঃখে আমি তোমাকেই কাছে ডাকবো।


বিয়ে সামাজিক রীতি হলেও এই সম্পর্ককে অটুট করতে উদ্যোগী হতেহয় দুজনকেই। জীবনের বিশাল এক অংশ দাম্পত্য জীবন। সম্পর্কেরএই যত্ন-আত্তিতে থাকা চলে না কোনো কার্পণ্যতা। আপনি আমিসবাইতো জীবনে সুখী হতে চাই তাই তো! হ্যাঁ। সম্পর্ককে যতই বলিটিকিয়ে রাখতে হবে। রাখার দায়-ভারটা কিন্তু আমার আপনারই।অতএব একটু বুঝে শুনেই চলতে হবে।


প্রেম, ভালোবাসা এই বিষয়গুলো কি? কিভাবে হয়? কেন হয়? আবেগের প্রশ্ন থাকে, বাস্তবতার প্রশ্ন থাকে, যুক্তি থাকে আবার কোন কিছুই থাকে না। মাঝে মাঝে স্বপ্ন থাকে আবার মাঝে মাঝে কিছুই খুজে পাওয়া যায় না। অনেকেই প্রেম বা ভালোবাসায় পড়তে চায় না এবং প্রেম বা ভালোবাসার জন্য নিজেও চেষ্টা চালায় না।


সুন্দর সম্পর্ক নিজে থেকেই তৈরি হয় না, তৈরি করতে হয়। তাইনিজের এই সম্পর্ক নিজেকেই তৈরি করতে হবে। কর্মক্ষেত্রেই যদিআপনার সবটুকু কর্মক্ষমতা নিঃশেষ করে ফেলেন, তাহলে আপনারদাম্পত্য জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আপনার উৎফুল্ল আচরণ হতে পারেআপনার সঙ্গী/সঙ্গিনীর জন্য খুব দামি উপহার।


দাম্পত্য জীবনে তাই নিয়ম যা দুজনের পছন্দের ভিত্তিতে ঘটে।সাময়িক ঝগড়া-বিবাদের কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়েযায় না। মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ আর যন্ত্রণাই দাম্পত্যজীবনকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়।


কাউকে একইসঙ্গে ভালোবাসা এবং ঘৃণা করা সম্ভব নয়। আপনারসঙ্গী/সঙ্গিনীর ব্যাপারে বন্ধুদের কাছে অভিযোগ করা থেকে বিরতথাকুন। মনে রাখবেন বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া দাম্পত্য সম্পর্কে বিপর্যয়ডেকে আনতে পারে।


দাম্পত্য সম্পর্ক, ‘কী পেলাম?’ এর হিসেব মেলানোর জন্য নয়। বরংসঙ্গী বা সঙ্গিনীকে ‘কী দিতে পেরেছি,’ তাই মূলকথা।‘জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী হিসেবে আমি সর্বোত্তম’-এমনটি মনে হওয়াঅতি আত্মবিশ্বাসের লক্ষণ। এমনটি মনে হলে নিজেকে যাচাই করুন।


সংসারের ক্রমাগত আর্থিক সচ্ছলতা অর্থ এই নয়, দাম্পত্য জীবনওসুখের মধ্য দিয়ে কাটছে। যদি বিশ্বাস ভেঙে যায়, তাহলে সেই বিশ্বাসজোড়া দেয়ার সময় এখনও পার হয়ে যায়নি। এজন্য যেকোনো সময়ইউপযুক্ত সময়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা নিয়ে তর্ক হয় তা আসল বিষয়থাকে না।


ভালোবাসা কেবল অনুভূতি নয়; বরং আমাদের কাজের মাধ্যমেইভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মনের হতাশাও অতৃপ্তিকে বাড়িয়ে দেয়। দাম্পত্য জীবনের অনেক তর্কই হয়তএড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে ক্ষতিকর বিতর্ককে এড়িয়ে যেতেই হবে।


সঙ্গী/সঙ্গিনীর প্রতি আপনার গভীর মনোযোগ পরস্পরের জন্য হতেপারে অমূল্য উপহার। অনেক সময় সুখী দম্পতিরাও ভাবেন, তারাভুল মানুষটিকে বিয়ে করেছেন। আপনার সঙ্গী/সঙ্গিনী আপনাকে সুখীকরার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও তিনি আপনার সুখী হওয়ারব্যাপারে অবশ্যই সাহায্য করতে পারেন।


মিথ্যা বলে হয়ত সামান্য কিছু সুবিধা পান। কিন্তু পরিমাণে মিথ্যা বলারজন্য সুবিধার চেয়ে অনেক বেশি চড়া মূল্য দিতে হয়। অতএব, মিথ্যাবলা বর্জন করুন। আপনার মতামত যে সবসময় সঠিক, এমনটিভাববেন না।


বছরের পর বছর ধরে যে বিশ্বাস আপনি গড়ে তুলেছেন, তা একমুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অপরাধবোধকেদীর্ঘায়িত করে তার অনুভূতি নিয়ে খেলা করে আপনি যা পেতে চান,তা কখনই পাবেন না। আপনার বন্ধুদের অবহেলা করবেন না।


আপনার যদি মনে হয়, ‘তুমিই আমার জন্য সঠিক মানুষ, যাকে আমিবিয়ে করেছি’, তাহলে আপনি ঠিক পথেই আছেন। কোনোকিছু প্রমাণকরতে যাওয়ার প্রলোভনকে দমন করতে পারলে, বস্তুত আপনিঅনেক কিছুই প্রমাণ করতে পারলেন।


সুন্দর বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা প্রয়োজন। এমনটিকরতে পারলে, আপনি আপনার ত্যাগের চেয়ে ভোগই বেশি করতেপারবেন। ক্ষমা কোনো সাময়িক গুণ নয়; বরং ক্ষমা একটি চলমানপ্রক্রিয়ার নাম। দাম্পত্য জীবনের কঠিন সময়গুলো আপনাকে একজনভালো মানুষ করে তুলবে।


বিয়ে অনেকটা রকেট উৎক্ষেপণের মতো। যখন তাতে মাধ্যাকর্ষণ টানপূর্ণ থাকে, তখন ফ্লাইট চলতে খুব সামান্য জ্বালানির প্রয়োজন হয়।দাম্পত্য জীবনে সাফল্য পেতে হলে, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়েমাথা না ঘামিয়ে, ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।


আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কৃতজ্ঞতাবোধকে নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না। বাস্তবতার খাতিরে মাঝেমাঝে নীরবতা পালন করা একটি অসাধারণ উপায়।


আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছে আপনার সর্বোত্তম প্রশ্নগুলোর একটিহতে পারে, ‘আমি কীভাবে তোমাকে আরও বেশি ভালোবাসতেপারি?’ চাইলেই দাম্পত্য জীবনকে চিরসবুজ করে রাখা যায়। সার্থকযৌন সম্পর্ক সফল দাম্পত্য সম্পর্কের নিশ্চয়তা দেয় না। তবে তাসফল দাম্পত্য সম্পর্ক নির্মাণে সহায়তা করে।


ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করলে তা দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষতি করবেনা। তবে সন্দেহজনক বিষয় নিয়ে লুকোচুরি করলে তা দাম্পত্যসম্পর্কের ক্ষতি করবে। সঙ্গী/সঙ্গিনীকে আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবণতাএবং ঈর্ষাপরায়ণতার জন্ম হয় ভয় থেকে, ভালোবাসা থেকে নয়।


বিশ্বাসযোগ্যতা জন্ম দেয় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার অভ্যাসগড়ে তোলা থেকে। আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি কোনো কিছুকেগুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, তাহলে তা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দাম্পত্যসম্পর্কে প্রেমাবেগের প্রয়োজন কখনই ফুরিয়ে যায় না।


নতুন সম্পর্কের ঔজ্জ্বল্য সবসময়ই ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে। নীরবতাওআক্রমণাত্মক হতে পারে যখন তা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অধিকউত্তম হলো নিজে কীভাবে সঠিক কাজটি করতে পারেন সেদিনেমনোযোগ দেয়া। তারপর আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনী কী ভুল করেছেসেদিকে মনোযোগ দেয়া। দাম্পত্য সম্পর্ককে মানিয়ে নেয়াএকেবারেই অসম্ভব মনে হলে, কেবল তখনই বিচ্ছেদের দিকে পাবাড়াতে পারেন।


তবে একজন সুন্দর মনের ওগুণের স্ত্রী সংসারকে তার নিজেরআলোয় আলোকিত করে তুলতে পারেন। সাজিয়ে তুলতে পারেনসংসার জীবনকে সুখের স্বর্গীয় বাগানের মতো করে। তবে এইকাজের জন্য দরকার স্বামীর স্ত্রীর প্রতি ঐকান্তিক মায়া-মমতা ওসুগভীর ভালোবাসা। স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের পরিপূরক। একজনকে বাদ দিয়ে অন্যজন শূন্য, ফাঁকা। ভালোবাসা থাকলে দেখবেন, বিবাহিত জীবনে সুখ কাকে বলে!


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com