শিরোনাম
কথা দাও রাখবে পাশে...
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ২০:২৭
কথা দাও রাখবে পাশে...
শাহনাজ শারমিন
প্রিন্ট অ-অ+

মন আঁকছে তোমার ছবি ধীরে ধীরে... মন ডাকছে তোমারই নাম ধীরে ধীরে... টুকরো সুখের নকশাতে মেঘে তোমায় ভাসাতে জেগেছে।


ঘুমানো আসা... স্বপ্ন বিভোর ঝর্ণাতে মেঘে তোমায় ভাসাতে মেশাবো ভালোবাসা... কথা দাও তুমি থাকবে পাশে... কথা দাও তুমি রাখবে পাশে ... ঠিক এমনভাবেই কি কথা দেবেন আপনার সঙ্গীকে! রাখবেন কি তাকে আপনার পাশে!


অমরসঙ্গী হওয়ার তাগিদ দিলে সহজেই চলে আসে সফল ও ভালো জীবনসঙ্গীর কথা। সঠিক ও সফল জীবনসঙ্গী কিন্তু সবার চাওয়া থাকে। আর প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে, দাম্পত্য জীবনকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়.. ভেবে দেখুন তো!


সঙ্গী রোমান্টিক হবে। আমার সব কথা বুঝবে। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত সুন্দর সময় কাটাব। প্রত্যেকেই ভাবেন, তার সঙ্গী তাকে ঘিরেই নতুন জীবন রচনা করবেন —জীবন কাটাবেন। চাইবেন যেনো আপনার রাজ্যে আপনিই একাই রাজত্ব করবেন। দুজনের পারস্পরিক মুগ্ধতা যেন সারা জীবন থাকে। আবার পারিবারিক সম্বন্ধ করে হওয়া বিয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের পর এই ভালোবাসাবাসীর পর্বটা শুরু হয়।


তবে বাস্তবে কী হচ্ছে?


সংসার জীবনে প্রবেশ করার পর পারস্পরিক রুচিবোধ, আচার আচরণ, শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতা প্রত্যেকের কাছেই ধরা পড়ে ইতি বা নেতিবাচকভাবে। সবাই শুরুতে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ পরে হার মেনে যান। বোঝাপোড়ার মিল অমিলের কিছু অনুপাত থাকবেই। এ কথাটি শুধু শরীরের ক্ষেত্রেই নয়; বরং বিয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।


স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ও ভালোবাসা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে দু`জনের উচ্চতা, বয়স ও বেতনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। তবে যারা প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন, তাদের কথা আলাদা। তারা হয়তো চাইলেও আর কোনো মানদণ্ডে প্রেমিক বা প্রেমিকাকে বিচার করবেন না। কিন্তু যারা প্রেম না করে বিয়ে করছেন তাদের ক্ষেত্রে বয়স, উচ্চতা ও বেতন একটি বড় বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক বিয়ের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর এসব বিষয়ে ব্যবধান কেমন হওয়া উচিত?


সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে একটি প্রবন্ধে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। প্রবন্ধে শুধু বয়সের ব্যবধানের কথা বলা হয়েছে তা নয়, দু’জনের উচ্চতা ও বেতনের ব্যবধান এবং শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।


বয়সের ব্যবধান


প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের আদর্শ ব্যবধান ধরা হয় ৩ বছর। সাধারণত মেয়েরা মনের দিক দিয়ে তুলনামূলকভাবে একটু আগেই পরিপক্কতা লাভ করে। আর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মানসিক মিল থাকাটা জরুরি। তাই মনে করা হয় যে, স্বামী যদি স্ত্রীর চেয়ে ৩ বছরের বড় হয় তবে দু`জনের মানসিক পরিপক্কতা সমান হবে। তাছাড়া, ৩ বছর বড় হলে স্বামী একটু আগে পড়ালেখা শেষ করে কোনো একটা পেশা বেছে নেবে এবং নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার সময় পাবে। এটাও বয়সের ব্যবধান ৩ রাখার একটা কারণ।


উচ্চতার অনুপাত


প্রথমে স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার আদর্শ উচ্চতার বিষয়টি জানা যাক। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে উচ্চতার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যবধান হচ্ছে ১২ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ স্বামী বা প্রেমিককে হতে হবে ১২ সেন্টিমিটার বেশি লম্বা। কেন? কারণ, এতে নাকি পরস্পরকে আলিঙ্গন করা ও চুমু খাওয়ায় সুবিধা হয়।


এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত হচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মেয়ে সাধারণত নিজেকে সযত্নে রক্ষা করতে চান। স্বামী বা প্রেমিকের উচ্চতা বেশি হলে, তিনি অনেক বেশি নিরাপদবোধ করেন। আসলে ছেলেদের উচ্চতা সাধারণতভাবে মেয়েদের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে ১০ সেন্টিমিটার বেশি হলে, দেখতে সুন্দর লাগে; মানানসই মনে হয়। এই ব্যবধান দু`পক্ষের লিঙ্গ পরিচয়কেও আরও স্পষ্ট করে তোলে। স্বামী বা প্রেমিককে তখন অনেক বেশি ম্যানলি মনে হয় এবং স্ত্রী বা প্রেমিকাকে আরও বেশি কামনীয় ও সুন্দর লাগে। উচ্চতার ব্যবধানটি অতিরিক্ত হলে দেখতে ভালো দেখায় না।


বেতনের অনুপাত


বেতন বা আয়ের ব্যাপারটা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কোনো কোনো জরিপ অনুসারে, স্বামীর বেতন বা আয় স্ত্রীর দেড় গুণ হলে ভালো। এতে পরিবারের সুখের সূচক বাড়ে। আজকাল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় স্বামী ও স্ত্রী দু`জনই চাকরি করেন বা আয় করেন। তবে ঐতিহ্যবাহী ধারণার প্রভাবে অনেকের মতামত এমন যে, পরিবারে স্বামীর আর্থিক দায়িত্ব বেশি বহন করা উচিত। তাই স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর আয় বেশি হওয়া আবশ্যক বলেই অনেকে মনে করেন। এতে এক দিকে স্বামীর মান রক্ষা হবে, অন্যদিকে স্ত্রীর নিরাপত্তাবোধ বাড়বে। তবে, এ ব্যবধান যত বেশি হবে তত ভালো।


শ্বশুর-শাশুড়ি প্রসঙ্গ


আজকালকার ছেলে-মেয়েরা প্রবীণদের সঙ্গে বসবাস করতে চান না। অথচ বাবা-মায়ের যত্নে আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত। কিন্তু অনেক দম্পতি নিজেদের মতো করে থাকতে চান; গড়তে চান নিজস্ব একটা ভূবন। যেখানে অন্য কেউ থাকবে না। তারা চান, তাদের বিবাহিত জীবনের গুণগত মান উন্নত করতে। এই চাওয়াটা ঠিক। কিন্তু পিতা-মাতা বা শ্বশুর-শাশুড়ির যত্ন নেয়ার গুরুত্বও তাদের বুঝতে হবে। তারা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে সন্তান বড় করেছেন।


তাই পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে কী করা উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তত এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে পিতা-মাতা বা শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের প্রয়োজনে ছেলে-মেয়েকে কাছে পান।


বিয়ের মূল লক্ষ্য যেটা থাকে সেটা হলো, মনের মধ্যে যে মিলনের আকাঙ্ক্ষা তার নান্দনিক বাস্তবায়নে নিজেকে প্রকাশ করা। আর এসব ঘিরে রয়েছে সামাজিকতা। সুখী ও সুন্দর দাম্পত্য জীবন গঠনে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে ভূমিকা রাখতে হয়। উভয়কেই এক-অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। একে অপরের অসুবিধা ও সমস্যাগুলো অনুধাবন করতে হয়।


বিবার্তা/শারমিন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com