লবণ খেলে শরীরে জলধারণ ক্ষমতা বাড়ে ঠিকই, কিন্তু পরিমাণের অতিরিক্ত লবণ খেয়ে ফেললেই শরীরের ক্ষতি। রান্নাতে ঠিক মতো লবণ না হলে অনেকেই পাতে কাঁচা লবণ খান।
এই ভাবে সারা দিনে কতটা লবণ বা সো়ডিয়াম শরীর প্রবেশ করে তার হিসাব থাকে না। হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে লবণ একেবারেই এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।লবণ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও বাড়িয়ে তোলে।
একইভাবে চিনিও খেতে হবে মেপেঝুপেই। বেশি লবণ খাওয়া যেমন হার্টের জন্য ভাল নয়, তেমনই মুঠো মুঠো চিনিও শরীরের জন্য বিপজ্জনক। যে খাবারে বেশি চিনি, সেই খাবারেই পুষ্টি কম।
চিনি খেলে হৃদ্রোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
দিনে কতটা লবণ খাবেন?
চিকিৎসকদের মতে, একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রত্যেক দিন এক চা চামচ লবণ খাওয়া উচিত। পাঁচ-ছ’গ্রাম লবণ খাদ্যতালিকায় রাখাই যায়। তবে কাঁচা লবণ নয়, রান্নায় লবণ দিয়ে খাওয়াই ভাল।
না হলে, অন্যথায় শুকনো খোলায় লবণ নেড়ে, তা খেতে পারেন। যদি উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনির সমস্যা থাকে, তা হলে কাঁচা লবণ একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।
কী ধরনের লবণ খাচ্ছেন, তা-ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের পরামর্শ, সাদা নুনের থেকে সি সল্ট বা সৈন্ধব লবণ খাওয়াই ভাল। সৈন্ধব নুনের দানা হয় বড় বড়। অনেক সময় ডেলার মতোও হয়। আর এর রঙও ধবধবে সাদা নয়। কিছুটা লালচে ভাব থাকে। প্রক্রিয়াকরণের আগের পর্যায় হল এই সৈন্ধব নুন। যাঁরা রোজ কায়িক শ্রম বা ব্যায়াম বেশি করেন, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নুন খাওয়ার পরিমাণ স্থির করতে হবে। নুনে শতকরা ৯৭-৯৯ ভাগই হল সোডিয়াম ক্লোরাইড। একেবারেই নুন খাওয়া বন্ধ করে দিলে রক্তচাপের হেরফের হতে পারে। সোডিয়ামের মাত্রার ঘাটতি হলে অন্য শারীরিক সমস্যা হতে পারে। ঘামের মাধ্যমেও শরীর থেকে কিন্তু জল ও নুন অনেকটাই বেরিয়ে যায়। বাজারচলতি প্যাকেটজাত খাবার যেমন, চিপস, নাচোজ় থেকে শুরু করে হ্যাম, সসেজ, সয় সস, টম্যাটো সসেও নুন থাকে। এই ধরনের খাবারের বিষয়েও সচেতন হবেন।
চিনি খান মেপে
চিনি ছাড়া চা খেতে পারেন না? রান্নাতেও বেশি চিনি দেন? রোজের পাতে একটা মিষ্টি না হলে মনের সুখ হয় না? চিকিৎসক জানাচ্ছেন, চিনি শরীরের জন্য বিষ। দোকান থেকে যে সাদা চিনি কিনে খাচ্ছি, তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। একজন পূর্ণবয়স্ক মহিলা দিনে ৬ চামচ চিনি খেতে পারেন, পুরুষের ক্ষেত্রে সেই পরিমাপটাই ৭-৮ চামচের মতো।
লন্ডনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, প্রচুর পরিমাণে ‘ফ্রি সুগার’ যুক্ত খাবার খেলে হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এই ধরনের শর্করা পাতে যত বেশি রাখবেন, ততই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়বে। চিনি অনেক শারীরিক সমস্যার জন্ম দেয়। চিনি খাওয়া থেকে দূরে থাকলে সুস্থ থাকাও সহজ হয় অনেক। ত্বক ভাল থাকে। অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। ওজনও কমতে থাকে দ্রুত। আর চিনি বেশি পরিমাণ রক্তে মিশলেই ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়বে। কিডনির জটিল রোগ জাঁকিয়ে বসবে। পাশাপাশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে হার্টেও। শিশুদের তো বেশি চিনি খাওয়ানোই উচিত নয়। এতে মস্তিষ্কের বিকাশে প্রভাব পড়ে। চিনি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ায়।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]