শিরোনাম
স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে ওজন বাড়ান
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২১, ১৩:৫৯
স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে ওজন বাড়ান
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সময়ের ব্যস্ততার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে সকলেরই প্রায় বাইরে খাওয়া হয়। আর বাইরের খাবারের মধ্যে ওজন বৃদ্ধিকারক খাবার বেশি। ফলে অনেকেরই অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পায়। আর এই অতিরিক্ত ওজন কিভাবে কমানো যায় তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই যেন। কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছেন যারা আন্ডারওয়েট বা যাদের ওজন বাড়ানো প্রয়োজন। তাদের ক্ষেত্রে কী করণীয়?


এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে জেনে নিতে হবে, কারা আন্ডারওয়েট? বিএমআর (বেসাল মেটাবলিক রেট) এবং বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) এই দুটি শরীরের মেটাবলিজমের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই দুটির মাত্রার উপরে নির্ভর করবে আপনি আন্ডারওয়েট কিনা। বিশেষত এক্ষেত্রে বিএমআই-এর ভূমিকা অধিকতর। দেহের ওজনকে উচ্চতা দিয়ে ভাগ করলে জানা যাবে বিএমআই। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের বিএমআই ১৮ থেকে ২৪-এর মধ্যে থাকলে স্বাভাবিক। ২৫ থেকে ২৯-এর মধ্যে থাকলে ওভারওয়েট। ৩০-এর উপরে গেলে ওবিস। আবার ১৮-র নীচে নেমে গেলে আন্ডারওয়েট।
কিন্তু ডায়াটিশিয়ানের মতে, এই প্যারামিটারকে নির্দিষ্ট করে ধরা যাবে না। ফ্যাট সোর, মাসল মাস কতটা বা ক্রনিক অসুখ আছে কিনা, দেখেই ডায়েট চার্ট তৈরি করতে হবে। এছাড়া একজন মানুষের জীনগত গঠন, শারীরিক গঠন, লাইফস্টাইলের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। আন্ডারওয়েট ব্যক্তির অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে যাওয়া, অ্যানিমিয়া, অস্টিয়োপোরোসিস, ত্বক-চুল-দাঁতের সমস্যা, অনিয়মিত পিরিয়ডস ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।


ওজন বাড়াতে কী কী খাবেন?


• খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে নেয়া যায়। কার্বস ও প্রোটিন আগের চেয়ে বেশি মাত্রায় খেতে পারেন। তবে কারো বিএমআর-এর উপরে নির্ভর করবে কতটা খাদ্য তার প্রয়োজন।


• খাদ্যতালিকায় খেজুর, কাজু, আমন্ড, পেস্তা, ওয়ালনাটের মতো শুকনো ফল ৩-৪টি করে রাখুন।


• মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ছানা এবং ফলের মধ্যে কলা রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। ছোলা, রাজমা-সহ বিভিন্ন ধরনের ডাল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খান।


• চিকেন-ভেজিটেবল স্যালাডে চিজ দিতে পারেন। সকালে চিজ, পিনাট বাটার, ক্যারামেল স্প্রেড দিয়ে ব্রেড খেতে পারেন। কোনো সমস্যা না থাকলে গরম ভাতে মাখন বা ঘি দিয়েও খাওয়া যায়।


কিছু ভ্রান্ত ধারণা


প্রোটিন শেক বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার আগে ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। জাঙ্কফুড খেলে ওজন বাড়বেই। কিন্তু সেটা একেবারেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আচমকা ওজন বাড়া বা কমা কোনোটাই ভালো নয়। এতে অন্য অসুস্থতা তৈরি হতে পারে। ওজন বাড়াতে অনেক খেয়ে নিলাম আর এদিকে কোলেস্টেরল বা হজমের সমস্যা দেখা দিলো এমন যেন না হয়। স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে ওজন বাড়ান। ওজন কম বলে সে এক্সারসাইজ করতে পারবে না, এমন ধারণাও ভ্রান্ত। স্ট্রেচিং, কার্ডিয়ো সকলের জন্য জরুরি। মাসল গ্রোথের জন্য নির্দিষ্ট ব্যায়াম হয়, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে তা করতে পারেন।


শিশুদের ক্ষেত্রে


আঠেরো বছরের আগে বিএমআই মাপা হয় না। কারণ তত দিন পর্যন্ত উচ্চতা বাড়ে। তবে চিকিৎসকেরা ছোটদের ক্ষেত্রে গ্রোথ চার্ট মেনটেন করতে বলেন। অনেক বাবা-মা সন্তান খুব রোগা বলে চিন্তিত হয়ে পড়েন। শিশু চিকিৎসকেরা বাচ্চাদের ওজনের চেয়েও সুস্থতার উপরে বেশি জোর দেন। গ্রোথ চার্ট অনুযায়ী শিশু আন্ডারওয়েট হলে দেখতে হবে তার অন্য শারীরিক সমস্যা আছে কিনা। যদি দেখা যায় শিশুটির উচ্চতার বৃদ্ধি স্বাভাবিক এবং সে অল্পতেই হাঁপিয়ে যায় না, তা হলে চিন্তার কিছু নেই। তবে ছয়-সাত মাস ধরে শিশুর ওজন-উচ্চতা যদি না বাড়ে, তা হলে চিকিৎসককে জানান। শিশুর খাদ্যতালিকাতেও কার্বস-প্রোটিনের ব্যালান্স থাকা জরুরি। দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, ফল সবই যেন থাকে সেখানে। চিকিৎসকের পরামর্শে চিজ, মাখন, ঘি মাপ মতো দিতে পারেন। বাচ্চা রোগা বলে সবসময় চকলেট, জাঙ্ক ফুড খাওয়ার অনুমতি দেবেন না।


হঠাৎ খাওয়া বাড়িয়ে দেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এমন যেন না হয়, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে সুগার, কোলেস্টেরল, বদহজমের সমস্যা বেড়ে গেল।


বিবার্তা/অনামিকা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com