শিরোনাম
ছেলে নিয়ে একটু বেশিই পজিসিভ শাশুড়ি!
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৩৬
ছেলে নিয়ে একটু বেশিই পজিসিভ শাশুড়ি!
অনামিকা রায়
প্রিন্ট অ-অ+

প্রত্যেক মেয়েরই রান্নাঘরের প্রতি আলাদা অধিকার থাকে। সেখানে অন্য কেউ এসে ভাগ বসাবেন তা কেউই চান না। আর তাই শাশুড়ি মা রান্না করলেও নিয়মিত রান্নাঘর পরিষ্কার, সব গুছিয়ে রাখা এসব আপনিই করুন। এই দায়িত্ব অন্য কারোর হাতে ছাড়বেন না।


হাইলাইটস রাতারাতি শাশুড়ির মনোভাব বদলে ফেলা তো সম্ভব নয়। তাই, প্রথমে স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করুন। তাঁকে বোঝান যে তিনি এখন প্রাপ্তবয়স্ক


এক বছর মেলামেশার পর বিয়ে করেছে তারা। বিয়ের পর দিব্যি সুখেই দিন কাটছিল তাদের। একে অপরের বেশ ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছিল। সংসারের যাবতীয় কাজ তারা দুজনেই ভাগাভাগি করে নিত। এছাড়াও বাজার, দোকান, ঘর পরিষ্কার রাখা, রান্না সবেতেই তারা একে অন্যকে সাহায্য করত। কাজের ফাঁকে সময় বের করে সব হয়েও যেত। উইকেন্ডে কখনও নিজেরাই ভালোমন্দ রান্না করে হাউস পার্টি করত। ওদের কিছু বন্ধুও আসত সেই পার্টিতে। আবার কখনও নিজেদের গাড়ি নিয়েই বেড়িয়ে পড়ত উইকএন্ড ট্রিপে।


সমস্যা হল ছেলের মা ওদের সঙ্গে এসে থাকতে শুরু করার পর। ছেলেদের জন্মদিন উপলক্ষ্যে লকডাউনের মধ্যেই ওদের ফ্ল্যাটে চলে আসেন মা। বিয়ের পর থেকে কোনও দিনই তেমনভাবে শ্বশুরবাড়ি যেয়ে থাকেনি মেয়েটা। ফলে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে খুব বেশি সখ্যতা তার নেই। কিন্তু নিয়মিত ফোন করা, খোঁজ নেওয়া এসবই সে করত। ছেলেট কাছ থেকে জেনে নিয়ে প্রথম কয়েকদিন সে শাশুড়ির পছন্দের বেশ কিছু রান্নাবান্না করল। কিন্তু কিছুদিন পর তিনি বউমাকে বলেন অফিস সামলে আর রান্নাঘরে ঢুকতে হবে না। এদিকটা তিনিই সামলে নেবেন। আর তাছড়া বউমার রান্না তাঁর খুব একটা ভালো লাগছে না। এই কথায় বউমার একটু খারাপই লাগল। সাধ করে নিজের সাজানো রান্নাঘর চট করে সে অন্যের হাতে তুলে দেবে এটা ভাবতেই যেন তার কেমন একটা লাগল।


কিন্তু শাশুড়ি মা নাছোড়বান্দা। ওদিকে ছেলেটাও যেন হঠাৎ করে মাম্মাজ বয় হয়ে গেছে। মাকে বলছে পরোটা কর, পাঁঠার মাংস করো, চিংড়ির মালাইকারি করো। এদিকে বউকে সরাসরি না বলে ঘুরিয়ে মা বললেন তাঁর ছেলে এসব ডায়েট ফুড একদম খেতেই পারে না। মা-বাবা যা বলেন ছেলে অক্ষরে-অক্ষরে তা পালন করে চলে। বউর মতামত মোটেও গুরুত্ব পায় না। আবার যদি ছেলে একটু হলেও স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে ফেলেন, তাহলেই মায়ের মুখ ভার!


এদিকে ব্রেকফাস্টে স্মুদি খাওয়া মেয়েটা পরোটা, লুচি, পাস্তা, চাউমিন এসব একদমই খেতে পারে না। ভাত তো সে ছুঁয়েই দেখে না। কয়েকদিন পর দেখা গেল তার রান্না ওকে নিজের মতো করেই করতে হচ্ছে। আর ছেলে-মা বেশ রসিয়ে নিজেদের মতো করে খাওয়া দাওয়া করছে। খেতে বসে গল্প করছে। উইকেন্ড কোথাও যাওয়া হলে কিংবা কোনও খাবার অর্ডার করার থাকলে সেটাও হচ্ছে শাশুড়ির পছন্দ মতো। স্বামীকে কিছু বললেই বলে, 'মা তো কয়েকটা দিনের জন্যে এসেছে'। মেয়েটার সমস্যা, ভালোলাগা এসব কিছু সে পাত্তাই দিচ্ছে না।


তার খুব মন খারাপ হল। কয়েকদিন তো কান্নাকাটিও করল। পরের দিকে রাগের চোটে স্বামীর সঙ্গে প্রায় কথা বলাই বন্ধ করে দিল। ছেলেটা এসব দেখেও কিছু বলত না। একসময় মেয়েটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল বিয়েটা ভেঙেই ফেলবে। এসব শুনে মেয়েটার এক সিনিয়র বোন তাকে বেশ কিছু পরামর্শ দিল। কী উপদেশ দিয়েছিল সেই বোন তা রইল আপনাদের জন্যেও। শাশুড়ির সঙ্গে সমস্যা হলে এই পরামর্শ কাজে লাগান আপনিও।


* রাতারাতি শাশুড়ির মনোভাব বদলে ফেলা তো সম্ভব নয়। তাই, প্রথমে স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করুন। তাঁকে বোঝান যে তিনি এখন প্রাপ্তবয়স্ক। অতএব, বাবা-মায়ের কথা শুনে চলার সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রীর কথার গুরুত্ব দেয়াও প্রয়োজন। সঙ্গীকে এটাও বোঝান যে আপনার ভালমন্দ দেখার দায়িত্বও কিন্তু ওঁর। সে দায়িত্ব তিনি যেন অবহেলা না করেন।


* যে কোনও সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকা জরুরি। আপনি শ্বশুর-শাশুড়িকে শ্রদ্ধা করেন বলেই তাঁদের মুখের উপর প্রতিবাদ করেন না। কিন্তু তাঁরা যদি এমন কিছু বলেন যাতে আপনার সম্মানহানি হয়, তাহলে অবশ্যই প্রতিবাদ করুন। বারকয়েক প্রতিবাদ করলে তাঁরাও বুঝবেন যে আপনি মোটেও বিনা বিতর্কে ওদের বশ্যতা স্বীকার করে চলার মানুষ নন। তখন আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার আগে দু’বার ভাববেন।


* শাশুড়িকে বলুন স্বাস্থ্যের খাতিরেই প্রতিদিন অতিরিক্ত তেল মশলা খাওয়া ঠিক নয়। আপনার মতো ডায়েট ফুডও খাওয়া দরকার।


* বাইরে থেকে খাওয়ার আসলে যাতে আপনার পছন্দমতো কোনও খাবার থাকে সেই দেখার দায়িত্ব স্বামীর। এটা তাঁকে বুঝতেই হবে। আর মুখ ফুটে এই কথা স্বামীকে আপনিই বলুন।


বিবার্তা/এসএ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com