শিরোনাম
হাই ব্লাড সুগার? ডায়েট শাসনে নিয়ন্ত্রণে থাকুক ডায়াবেটিস!
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২১, ২০:৪২
হাই ব্লাড সুগার? ডায়েট শাসনে নিয়ন্ত্রণে থাকুক ডায়াবেটিস!
অনামিকা রায়
প্রিন্ট অ-অ+

বাঙালি গৃহস্থ বাড়ির এখন সবচেয়ে এই নামের সঙ্গে পরিচয় সুগার (ডায়াবিটিস)। যে কোনো বাড়ির সদস্যদের মধ্যে এই রোগটি থাকবে। একবার এর কবলে পড়লে, তা থেকে নিষ্কৃতি নেই। থাকতে হবে কঠোর নিয়মের মধ্যে। ডায়াবেটিস বংশানুক্রমিক। তবে, এখনকার দিনে দুশ্চিন্তায়ভরা লাইফস্টাইলের কারণে এই রোগ কড়া নাড়ছে সবার দরজায়।


দুশ্চিন্তা কমানোর পথ সহজ নয়। তাই এই রোগ মোকাবিলায় যা করা যায় সেটি হল, কড়া ডায়েট মেনে চলা। ডায়াটিশিয়ানদের মতে,ডায়েটের শাসন সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। রোগীও অনেকটা চাপমুক্ত থাকেন। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির স্থূলত্ব, রক্তচাপ, প্রদাহ, চোখের রোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকতে পারে। বেশিরভাগ রোগীদের ওষুধ খাওয়ানো হয় এবং জীবনধারাতে পরিবর্তন আনতে বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়েটে কিছু ছোট-বড় পরিবর্তন আনা হলে টাইপ -২ ডায়াবেটিস অনেকাংশে এড়ানো যায়।


কিভাবে আপনার দিন শুরু করবেন?


সকালে ঘুম থেকে উঠে চা বা কফি প্রথমে গ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ এটি কর্টিসলের স্তর বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর পরিবর্তে, সুগার রোগীরা এক গ্লাস হালকা গরম জল দিয়ে দিন শুরু করুন। আপনি চাইলে মেথির বীজ / জিরে / আমলা জাতীয় জিনিস থেকে তৈরি ডিটক্স জল খেতে পারেন। এর সঙ্গে এক মুঠো ভেজানো বাদাম নিতে পারেন। এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।


ব্রেকফাস্টে কী খাবেন?


প্রাতঃরাশ হ'ল দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কারণ এটি আপনার দেহে শক্তি সরবরাহ করে। প্রাতঃরাশের জন্য আপনি ওটমিল, স্টিল-কাট ওট, স্মুদি। উদ্ভিজ্জ চাপাতি বা একটি বড় বাটি তাজা ফল খেতে পারেন। সিদ্ধ ডিমও একটি ভালো বিকল্প। আপনি যদি নিরামিষভোজী হন তবে, মুরগির ব্রেস্ট খান। রাগি ইডলি / দোসা / চিলা / গোটা গমের রুটি ইত্যাদির মতো জিনসের তৈরি খাবার খান। পোহা বা উপমার মতো স্বাস্থ্যকর বিকল্পও থাকতে পারে রোজকার ডায়েটে। দিনে ১-২ গ্লাস দুধ পান করুন। এ ছাড়া দই ও পনিরও খান।


দুপুরের আগে খিদে পেলে কী খাবেন?


আপনি যদি দুপুরের আগে ক্ষুধার্ত বোধ করেন তবে আপনার কাছে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স রাখুন যেগুলিতে কম গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে। যেমন বাদাম এবং ছোলা ভাজা হতে পারে, যা আপনার তৃষ্ণাকে হ্রাস করতে সহায়তা করবে।


মধ্যাহ্নভোজনে কী থাকা দরকার


হাই ব্লাড সুগার রোগীদের সঠিক সময়মতো খাবার খাওয়া দরকার। তাই দুপুরের খাবারে এক বাটি ডাল-সহ পুষ্টিকর শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। যদি আপনি নন-ভেজিটেরিয়ান হয়ে থাকেন,তবে আপনি মাংসের স্ট্যু বা সামুদ্রিক মাছও খেতে পারেন। সঙ্গে এক বাটি দই বা রায়তা। এক গ্লাস বাটার মিল নিয়মিত নেওয়া যেতে পারে। তবে, অতিরিক্ত চিনি যুক্ত যাতে না হয়, তার দিকে খেয়াল রাখুন। আপনি যদি চাপাতি খান তবে রাগি, যব, জোয়ারের ময়দা দিয়ে তৈরি করুন। ডায়াবিটিস রোগীদের সাদা ভাত খাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত নয়। আপনি ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারেন। আপনি কখনও কখনও ব্রাউন রাইস বা কুইনোয়া বেছে নিতে পারেন।


সন্ধ্যের সময়


দুপুরের খাবারের পর সন্ধে বেলা খিদে পেল আপনি চিনি ছাড়া কম দুধ দিয়ে বা সামান্য গুড় মিশিয়ে চা পান করতে পারেন। চিপস, স্ন্যাকস বা বিস্কুট থেকে দূরে থাকুন। ভাজা ছোলা, দই বা ফল খাওয়া যায়।


রাতের খাবারে কী খাবেন?


রাতের খাবারে স্বল্প-ফ্যাট-যেমন গ্রিলড পনির / টফু / চিকেন / ফিশ বা সয়া খাবারের অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এ ছাড়া স্যুপ বা সালাদ দিয়ে পেট ভরাতে পারেন। সাধারণত এক জন ডায়াবিটিক রোগীর প্রয়োজন ১২০০-১৬০০ কিলো ক্যালরি। তবে রোগীর বয়স, লিঙ্গ, শরীরের গঠন, লাইফস্টাইলের ধরন, সুগার লেভেল এগুলির উপরে নির্ভর করে ক্যালরি নির্ধারিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে যে কোনও রোগের নিয়মমতো পথ্য অনুসরণ করা উচিত। ডায়াবিটিস রোগীর ক্ষেত্রে ইনসুলিন-ওষুধপত্র চলতেই থাকবে। তবে ডায়েট ফলো করলে রোগী অনেকটাই সুস্থ থাকবেন।


বিবার্তা/অনামিকা/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com