
রান্নায় একটু আদা দিলেই সেটার স্বাদ দ্বিগুণ হয়ে যায়। আদার গন্ধেই যেন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। গলা খুসখুস থেকে সর্দি-কাশি, কত কী না উপশম করতে কাজে লাগে এই আদা! আদা Zingiberaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। স্বাদে, গন্ধে এবং গুণের দিক থেকে আদা অনেকটা হলুদ এবং এলাচের কাছাকাছি। আদার ক্ষেত্রে একটা আলাদা সুবিধা আছে। আদা কেটে, গুঁড়ো করে বা রস করে অনেক ভাবেই খাওয়া যায়। শুধু রান্নায় স্বাদ বাড়ানো নয়, আদার অনেক ঔষধি গুণও আছে। গরম চায়ের মধ্যে আদা দিয়ে তৈরি আদা চায়ের গুণও তাই অসংখ্য।
হার্ট ভালো রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে-
নিয়মিত আদা চা পান করলে হার্ট ভালো থাকে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণ করে, কোলেস্টরল কম করে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে-
এই মুহূর্তে এর চেয়ে জরুরি কথা আর হয় না। আদায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে ও স্ট্রেস কমায়। আদা জলের বাষ্প নিলে বন্ধ নাক খুলে যায়।
ওজন কমায়-
গরম আদা চা পান করলে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকে, ফলে বাড়তি খাওয়া অনেক কম হয়। এতে ওজন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
গা বমি-বমি ভাব কম করে-
ক্যানসারের জন্য কেমোথেরাপি করলে বা গর্ভবতী অবস্থায় মর্নিং সিকনেস হয়। তখন গা গুলায়। অ্যান্টি-নসিয়া ওষুধ না খেয়ে এই প্রাকৃতিক আদা চা একবার ট্রাই করে দেখা যেতেই পারে।
মাথা ঘোরা কম করে-
প্লেনে উঠলে বা পাহাড়ি রাস্তায় যদি মাথা ঘোরার সমস্যা থাকে, তা হলে আদা চা পান করলে সেটা কমে যায়।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে-
যাঁদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের জন্য প্রতি দিন আদা চা পান করার সুফল অনেক। কারণ এই চা এইচবিএ১সি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। মস্তিষ্ক সচল রাখে এবং অ্যালঝাইমারের মতো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্রনিক ইনফ্লেমেশন এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস মানুষকে আরও বুড়ো করে তোলে। আর এটাই পরবর্তীকালে অ্যালঝাইমার নামক অসুখে রূপান্তরিত হয়। আদার মধ্যে উপস্থিত বায়ো-অ্যাকটিভ উপাদান এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট মস্তিষ্কের এই ইনফ্লেমেশন রোধ করে মস্তিষ্ক সচল ও সক্রিয় রাখে।
বদহজমের সমস্যা দূর করে-
পেটের উপরিভাগে ব্যথা বা অস্বস্তির কারণ হল বদহজম। আদা চা এই সমস্যা দূর করে এবং তার সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেটাও কম করতে সাহায্য করে।
ঋতুস্রাবের সময় পেট ব্যথা কম করে-
অনেক মহিলাই ঋতুস্রাবের সময় তলপেটের ব্যথায় ভোগেন। আদা চা হল এর অব্যর্থ দাওয়াই। আদা চায়ের সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করলে আরাম পাওয়া যায়। তা ছাড়া গরম জলে আদা দিয়ে সেই জলে তোয়ালে ভিজিয়ে তলপেটে ধরলেও উপশম মেলে।
স্ট্রেস কম করে-
আধুনিক যুগে আমরা কম-বেশি সকলেই স্ট্রেসের শিকার। আদার কড়া গন্ধ ও স্বাদ স্ট্রেস, টেনশন দুটোই দূর করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে-
প্যানক্রিয়াস ও কোলোন ক্যানসারে দারুণ কাজ দেয় আদা চা। নিয়মিত আদা চা পানে এই জাতীয় ক্যানসারের কোষ সহজে ছড়িয়ে পড়ে না।
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে-
আদা চায়ে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন ও মিনারেল। এগুলো রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং কার্ডিও ভাস্কুলার সমস্যা থাকলে সেটা দূর করে। ধমনীর চারপাশে মেদ জমতেও বাধা দেয় আদা চা।
এটি একটি প্রাকৃতিক পেন কিলার-
মুঠো মুঠো পেন কিলার না খেয়ে আদা চায়ের উপরে ব্যথা উপশমের জন্য ভরসা রাখা যেতে পারে। অস্টিয়ো আরথ্রাইট্রিস, মাথা ব্যথা, ঋতুস্রাবের ব্যথা, গলা ব্যথা এবং পেশীর ব্যথার মতো নানা ব্যাথার উপশম করে এই চা।
বিবার্তা/এসএ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
ময়মনসিংহ রোড, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]