শিরোনাম
শীতে বুকে কফ জমেছে? জেনে নিন কী করবেন
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:২৭
শীতে বুকে কফ জমেছে? জেনে নিন কী করবেন
অনামিকা রায়
প্রিন্ট অ-অ+

শীতকালে প্রায়শই বুকে কফ জমা হয়। সর্দি-কাশি হয়। মানুষ ভুগতে থাকেন। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময়টাতেই এসব বেশি করে দেখা যায়। কেন কফ হয় এবং কেমন করে এর সমাধান পাওয়া যায় সেদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।


কেন কফ-সর্দি হয়


বুকে কফ জমে সর্দি-জ্বর পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি হওয়া রোগগুলোর একটি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির বছরে ৪ বার এবং একটি শিশুর বছরে ১০ বার সর্দি-জ্বর হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। অর্থাৎ, আপনার জীবদ্দশায় ২০০ বারের বেশি সর্দি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আপনার। বুকে কফ জমা হওয়া, জ্বর আসা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়।


এই সর্দি-জ্বর বা ঠান্ডা লাগার কারণ ভাইরাস সংক্রমণ।একসময় ধারণা করা হতো একটি বিশেষ গোত্রের ভাইরাসের মাধ্যমেই শুধু সর্দি হয়। তবে ৮০'র দশকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয় যে মোট সাতটি গোত্রের ভাইরাসের কারণে সর্দি-জ্বর হয়ে থাকে।


ঠান্ডা বা শীতের সময় এই ভাইরাসগুলো দ্রুত সংক্রমিত হওয়ার মত পরিবেশ পায় বলে শীতের সময় সর্দি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায় এবং শীতের সময় মানুষের বেশি সর্দি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


সর্দি-জ্বর সংক্রমিত থাকা অবস্থায় নাসারন্ধ্রের ভেতরে মিউকাস লাইনিং অতিক্রম করে প্রবেশ করে সংক্রমণকারী জীবাণু। এর ফলে নাাসরন্ধ্রের ভেতর অতিরিক্ত সর্দি বা কফ জমা হয়, ডাক্তারি শাস্ত্র যেটিকে 'রাইনোরেয়া' বলা হয়।


অতিরিক্ত ধূমপানের কারণেও কফ জমা হতে পারে।একে স্মোকার্স কফ বলা হয়। ধূমপান যারা নিয়মিত করেন, তাদের অনেককেই অনেক সময় কাশতে দেখা যায় ওই জমা কফের কারণেই।


কফের সমাধান


কাশির সঙ্গে কি কফ বেরোয়? বেরোলেই যে জীবাণু সংক্রমণ হয়েছে, তা ঠিক নয়। কফ-কাশি হলেই না বুঝে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করাটাও ঠিক নয়। বরং জেনে রাখা ভালো, কোন ধরনের কাশিতে কী ধরনের চিকিৎসা চলে।


কাশির সঙ্গে কফ বেরোলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা চাই। কফের ধরনধারণ সম্পর্কে চিকিৎসককে যত বেশি তথ্য দিতে পারবেন, ততই ভালো। কেননা, এ থেকে কারণ সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে।


শ্লেষ্মা জাতীয় কফ বেরোলে তা সাধারণত অ্যালার্জি কিংবা ভাইরাসের কারণে হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন নেই।


তিন সপ্তাহের বেশি কাশি থাকলে যক্ষ্মা হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করানো আবশ্যক। এর পাশাপাশি সন্ধ্যার দিকে জ্বর আসার প্রবণতা, ওজন কমতে থাকা এবং কখনও কাশির সঙ্গে রক্তও যেতে পারে।


কাশির সঙ্গে রক্ত দেখলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বয়স্ক, ধূমপায়ী ব্যক্তির কাশির সঙ্গে রক্ত ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।


হলুদ রঙের ঘন কফ বেরোলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়েছে বলে ধারণা করতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করুন।


ফুসফুসের পর্দায় প্রদাহ হলে কাশি বা শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় বুকের কোনো একটি নির্দিষ্ট অংশে ব্যথা হয়ে থাকে।


ফুসফুস বা শ্বাসনালির কোনো অংশে জীবাণুর সংক্রমণের ফলে পুঁজ জমা হলে কাশির সঙ্গে দুর্গন্ধযুক্ত কফ হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে অনেক দিন পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করার প্রয়োজন হতে পারে।


ধূমপায়ীদের ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস নামের রোগ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পরপর দুই বছরের প্রতিটি বছরে পরপর তিন মাস কাশি ও কফ হয়ে থাকে। এ ধরনের লক্ষণ থাকলে চিকিৎসা নিন।


কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট কিংবা পায়ে পানি জমা হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে, হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।


হাঁপানি রোগীদের অনেক সময় শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি কাশির সঙ্গে হালকা হলুদ কফ বের হয়ে থাকে। হাঁপানি রোগীর কোনো সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নিয়ে ওষুধ সেবন করা উচিত।


বিবার্তা/এসএ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com