শিরোনাম
অতিরিক্ত ঘাম হলে যা করবেন
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:৫৬
অতিরিক্ত ঘাম হলে যা করবেন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

উষ্ণ আবহাওয়ায় থাকলে বা কোনো ধরণের শারীরিক পরিশ্রম করলে মানুষের শরীর থেকে ঘাম নির্গত হওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় যদি মাত্রাতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হয় তাহলে সমস্যা আছে।


অনেকের বগলের নিচে, হাতের বা পায়ের তালুতে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হয়। ইংরেজিতে এটিকে 'হাইপারহাইড্রোসিস' বলা হয়ে থাকে।


যেসব কারণে অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হয়


শরীরে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হওয়া যেমন কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, শরীরে উপস্থিত অন্য কোনো রোগের কারণে হতে পারে আবার তেমনি কোনো কারণ ছাড়াও এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে।


শরীরের যে কোনো অংশে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হতে পারে। আবার শরীরের নির্দিষ্ট কোনো অংশেও অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি পরিলক্ষিত হতে পারে।


সাধারণত বগলের নিচে, হাতের বা পায়ের তালুতে, কপালে, উপরের ঠোটে এবং ঘাড়ে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হতে দেখা যায়।


ঠিক কী কারণে শরীরের নির্দিষ্ট একটি অংশে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হয়, এ বিষয়টি এখনও পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
ধারণা করা হয়, এটি হাইপারথ্যালামাসে ত্রুটির কারণে অতিরিক্ত ঘাম হয়ে থাকে। হাইপারথ্যালামাস মস্তিষ্কের ঐ অংশ যেটি শরীরে ঘাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে।


অতিরিক্ত ঘামের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা হয়ে থাকে


যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ভাসকুলার সার্জন মার্ক হোয়াইটলি বলেন, সামাজিকভাবে সবচেয়ে ক্ষতিকর ঘামের সমস্যা হলো হাতের তালু ঘামা।


হোয়াইটলি বলেন, অনেক মানুষই হাত ঘামার কারণে আরেকজনের সাথে করমর্দন করতে অস্বস্তি বোধ করেন। কারণ করমর্দনের পর যখন ঐ ব্যক্তি তার হাত মোছেন, সেটি অপমানজনক।


বাংলাদেশের মত উষ্ণ আবহাওয়ার দেশে অতিরিক্ত ঘামের সাথে শরীরে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়াও একজন ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে অপদস্থকর অবস্থায় ফেলতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ঘামে কাপড় ভিজে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ার অভিজ্ঞতা হয়তো অনেকেরই আছে।


যেভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়


শরীরে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হওয়ার সমস্যা যথেষ্ট অস্বস্তিকর এবং ক্ষেত্রবিশেষে অবমাননাকর হলেও, খুশির বিষয় হলো প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।


অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা হলে ক্ষেত্রবিশেষে ডারমাটোলজিস্টরা ওষুধ গ্রহণ, বোটক্স ইনজেকশন নেয়া বা সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলো অপসারণের পরামর্শ দিতে পারেন।


তবে শরীরের কোন অংশে ঘাম হয়, তার উপর নির্ভর করে কোন ধরণের চিকিৎসা নেয়া হবে। বগলের নিচে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সমস্যা থাকলে বোটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন কার্যকর হতে পারে।


বোটুলিন এক ধরণের বিষাক্ত পদার্থ যেটি ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলোর সাথে যুক্ত স্নায়ুগুলোর কার্যক্ষমতা থামিয়ে দেয়, ফলে ঘাম তৈরি হয় না।


তবে এই পদ্ধতি স্থায়ী নয়, ওষুধের ডোজের ওপর নির্ভর করে প্রতি ছয় থেকে নয় মাসে এই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি করতে হয়।


ঘামের সমস্যার স্থায়ী সমাধান পেতে সার্জারি করতে হবে, যেটিকে এন্ডোস্কোপিক ট্রান্সথোরাসিক সিম্যাথেকটমি বলা হয়।


এই সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি হওয়ার গ্রন্থিগুলোর সাথে সংযুক্ত স্নায়ুর সংযোগ ছিন্ন করা হয়। এই সার্জারি করে হাত ঘামার সমস্যা সমাধানে প্রায় ৯৯% সফলতা পাওয়া যায়। তবে এই সার্জারির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।


একটি সমস্যা হলো, শরীরের যেসব অংশে ঘাম তৈরি হওয়ার কথা ছিল সার্জারির ফলে সেসব অংশে ঘাম সৃষ্টি হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু ঘাম তৈরিকারি গ্রন্থিগুলো শরীরে ঘাম উৎপন্ন করছে। এরকম ক্ষেত্রে, উৎপন্ন ঐ ঘাম শরীরের অন্যান্য অংশ দিয়ে নির্গত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সূত্র বিবিসি।


বিবার্তা/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com