শিরোনাম
ঘুষ লেনদেন মামলায় গ্রেফতার ডিআইজি মিজান
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০১৯, ১৬:৫৮
ঘুষ লেনদেন মামলায় গ্রেফতার ডিআইজি মিজান
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে ৪০ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে গ্রেফতারের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।


রবিবার (২১ জুলাই) ডিআইজি মিজানকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করে পুলিশ। ঘুষের এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।


গত ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা ঢাকার এক নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পর দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই ডিআইজি মিজান ও এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।


ফানাফিল্যার দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, খন্দকার এনামুল বাছির সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কমিশনের দায়িত্ব থেকে অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুযোগ প্রদানের হীন উদ্দেশ্যে ডিআইজি মিজানুর রহমার থেকে তার অবৈধ পন্থায় অর্জিত অপরাধলব্ধ ৪০ লাখ টাকা উৎকোচ-ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করে ওই টাকার অবস্থান গোপন করেন।


ডিআইজি মিজান সম্পর্কে মামলায় বলা হয়, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আশায়, অর্থাৎ অনুসন্ধানের ফলাফল নিজের পক্ষে নেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে খন্দকার এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করার জন্য অবৈধ পন্থায় অর্জিত অপরাধলব্ধ আয় থেকে ৪০ লাখ টাকা উৎকোচ-ঘুষ প্রদান করেন।


কোথায় কীভাবে ওই ঘুষ লেনদেন হয়েছিল, তার একটি বর্ণনাও মামলার এজাহারে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ডিআইজি মিজান গত ১৫ জানুয়ারি একটি বাজারের ব্যাগে কিছু বই ও ২৫ লাখ টাকা নিয়ে রমনা পার্কে যান এবং সেখানে এনামুল বাছিরের সঙ্গে তার আলোচনা হয়।


এরপর তারা রমনা পার্ক থেকে বেরিয়ে শাজাহানপুর এলাকায় যান, সেখানে বাছিরের কাছে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগ হস্তান্তর করেন মিজান। ব্যাগ নিয়ে বাছির তার বাসায় চলে যান।


১০ দিন পর একইভাবে মিজান একটি শপিং ব্যাগে করে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে রমনা পার্কে যান। সেখানে বাছিরের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে তারা দুজনে যান শান্তিনগর এলাকায়। সেখানে মিজানের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার ব্যাগ নিয়ে বাছির বাসায় চলে যান।


এজাহারে বলা হয়, অনুসন্ধানকালে বিশেষজ্ঞ মতামত, প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের বক্তব্য, অডিও রেকর্ডে উভয়ের কথোপকথন ও পারিপার্শ্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে প্রমাণিত হয়, নিজে অভিযোগের দায় থেকে বাঁচার জন্য ডিআইজি মিজানুর অসৎ উদ্দেশ্যে উৎকোচ-ঘুষ প্রদান করে খন্দকার এনামুল বাছিরকে প্রভাবিত করেন।


তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বাছির দাবি করেন, তার কণ্ঠ নকল করে ডিআইজি মিজান কিছু ‘বানোয়াট’ রেকর্ড একটি টেলিভিশনকে সরবরাহ করেছেন।


গত ১২ জুন বাছিরকে সরিয়ে দুদকের আরেক পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ফানাফিল্যাকে প্রধান করে তিন সদস্যের দলকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।


২০১৮ সালের ৩ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রথম ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। পরে এনামুল বাছির এ দায়িত্ব পান।


২৪ জুন তিন কোটি সাত লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং তিন কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ডিআইজি মিজান, তার স্ত্রী, ভাই ও ভাগনের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরিবর্তিত অনুসন্ধান কর্মকর্তা।



বিবার্তা/রবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com