শিরোনাম
রূপপুর দুর্নীতি: তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ
প্রকাশ : ২০ মে ২০১৯, ১৫:৪৮
রূপপুর দুর্নীতি: তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্রিনসিটি আবাসন প্রকল্পের বিছানা, বালিশ, আসবাবপত্র অস্বাভাবিক মূল্যে কেনা ও তা ভবনে তোলার ঘটনা তদন্তে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।


আদালতের অবকাশকালীন ছুটির পর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। একইসাথে এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি মুলতবি রেখেছে আদালত।


বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সরওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।


আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।


রবিবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্রিনসিটি আবাসন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ব্যারিস্টার সুমন।


অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে দুইটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। তাই এ মূহুর্তে আদালতের হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না।


রিটে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব, পাবনার গণপূর্ত অফিসার সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।


ব্যারিস্টার সুমন বলেন, সম্প্রতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীর ভবনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে ১৬ মে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।


তিনি বলেন, ওইসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে এ আবেদনটি করা হয়েছে।


তিনি আরো বলেন, ওই প্রকল্পের জন্য গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীর কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকার জন্য যে ভবন সেখানকার ফার্নিচার থেকে শুরু করে অন্যান্য জিনিস অস্বাভাবিক দামে কেনা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তা ভবনে তোলায়ও অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে। রিট আবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছি, এটি তদন্ত করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়েছি।


পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা আটটি ভবন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা। প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১টাকা। একেকটি খাটের মূল্য দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা। আর খাট ওপরে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা।


প্রতিটি টেলিভিশন কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা। আর টেলিভিশন ওপরে ওঠাতে দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৬৩৮ টাকার খরচ। বিছানার খরচ ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা দেখানো হয়েছে। তা ভবনে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। প্রতিটি ওয়ারড্রোব কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৫৮ টাকা। আর তা ওঠাতে দেখানো হয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৯ টাকার খরচ।


এরকম বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে।’


সুমন বলেন, প্রত্যেক কাজের একটা জবাবদিহিতা থাকা দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছেন। তাছাড়া এই প্রকল্পে যে টাকা খরচ দেখানো হয়েছে তা এ দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা। তাই বিষয়টি জবাবদিহিতায় আসা উচিত।


মন্ত্রণালয়ের তদন্তে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন দুদককে দেয়া হবে।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com