শিরোনাম
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে দায় নিতেই হবে : হাইকোর্ট
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৮:৫৩
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে দায় নিতেই হবে : হাইকোর্ট
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে না কাউকে দায় নিতেই হবে মন্তব্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, আগুনে মানুষ পুড়ে মরে তাহলে সিটি করপোরেশন কী করে? শুধু আন্তরিক হলে হবে না, কাজ করতে হবে।


এ ঘটনায় হতাহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া, পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন, গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণ এবং নিমতলীর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে করা পৃথক তিনটি রিট আবেদনের শুনানিকালে সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।


আদালতের রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অমিত তালুকদার ও মো. রিয়াজ উদ্দিন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।


শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সময়ের আবেদন করেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকার খুব আন্তরিক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


এসময় আদালত বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির যে সুপারিশ ছিল, সেগুলোর বাস্তবায়ন হলে চকবাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটতো না। নিমতলীর আগুনের ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রী দুই বোনকে দত্তক নিয়েছিলেন।


ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সরকার এ ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। এ সময় আদালত বলেন, আন্তরিক হলে লাভ নেই। মানুষতো চলে গেছে। কাজ তো করতে হবে।


আদালত বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই চকবাজারের ঘটনা তদারকি করছেন। তখন আদালত বলেন, উনি তো একা দেশ চালাতে পারবেন না। এই যে সুপারিশ, এগুলো তো বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্ব।


আদালত আরো বলেন, ওই সব এলাকার বাড়ির মালিকরা তিনগুণ বেশিতে গোডাউন ভাড়া দেন। আর নিজেরা থাকেন গুলশানে। মারা যায় গরিব মানুষ। সিটি করপোরেশন দেখেও না দেখার ভান করে। যারা রাস্তায় মারা গেল তাদের কী দোষ?


আদালত বলেন, পত্রিকায় দেখেছি, সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এটা বাস্তবায়ন করা তাদের দায়িত্ব ছিল। আমরা জানি না তারা কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা। পদক্ষেপ না নিলে ধরে নিতে হবে তাদের অবহেলা ছিল। পুরান ঢাকার রাস্তা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও যেতে পারে না। পাঁচ থেকে ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে না হয় কিছু হবে না। কিন্তু সাত থেকে আট মাত্রায় ভূমিকম্প হলে কোনো বিল্ডিং থাকবে না। এ ধরনের ভূমিকম্প হলে কাউকে উদ্ধার করারও কেউ থাকবে না।


চকবাজারের আগুনের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে আদালত বলেন, এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না। এটা অবহেলা। এর দায় কাউকে না কাউকে নিতে হবে। একজন দায়িত্বশীল আরেকজনের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন- এটা ঠিক না। আমাদের অর্থনীতিতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা দেশের ভাব মর্যাদা নষ্ট করে দিচ্ছে।


নিমতলীর ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলোর উল্লেখ করে আদালত বলেন, গভর্নমেন্টকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। নিমতলীর ঘটনার পর কিছুটা বাস্তবায়ন হলে এই ঘটনা ঘটতো না।


এরপর আদালত এ সংক্রান্ত সব রিট একসঙ্গে নিয়ে আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর দুইটায় শুনানি করবেন বলে আদেশ দেন।


এদিকে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে পৃথক পৃথক রিট আবেদন দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ, অ্যাডভোকেট অমিত দাস গুপ্ত, ব্যারিস্টার নূর মোহাম্মদ আজমী এবং খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার ও সাগুফতা তাবাচ্ছুম।


বিবার্তা/মাইকেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com