শিরোনাম
হলমার্ক চেয়ারম্যান জেসমিনের ৩ বছরের জেল
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০১৮, ১৬:০০
হলমার্ক চেয়ারম্যান জেসমিনের ৩ বছরের জেল
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল না করায় হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।


বুধবার ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আক্তারুজ্জামান এই দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে জেসমিনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।


জরিমানার টাকা আগামী সাত দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। আর তার সাজা থেকে হাজতবাসকালীন সময় বাদ যাবে। হলমার্ক গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় গত ২২ মাস ধরে কারাবন্দী আছেন জেসমনি।


ভুয়া এলসির বিপরীতে জনতা ব্যাংকের ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৬ টাকা আত্মসাতের মামলায় ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তাকে গ্রেফতার করা হয়।


গ্রেফতারের আগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় জেসমিন ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।


অন্য আসামিরা হলেন- হলমার্ক কর্মকর্তা মীর জাকারিয়া ও মো. জাহাঙ্গীর, সোনালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. সাইফুল হাসান, এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আবদুল মতিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মেহেরুন্নেসা মেরী, জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. আজমুল হক ও এসএম আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এজিএম আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. ফায়েজুর রহমান ভূঁইয়া ও জেসমিন আখতার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, জিনিয়া জেসমিন, মো. সাখাওয়াত হোসেন এবং মোছা. জেসমিন খাতুন।


এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ওরফে তফছীর এবং চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলমকে ‘আনোয়ারা স্পিনিং মিলস লি.’-এর মালিক পরিচয় দেন।


আরেক কর্মচারী মীর মো. জাকারিয়াকে ‘ম্যাক্স স্পিনিং মিলস লি.’-এর মালিক সাজিয়ে জনতা ব্যাংকের জনতা ভবন কর্পোরেট শাখায় ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলেন।


এ দুটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হলমার্ক ব্যাংক টু ব্যাংক এলসি করে। কিন্তু কোনো মালামাল আমদানি-রফতানি না করেই জনতা ব্যাংকে ভুয়া রেকর্ডপত্র দাখিল করে হলমার্ক গ্রুপ।


জনতা ব্যাংক ওই রেকর্ডপত্র ফরোয়ার্ড করে সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন শেরাটন হোটেল কর্পোরেট শাখায় পাঠায় একসেপ্টেন্সের জন্য।


একসেপ্টেন্সের ভিত্তিতে ইনল্যান্ড বিল পার্চেজের (আইবিপি) মাধ্যমে জনতা ব্যাংকের ভুয়া গ্রাহক আনোয়ার স্পিনিং মিলস ও ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের অ্যাকাউন্টে ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৬ টাকা জমা হয়।


সোনালী ব্যাংক এ অর্থ জনতা ব্যাংককে দেয়। জেসমিন ইসলাম, তানভীর মাহমুদ ও অন্যরা এ অর্থ জনতা ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাৎ করেন।


উল্লেখ্য, আলোচিত হলমার্ক কেলেংকারির ঘটনায় তানভীর ও জেসমিন ইসলামসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে ১১টি মামলা করে দুদক।


মামলায় ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। মামলাগুলোতে শুধু জেসমিন ইসলামের বিরুদ্ধে ১৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।


আত্মসাৎ হওয়া মোট অর্থের মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আনোয়ারা স্পিনিং ও ম্যাক্স স্পিনিং মিলস নামক দুই ভুয়া প্রতিষ্ঠান।


ভুয়া প্রতিষ্ঠান দুটির আত্মসাতের ঘটনায় ইতিপূর্বে জেসমিন ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়।


এসব মামলায় ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি শর্তসাপেক্ষে জামিন পান জেসমিন ইসলাম। শর্তটি ছিল প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা কিস্তিতে মোট ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা তিনি পরিশোধ করবেন।


তবে ২ বছরেও তিনি কিস্তির কোনো টাকা পরিশোধ করেননি। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর তিনি একটি মামলায় হাজিরা দিতে ঢাকা বিশেষ জজ আদালতে যান।


হাজিরা শেষে বেরিয়ে আসার সময় আদালত অঙ্গন থেকেই তার পিছু নেয় দুদক টিম। জেসমিন ইসলাম তার অজ্ঞাত ঠিকানার উদ্দেশে দ্রুত ওই স্থান ছাড়তে চাইলে ওত পেতে থাকা দুদক টিম তাকে গ্রেফতার করে।


বিবার্তা/তৌহিদ/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com