বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মেজর (অব.) মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন।
অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার অপর তিন আসামিকে পাঠানো হয়েছে এক দিন করে রিমান্ডে।
পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম মাজহারুল হক বুধবার এই আদেশ দেন।
এ মামলায় গ্রেফতার আরেক আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কিশোর আদালত।
মিজানকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার পাশাপাশি মো. শফিকুল ইসলাম (৪৩), মো. দিন্নাত (২৬) ও মো. আসাদ আলীকে (২২) এক দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। আর মো. জুনায়েদ হোসেন জয়ের (১৬) বিষয়টি বিবেচনার জন্য পাঠানো হচ্ছে কিশোর আদালতে।
এই পাঁচজনের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানকে সোমবার রাতে তার গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন, অর্থাৎ গাজীপুর সিটি করাপোরেশন নির্বাচনের দিন সকালে বাকি চারজনকে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
উল্লিখিতদের গ্রেফতারের পর গোয়ান্দা পুলিশ উত্তর বিভাগের উত্তরা জোনাল টিমের এসআই মো. সাইফুল ইসলাম মঙ্গলবার রাতে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ধানমণ্ডি থানায় একটি মামলা করেন।
পাঁচজনকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
পুলিশের অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, গ্রেফতার আসামিদের পক্ষে আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও গাজী শাহ আলম শুনানিতে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক তা খারিজ করে চারজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বলে জানান তিনি।
সোমবার মধ্যরাতে মিজান গ্রেফতার হওয়ার আগে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার কথিত টেলি কথোপকথনের দুটি অডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।
এর মধ্যে ইউটিউবে আসা একটি অডিওতে দুইজনকে গাজীপুরের ভোট নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনের দিন গাজীপুরের কাশিমপুর ইউনিয়নের তিন ভোটকেন্দ্রে ‘আওয়ামী লীগের ব্যাজ ও নৌকার ব্যানার’ নিয়ে ঘুরতে পারবে এরকম তিনজন ছেলে ‘ম্যানেজ’ করতে বলেন।
সেজন্য টাকা পয়সা ও ভোটের দিন ‘যন্ত্রপাতি’ দেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেয়া হয় ওই টেলি আলাপে।
তাকে বলতে শোনা যায়, যে পোলিং সেন্টারটা, তিনটার ভেতরে যে কোনো একটা, কিন্তু এই পোলিং সেন্টারের পাশে আমাদের কোনো লোকের বাড়ি থাকতে হবে। যে বাড়ির ভেতরে বইসা, জানলার ভেতরে বইসা… দোতলা বাড়ি বাড়ি থাকলে সুবিধা হয়, বুঝাইতে পারছি?
লোক ভাড়া করা আর বাসা ভাড়া নেয়ার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায় অন্য অডিওতে।
যাকে মিজান বলা হচ্ছে, তাকে বলতে শোনা যায়, এগুলারে (ভাড়া করা লোক) একটা গাড়ি দিয়া তুমি ঢাকায় চইলা আসবা। আমি ট্রেনিং মেনিং দিয়া ছাইড়া দিব। … বুঝতে পারছো?
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান মঙ্গলবার বলেন, কথোপকথনের অডিও রেকর্ড যাচাই করে তার নিশ্চিত হয়েছেন, সেটা মিজানের কণ্ঠ। এ কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিবার্তা/রোকন/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]