শিরোনাম
রায় শুনে কেউ কাঁদলেন, কেউ নির্বিকার
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:৪৮
রায় শুনে কেউ কাঁদলেন, কেউ নির্বিকার
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে লোহার খাঁচার ভেতরে থাকা কয়েকজন আসামি কাঁদলেন। এই সময় কেউ নির্বিকার ছিলেন। তবে প্রধান আসামি নুর হোসেন কয়েকজনকে সান্ত্বনা দেন।


সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। সকাল ১০টার কিছু পরেই রায় ঘোষণা করেন আদালত। সংক্ষিপ্ত রায়ে আসামিদের দণ্ড ঘোষণা করা হয়।


রায়ে সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি নয় আসামির সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।


রায় ঘোষণার সময় নূর হোসেনসহ ২০ আসামি আদালতে থাকা লোহার খাঁচার (আসামির কাঠগড়া) ভেতরে ছিলেন। আর র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা ছিলেন খাঁচার বাইরে। র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা হলেন চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা।


রায় শোনার পর নূর হোসেন এবং র‍্যাবের সাবেক এই তিন কর্মকর্তা নির্বিকার ছিলেন। তাদের কোনো প্রতিক্রিয়াই লক্ষ করা যায়নি। তবে মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে লোহার খাঁচার ভেতরে থাকা কয়েকজন আসামি হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। এ সময় তাদের সান্ত্বনা দেন নূর হোসেন।


রায় ঘোষণার পর একপর্যায়ে তারেক সাঈদের সঙ্গে নূর হোসেনকে বেশ স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে দেখা যায়।


মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার অপরাধ-জগতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) ছিলেন।


২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। একই সময়ে একই স্থানে আরেকটি গাড়িতে থাকা নারায়ণগঞ্জ আদালতের প্রবীণ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার চালককে অপহরণ করা হয়।


ঘটনার তিন দিন পর বন্দর উপজেলা শান্তির চর এলাকায় শীতলক্ষ্যা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাত জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রত্যেকের পেটে ছিল আঘাতের চিহ্ন; প্রতিটি লাশ ইটভর্তি দুটি করে বস্তায় বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল।


কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ছাড়া নিহত বাকিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহিম।


ঘটনার একদিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল।


প্রসঙ্গত, তারেক সাঈদ হলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর (মায়া) জামাতা। আর রানা হলেন খুলনা-২ আসনের সাংসদ মিজানুর রহমানের ভাগনির স্বামী।


বিবার্তা/আকবর/হোসেন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com