শিরোনাম
২৪ বছরের অভিজ্ঞতাকে বেসিসের কাজে লাগাতে চাই : লুনা শামসুদ্দোহা
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০১৮, ১৬:৩৯
২৪ বছরের অভিজ্ঞতাকে বেসিসের কাজে লাগাতে চাই  :  লুনা শামসুদ্দোহা
উজ্জ্বল এ গমেজ
প্রিন্ট অ-অ+

তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অনেক উচ্চতায় নিতে চান তিনি। একই সঙ্গে এ খাতে নারীর সম্পৃক্ততা বাড়াতে তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ। আর সেজন্যই হয়তো দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন বেসিস নির্বাচনে এবার প্যানেল ঘোষণা করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা লুনা শামসুদ্দোহা।


সফটওয়্যার উদ্যোক্তা হিসেবে দেশে-বিদেশে তিনি একজন পরিচিত মুখ। শুধু তাই নয়, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে একীভূত করার ক্ষেত্রে অনেক অবদান রয়েছে তাঁর।


বলছিলাম সফটওয়্যার শিল্পের নারী উদ্যোক্তা লুনা শামসুদ্দোহার কথা।


উদ্যোক্তা হিসেবেই কর্মজীবনের যাত্রা শুরু করেছেন এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করছেন তিনি দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে। প্রযুক্তি খাতে নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির কারণে ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর গ্লোবাল উইমেন ইনভেন্টরস অ্যান্ড ইনোভেটরস নেটওয়ার্ক (গুইন) সম্মাননা পান তিনি। বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ।


এছাড়াও তিনি দোহাটেক নিউ মিডিয়ার চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজিরও প্রেসিডেন্ট। তিনি বাংলাদেশ বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা, সফটওয়্যার উদ্যোক্তা এবং সুইজারল্যান্ডের গ্লোবাল থট লিডার অন ইনক্লুসিভ গ্রোথের সদস্য।


আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাহী কমিটির ২০১৮-২০ মেয়াদের নির্বাচনে ‘উইন্ড অব চেইঞ্জ’ প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।


সম্প্রতি রাজধানীর একটা রেস্টুরেন্টে বেসিস নির্বাচন নিয়ে বিবার্তার সাথে একান্ত আলাপে তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অবস্থান, বেসিস নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে কথা হয় তাঁর। বিবার্তার পাঠকদের জন্য দীর্ঘ আলাপের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরছেন উজ্জ্বল এ গমেজ।



বিবার্তা : তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের কাজ করার জন্য পরিবেশ রয়েছে কী কেমন?


লুনা শামসুদ্দোহা : তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার দুই যুগেরও বেশি। দেশের বাইরেও কাজ করেছি। আমার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের পুরুষরা নারীদের অনেক সম্মান করে। সরকারও প্রযুক্তিবান্ধব। সরকার সারাদেশের নারীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে আসার জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যেখানে সরকার সুযোগ দিচ্ছে, পুরুষরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি নারীদের সম্মান করছে - এমন সুন্দর পরিবেশে নারীরাই নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছে না। সমাজ কিন্তু কাজ করার জায়গা করে দিয়েছে, সরকারও নানাভাবে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিচ্ছে।


বিবার্তা : কর্মক্ষেত্রে নারীর চ্যালেঞ্জগুলো কী?


লুনা শামসুদ্দোহা : বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীকে ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করার সময় অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমখি হতে হয়। প্রথম কথা হলো, যদি অনেক উপর থেকে বলি তবে বলতে হয়, মেয়েরা কম্পিউটার সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং খুব কম পড়ে। এটাকে অনেকেই ছেলেদের লেখাপড়া ভাবে। এটা একটা বড় বাধা। তারপর মেয়েরা যাও পড়ে, তাতে ছেলেদের তুলনায় ক্যারিয়ারে যায় না। এটাও হয়। অনেক মেয়েই দেখা যায় পড়ালেখা করে, কিন্তু খুব কম কাজ করতে আসে। এটাও সামাজিক চ্যালেঞ্জ। অনেকেই মেয়েদের রাতের বেলায় আসা-যাওয়া, কাজ করাকে স্বাভাবিকভাবে নেয় না। এটা এখনো আমাদের দেশে হচ্ছে। এখনো সামাজিক বাধাটাই সবচেয়ে বড় বাধা। এসব বাধা অতিক্রম করে তাদের কাজে নিয়ে আসা চ্যালেঞ্জের।



বিবার্তা : তাহলে তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে করণীয় কী?


লুনা শামসুদ্দোহা : আশার কথা হলো, তথ্যপ্রযুক্তিতে দিনদিন নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। তবে আরো বাড়াতে হবে। নারীদের বলতে চাই, আপনারা অনেক আত্মবিশ্বাসী, বুদ্ধিমতী, আপনাদের অনেক ট্যালেন্ট রয়েছে। এগুলোকে কাজে লাগান। অনেকের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার দক্ষতা থাকলেও নানা কারণে এগিয়ে আসেন না। ভয় পান। আমি বলি, আপনারা ভয়কে জয় করুন। আমরা যদি কোনো কাজে ঝুঁকি না-নেই তাহলে কিছুই পাবো না। আমাদের নারীদের মধ্যে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। অমি বলতে চাই, নারী, তুমি পারবে।


বিবার্তা : এবার নির্বাচন প্রসঙ্গ। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন কেন?


লুনা শামসুদ্দোহা : বেসিস এখন তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন। এখানে কাজ করার অনেক জায়গা রয়েছে। একেক জন একেক অ্যাঙ্গেল থেকে কাজ করে আসছেন। আমাদেরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের প্যানেলে তথ্যপ্রযুক্তিতে কাজ করার বেশ অভিজ্ঞ প্রার্থী রয়েছেন। নবীন-প্রবীণ মিলে সবারই সফটওয়্যার সেক্টরে ১০-২৬ বছেরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। অভিজ্ঞদের অভিজ্ঞতা নিয়ে সরকারের পলিসির সাথে এক হয়ে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরের উন্নয়ন করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।



বিবার্তা : নির্বাচিত হলে কোন বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দেবেন?


লুনা শামসুদ্দোহা : আমি সেই ১৯৯৪ সাল থেকে শিখে আসছি, এখনও শিখছি। এখন শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক কম্পানির সাথেও প্রতিযোগিতা করে টিকে আছি। আমার এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে বেসিসের কাজে লাগাতে চাই। আমি যেভাবে নিজের কম্পানিকে এগিয়ে নিয়েছি, সেভাবে বেসিসের সদস্য কম্পানিগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বেসিস ইতোমধ্যেই একটা ভালো অবস্থানে রয়েছে। আমি চাই বেসিসকে একটা যথাযথ সেক্রেটারিয়েট হিসেবে গড়ে তুলতে। এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করবো। আর বেসিস মেম্বারদের মধ্যে যারা বিভিন্ন কম্পানিতে কাজ করছেন, আরেকটু সহায়তা পেয়ে হয়তো আরো ভালো কোনো কাজ পেতে পারেন, এমন মেম্বারদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দেবো। আমার কাছে মেম্বারদের চাওয়া-পাওয়া, যে কোনো সমস্যা এলে সবার আগে গুরুত্ব দিয়ে বেসিসকে সদস্যবন্ধব করার চেষ্টা করবো।


বিবার্তা : বেসিস ভোটারদের উদ্দেশে আপনার বিশেষ কোনো বার্তা…


লুনা শামসুদ্দোহা : আমার মেসেজ হবে, ভাইয়েরা, প্রার্থীদের সক্ষমতা, দক্ষতা, যোগ্যতা দেখে আপনার মূল্যবান ভোট দিন। আপনারা যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন তাহলে আপনার মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করুন। আমাকে একটা সুযোগ দেন। দেখেন আপনার স্বপ্নের সাথে আমার স্বপ্ন মিলিয়ে বেসিসকে কত দূর নিয়ে যাই।


বিবার্তা/উজ্জল/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com