শিরোনাম
আওয়ামী লীগের সাথে জোট করতে ভয় হয় : জীবন চৌধুরী
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০১৭, ১৮:৩৭
আওয়ামী লীগের সাথে জোট করতে ভয় হয় : জীবন চৌধুরী
জাহিদ বিপ্লব
প্রিন্ট অ-অ+

জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও নায়ক ড. আনোয়ার চৌধুরী (জীবন চৌধুরী) বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাথে জোট করে নির্বাচন করতে আমাদের ভয় হয়। তারা কথা রাখে না। বিএনপির জনসমর্থন থাকলেও রাজপথে তাঁদের খুজে পাওয়া দুস্কর। তাদের কার্যকলাপ সংবাদ সম্মেলন আর মানববন্ধনে সীমাবদ্ধ।


জীবন চৌধুরী রবিবার তার ব্যবসায়িক অফিসে বিবার্তার সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন।


বিবার্তা : বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মুল্যায়ন কী ?


জীবন চৌধুরী : স্থিতিশীল নয়। একতরফা রাজনীতি চলছে। মানুষের বাক-স্বাধীনতা নেই। দেশে প্রচুর কাজ হচ্ছে, এটা অনস্বীকার্য। কিন্তু সরকারীদলের কিছু নেতা-কর্মীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে এই সফলতা ম্লান হয়ে যাচ্ছে।


বিবার্তা : দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন ?


জীবন চৌধুরী : মোটামুটি সন্তোষজনক। জঙ্গী দমনের ক্ষেত্রেও সরকার যথেষ্ট সফলতা দেখিয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে গুম-খুন ও জননিরাপত্তার বিষয়ে সরকারকে আরো সচেতন হতে হবে।


বিবার্তা : বিএনপি সম্পর্কে আপনার মুল্যায়ন কী?


জীবন চৌধুরী : বিএনপি একটি বড় দল তা অম্বীকার করা যাবে না। কিন্তু রাজনীতিতে একবার ভুল সিদ্ধান্ত নিলে তার মাসুল দীর্ঘদিন দিতে হয়। বিএনপির জনসমর্থন থাকলেও রাজপথে তাদের খুঁজে পাওয়া দুস্কর। তাদের কার্যকলাপ সংবাদ সম্মেলন আর মানববন্ধনে সীমাবদ্ধ। তাছাড়া বিএনপি শাসনামলের দুর্নীতি ও অরাজকতার কথা মানুষ এখনও ভোলেনি।


বিবার্তা :বর্তমান সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা কী কী ?


জীবন চৌধুরী : আমার মতে সরকারের ব্যর্থতার চেয়ে সফলতাই বেশি। বিশেষ করে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর অনেকে মনে করেছিলো দেশে আবার সহিংসতা হবে। রাষ্ট্র বোধহয় অকার্যকর হয়ে যাবে। অনেকে তার চেষ্টাও করেছিলো। কিন্তু সরকার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে এনেছে, যা প্রশংসার দাবিদার। জঙ্গী দমন, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নসহ দেশে ব্যাপক কাজ করছে সরকার।


আর ব্যর্থতা বলতে সরকার দেশবাসীকে প্রকৃত গণতন্ত্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিরোধীদলকে রাজপথে দাঁড়াতে দেয়া হচ্ছে না। গণমাধ্যমের কাছ থেকেও স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে, যা দুঃখজনক।


বিবার্তা : অনেকে আপনাদের গৃহপালিত বিরোধীদল বলে আখ্যা দেয়, এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?


জীবন চৌধুরী : কথাটা সত্য নয়। আমরা যদি তা-ই হতাম তাহলে তো আমরা সরকারী অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতাম। তবে একথা সত্য যে, আমাদের দল থেকে কয়েকজন মন্ত্রী থাকায় জনগণ আমাদের ভালো ভাবে নেয়নি। আমি মনে করি, দলকে সত্যিকারের বিরোধীদল হিসেবে রূপ দিতে হলে আমাদের মন্ত্রীদের পদত্যাগ করা উচিত।


বিবার্তা : আগামীতে কী আপনারা আবার মহাজোটে থেকে নির্বাচন করছেন ?


জীবন চৌধুরী : বর্তমানে মহাজোট বলতে কিছু নেই। আছে ১৪ দলীয় জোট আর সম্মিলিত ঐক্যজোট। দলের চেয়ারম্যান অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, মহাজোটে আমরা নেই। জাতীয় পার্টি তাকিয়ে আছে বিএনপি'র নির্বাচনে আসা না আসার দিকে। নির্বাচনে বিএনপি যদি আসে তাহলে এক পলিসি, আর যদি না আসে তবে আরেক পলিসি গ্রহণ করবে আমাদের দল। কী সেই পলিসি তা এ মুহূর্তে বলা যাবে না। তবে, আওয়ামী লীগের সাথে জোট করে নির্বাচন করতে আমাদের ভয় হয়। তারা কথা রাখে না। ১৯৯৬, ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে এরশাদের সমর্থনে ক্ষমতায় এলেও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তাদের রূপ পরিবর্তন হয়ে যায়। ভাগ্য পরিবর্তন হয় তাদের, বরং কেন যেন মনে হয়, তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় এলে আমরা সবচেয়ে বেশি অসহায় হয়ে যাই। বিভিন্ন নির্বাচনে অথবা উপনির্বাচনে আমাদের আসনগুলোও নিয়ে যায়। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারা আমাদের অনেক সিনিয়র নেতাও লাঞ্ছিত হয়েছেন।


বিবার্তা : শোনা যাচ্ছে আপনারা নাকি ইতিমধ্যে একশ’ প্রার্থীর একটি তালিকা সরকারের নিকট জমা দিয়েছেন ?


জীবন চৌধুরী : কথাটা সত্য নয়, বিভ্রান্তিমূলক। আমরা এখনও ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় দফতর থেকে প্রতিটি জেলায় চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রার্থীদের তালিকা পাঠানোর জন্য। আমাদের প্রায় প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। এ অবস্থায় একশ জনের তালিকা পাঠানো খবর ভূয়া ও বিভ্রান্তিকর।


বিবার্তা/বিপ্লব/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com