জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের তিন বছর পূর্তি পালন করেছেন। বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে তিনি দেশের জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল অনলাইন বিবার্তা২৪.নেটকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দেন।সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন আমাদের সাভার প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম।
বিবার্তা: নারী উপাচার্য হিসেবে আপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা কেমন?
ফারজানা ইসলাম: আমি সবার কাছ থেকে বিশেষত আমার সহযোগী ও কর্মচারীদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছি। তবে মজার ব্যাপার হল আমার কর্মচারীরা আমার কাছ থেকে কঠোর ব্যবহার আশা করে। কিন্তু আমি কঠোর না হওয়ায় আমার কাছে মনে হয়, আমি তাদের কাজের সর্বোচ্চটুকু পাই না। কেননা কর্মচারীরা পুরুষ উপাচার্যের কঠোর ব্যবহারে অভ্যস্ত।
বিবার্তা: নারীরা বর্তমানে কেমন এগিয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ আমাদের দেশে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে আপনি কি মনে করছেন?
ফারজানা ইসলাম: আপনি আপনার দাদী নানী ও মাকে জিজ্ঞেস করুন। তাহলে বিষয়টা আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। শুধু বর্তমান অবস্থা দেখলে নারীরা কেমন তা বুঝা যাবে না। বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নে যথেষ্ট গুরত্ব দিচ্ছে।
বিবার্তা: নারী হিসেবে আপনার বড় সাফল্য কি?
ফারজানা ইসলাম: আমি হাজারো নারীর অনুপ্রেরণা হতে পেরেছি এটাই আমার সাফল্য। আমাকে আমার সহকর্মী নারী শিক্ষকরা বলেন, আপনাকে দেখে আমরা উপাচার্য হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি, যা আগে দেখতে পারতাম না। আমি অনেক স্কুলে দেখেছি অনেক মেয়ে যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় উপাচার্য সেজেছে। আমার মত শাড়ি ও টিপ পড়েছে।
বিবার্তা: উপাচার্য হিসেবে আপনার বড় সাফল্য কি?
ফারজানা ইসলাম: তিন বছর টিকে থাকতে পেরেছি। এর আগে দুবছরের ব্যবধানে তিন উপাচার্যকে বিদায় নিতে হয়েছে।
বিবার্তা: নারীর প্রতি সহিংসতাকে কিভাবে দেখছেন?
ফারজানা ইসলাম: সরকার যথেষ্ট আন্তরিক হওয়ার পরও আমরা প্রতিদিন সহিংসতার খবর পত্রিকায় দেখি। আমাদের নারীদের আরো কঠোর ও পুরুষদের নারীদের প্রতি সহনশীল হতে হবে।
বিবার্তা: সরকারের কাছে আপনার কিছু বলার আছে কিনা?
ফারজানা ইসলাম: আমি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ যে তারা আমাকে উপাচার্য বানিয়েছেন। কিন্তু আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের বার্ষিক বাজেট খুবই কম। এটা বাড়ানোর অনুরোধ করছি।
বিবার্তা: কখনো উপাচার্য হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন?
ফারজানা ইসলাম: না। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। আমি সফল হয়েছি। নারীদের পেশাদারিত্ব নিয়ে সন্দেহ থাকায় আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানানো হয়নি। আমি অনার্স মাস্টার্সে রেকর্ড পরিমাণ মার্কস পেয়ে প্রথম হয়েছিলাম। যাই হোক, পরিস্থিতি আমাকে উপাচার্য বানিয়েছে। এটা আমার ভাগ্য। সাবেক উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির আমাকে সিনেট নির্বাচনে দাঁড় করান। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আমাকে এই সুযোগ দেন।
বিবার্তা: দায়িত্ব পালনে আপনার বড় বাধা এসেছে কিনা?
ফারজানা ইসলাম: শিল্পপতি কাদের মোল্লা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কনভেনশন সেন্টার করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অভ্যন্তরীণ ঝামেলার কারণে বিষয়টি আটকে আছে।
বিবার্তা: ধন্যবাদ আপনাকে।
ফারজানা ইসলাম: ধন্যবাদ বিবার্তাকেও।
বিবার্তা/শরিফুল/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]