শিরোনাম
পাকিস্তানে হামলার ‘প্রমাণ’ নিয়ে ভারতে রাজনীতি
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০১৬, ১৫:৫৫
পাকিস্তানে হামলার ‘প্রমাণ’ নিয়ে ভারতে রাজনীতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বলা হচ্ছে বটে। কিন্তু হয়েছে কি? হলে সেই সেনা অভিযানের প্রমাণ কোথায়? বিরোধীদের এই বক্তব্যকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সরকারের বক্তব্য, উপযুক্ত সময়ে প্রমাণ দেব।


পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’কে সমর্থন করে প্রথম দিন যে বিরোধীরা একজোট হয়ে সরকার আর সেনার পাশে দাঁড়িয়েছিল, পাঁচদিন পরে তাদেরই গলায় অন্য সুর। সোমবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল সেনা অভিযানের প্রমাণ চেয়েছিলেন। প্রায় একই সুর ছিল কংগ্রেসের পি চিদম্বরমেরও।


মঙ্গলবার সকাল থেকে কংগ্রেসের সঞ্জয় নিরুপম তো সেনা অভিযানকেই ভুয়ো বলে বসেন! পরে অবস্থান কিছুটা নরম করে কংগ্রেস বলে, সেনার সাফল্য নিয়ে কোনও সংশয় নেই। ইউপিএ আমলেও তিন বার ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালিয়েছে সেনা। কিন্তু এ বারে ভারত সরকারি ভাবে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর কথা বলার পর থেকে পাকিস্তান যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা থামাতে প্রমাণ সামনে আনা দরকার।


মধ্যরাতে সেনা অভিযানের কী প্রমাণ আছে, সেটা সরকারই জানে। ঘটনা হল, এ নিয়ে ধোঁয়াশাটা আসলে তারাই তৈরি করেছে। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, ‘অপেক্ষা করুন, উপযুক্ত সময়ে সব খোলসা হবে।’ বিরোধীদের কটাক্ষের পরে সরকারের শীর্ষ সূত্রে মঙ্গলবার বলা হয়, ‘কদিন আগে বলা হচ্ছিল, সেনা অভিযান করার হিম্মত নেই নরেন্দ্র মোদির। সেটা হওয়ার পরে এখন বলা হচ্ছে, প্রমাণ নেই! প্রমাণ দেয়া হবে উপযুক্ত সময়ে।’


সেই উপযুক্ত সময় কোনটা?


বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে যখন উপযুক্ত মনে হবে, তখনই সেনা অভিযানের ভিডিও সামনে আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বারে দশেরার দিন লখনউ যাবেন।’ তা হলে কি তখনই প্রমাণ পেশ করবে সরকার? জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন ওই নেতা। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।


তাদের বক্তব্য, সেনা অভিযানকে সব দল সমর্থন করেছে। এ নিয়ে গোটা দেশ একজোট। এটা নিয়ে মোদি রাজনীতি করছেন কেন? কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘কাশ্মীরের ভোটের কথা মাথায় রেখে মোদি গত বার দীপাবলিতে সেখানে গিয়েছিলেন। এবার কি ভোটের জন্যই দশেরার দিন উত্তরপ্রদেশের সবথেকে পুরনো রামলীলায় যাবেন মোদি?’


সেনা অভিযান নিয়ে বিরোধীদের মোদি-কটাক্ষের জবাব দিতে বিজেপি মঙ্গলবার দিনভর জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে ধর্না দিয়েছে। কেজরিওয়ালের সঙ্গে পাক জঙ্গি হাফিজ সইদের যোগ আছে বলে স্লোগান দিয়েছে। বিজেপির তরফে বলা হয়, কেজরি এক সময় পাকিস্তানের থেকে অর্থ নিয়ে এনজিও চালাতেন। এখন তার প্রতিদান দিচ্ছেন। তাই তাঁর উদ্ধৃতি তুলে সরব হচ্ছে পাক সংবাদমাধ্যম ও শাসকগোষ্ঠী।


কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের কথায়, ‘কেজরিওয়াল তো পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেনই, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকেও চিদম্বরম এমন কথা বলেন কী করে? তা হলে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’কে সমর্থন করে সনিয়া ও রাহুল গান্ধী যে বিবৃতি দিয়েছেন, কংগ্রেস কি তার থেকে অবস্থান বদলেছে?’


রবিশঙ্করের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার কৌশলী মন্তব্য, ‘২০১১, ২০১৩ এবং ২০১৪— তিন বার সেনা অভিযান হয়েছে ইউপিএ আমলে। কিন্তু দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কংগ্রেস তখন ঢাক পেটায়নি। এ বারে সরকার সেনা অভিযানের কথা প্রকাশ্যে বলার পর পাকিস্তান সেটা নিয়ে অপপ্রচার করছে। ওদের জবাব দিতে তথ্যপ্রমাণ সামনে আনা দরকার।’


একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার প্রশ্নে সনিয়া ও রাহুল পুরোদস্তুর সমর্থন করেছেন সেনা ও সরকারকে। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীরা যে ধরনের রাজনীতি করচেন এবং অপরিনত মন্তব্য করছেন, তাতে কি প্রধানমন্ত্রীর মদদ রয়েছে?’


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com