শিরোনাম
এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর দেহ ভাইরাসমুক্ত!
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০১৯, ১৮:৩০
এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর দেহ ভাইরাসমুক্ত!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রাণঘাতী এইডস ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য পেয়েছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই সাফল্য এইডসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সুখবর এনে দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, এই সাফল্য এইডস নির্মূলে আশাবাদ জাগিয়ে তুলেছে।


মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে চিকিৎসাবিষয়ক এক সম্মেলনে তা উপস্থাপন করা হবে। নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানানো হয়।


এ ঘটনায় রোগীর অনুরোধে তার নাম, পরিচয়, বয়স ও জাতীয়তা গোপন রাখা হয়েছে।


চিকিৎসকরা বলছেন, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এইচআইভি আক্রান্ত এক রোগীর দেহ এইডস ভাইরাসমুক্ত করা গেছে। বিশ্বে এখন হিউম্যান ইমিউনো ডিফিসিয়েন্সি ভাইরাসে (এইচআইভি) আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ।


জানা যায়, যুক্তরাজ্যে এইচআইভি আক্রান্ত একজন রোগীকে এইডস ভাইরাসমুক্ত করতে পেরেছেন চিকিৎসকেরা। এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা এ সাফল্য পেলেন। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ওই রোগীকে এইডস ভাইরাসমুক্ত করা গেছে। এ ক্ষেত্রে দাতা ছিলেন এইচআইভিপ্রতিরোধী একজন সুস্থ ব্যক্তি। এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে এমন দুর্লভ জিনগত রূপান্তরের মাধ্যমে প্রায় তিন বছর ধরে চিকিৎসা চালানো হয়েছে।


চিকিৎসক দলের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী অধ্যাপক রবীন্দ্র গুপ্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোগীর দেহ এখন ভাইরাসমুক্ত। এ ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, বিজ্ঞানীরা একদিন এইডস নির্মূল করতে পারবেন। তবে এই সাফল্যের মানে এই নয় যে এইচআইভি থেকে আরোগ্য লাভের চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে।


রবীন্দ্র গুপ্ত জানান, তার রোগীর ‘উপশম’ হয়েছে। তবে রোগী সুস্থ হয়ে গেছেন এটা বলার সময় এখনো আসেনি। নাম, ঠিকানা গোপন রেখে ওই রোগীকে ‘লন্ডন রোগী’ বলে ডাকা হচ্ছে। এর আগে ২০০৭ সালে জার্মানির বার্লিনে টিমোথি ব্রাউন নামের এক মার্কিন নাগরিকের দেহ একই প্রক্রিয়ায় এইডস ভাইরাসমুক্ত করা হয়। মার্কিন ওই রোগীকে ‘বার্লিন রোগী’ বলে উল্লেখ করা হয়। তিনি এখনো ভাইরাসমুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।


তিনি আরো জানান, লন্ডন রোগী ২০০৩ সালে এইচআইভিতে আক্রান্ত হন। ২০১২ সালে তার একধরনের ব্লাড ক্যানসার বলে শনাক্ত হয়। ২০১৬ সালে ওই রোগী ক্যানসারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসকেরা প্রতিস্থাপনের জন্য দাতা খুঁজতে থাকেন। সেটা ছিল তাকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা।


আশির দশকে বিশ্বব্যাপী এইডস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন বিশ্বজুড়ে ৩ কোটি ৭০ লাখ এইচআইভি আক্রান্ত। প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ এইডস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।


বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞের মতে, এ ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি সব এইডস রোগীর জন্য সুবিধাজনক হবে না। এটা খুবই ব্যয়বহুল, জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এই পদক্ষেপ আশার আলো জাগিয়েছে বলে মনে করছেন তারা।


অস্ট্রেলিয়ার ডোহারটি ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটির সহসভাপতি শ্যারন লেউইনের মতে, লন্ডনের ঘটনা এইডসবিষয়ক গবেষণায় নতুন পথের সন্ধান দিচ্ছে। তিনি বলেন, এইচআইভির চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এ উদ্যোগ একদিন এই ভাইরাস নির্মূলে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়। সূত্র : রয়টার্স


বিবার্তা/মাইকেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com