সব উত্তেজনা-বাকযুদ্ধকে ছাপিয়ে পাকিস্তানে আটক ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ওয়াগা সীমান্তে ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এসময় তাকে স্বাগত জানাতে সীমান্তে ভিড় করেছে কয়েকশ’ মানুষ।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে দুই দেশের ‘ওয়াঘা’ সীমান্ত দিয়ে অভিনন্দনকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে পাকিস্তান সরকার। পাকিস্তানে মিগ-২১ যুদ্ধবিমান নিয়ে হামলা চালাতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন অভিনন্দন।
স্বদেশের মাটিতে অভিকে স্বাগত জানাতে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অংশে উপস্থিত ছিলেন তার বাবা এয়ার মার্শাল (অব.) এস বর্তমান ও মা ড. শোভা বর্তমান। ছিলেন সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বিপুলসংখ্যক জনতা। এসময় তাদের হাতে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। অভিনন্দন ভারতের মাটিতে পা রাখতেই তুমুল করতালি ও হর্ষধনিতে মুখর হয়ে ওঠে সীমান্ত।
ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহরে করে ওয়াঘা সীমান্তে নিয়ে আসা হয় অভিনন্দনকে। সেখানে তার ডাক্তারি পরীক্ষার পর ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়।
সীমান্তের ভারতীয় বন্দরেও অভিনন্দনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। বন্দরে ‘র’সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা ও তদন্ত সংস্থা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপও করতে হবে অভিনন্দনকে।
অভিনন্দনের দেশে ফেরার মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তামিলনাড়ুতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তামিলনাড়ুর সাহসী উইং কমান্ডার অভিনন্দন প্রত্যেক ভারতীয়র গর্ব।
আর মোদির দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, এতো অল্প সময়ে পাইলট অভিনন্দনকে ফেরানোর পরিস্থিতি তৈরি করা আমাদের কূটনৈতিক বিজয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় ভারতের বিশেষায়িত নিরাপত্তা বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ৪৪ জওয়ান নিহত হন।
জঙ্গিদের মদত দেয়ার জন্য ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে এর মোক্ষম জবাব দিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে পাকিস্তানের বালাকোট শহরে জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের আস্তানায় হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। এর একদিন পরই বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতের দু’টি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ও পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে আটক করে পাকিস্তান।
অভিনন্দন পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়েছিলেন যুদ্ধবিমান মিগ-২১ নিয়ে। তবে সেই যুদ্ধবিমানটি ভূপাতিত করে ফেলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। ওই যুদ্ধবিমান থেকে তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পাইলট অভিনন্দন পড়ে যান পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে। কাশ্মীরীরা তাকে ধরে আক্রমণ করতে চাইলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অভিনন্দনকে নিজেদের জিম্মায় নেয়।
এরপর ভারত তাদের পাইলটকে ফেরত চেয়ে দিল্লিতে নিযুক্ত দেশটির উপ-হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠায়। শুরু করে কূটনৈতিক দৌড়ঝাপ। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা দেন, ‘শান্তির স্বার্থে’ শুক্রবার অভিনন্দনকে মুক্তি দেয়া হবে।
বিবার্তা/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]