শিরোনাম
পাকিস্তানকে একঘরে করতে ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপ
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:১১
পাকিস্তানকে একঘরে করতে ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ব্যবস্থা হিসেবে এবার পাকিস্তানকে একঘরে করতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত। আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে একঘরে করতে জাতিসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্যসহ জাপান ও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে ভারত।


জানা যায়, চীনসহ এসব দেশের দূতদের কাছে সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতায় পাকিস্তানের ভূমিকা ব্যাখ্যা করছেন ভারতের কূটনীতিকরা। তারা বিশ্বনেতাদের প্রতি পাকিস্তানকে একঘরে করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যেকোনো প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে পাকিস্তানের রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে চীন। ফলে কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে শায়েস্তা করার ক্ষেত্রে ভারতের সুযোগ সীমিত।


বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ সদস্য নিহতের পর শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির ওই বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, পাকিস্তানকে দেয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করবে ভারত। আগের দিন সন্ধ্যায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করতে ভারতের প্রস্তাবে সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়। ভারতের ওই প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে আটকে দিয়েছিল চীন।


যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং ফ্রান্স সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর কথা বললেও নীরবতা ভেঙে চীন জানিয়ে দিয়েছে মাসুদ আজহারকে নিয়ে তাদের নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং সুয়াং বলেছেন, সন্ত্রাসী সংগঠন তালিকাভুক্তির বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের সংশ্লিষ্ট কমিটির নিজস্ব সনদ রয়েছে।


মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসীর তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করতে পারলে তা জয়েশ-ই-মুহাম্মদের জন্য বড় ধরনের আঘাত হতে পারে। যদিও এই সংগঠন পাকিস্তানে নিষিদ্ধ। তবে ভারত ও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন ছদ্মনামে সংগঠনটি পাকিস্তানে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে ও তহবিল সংগ্রহ করছে।


বেশ কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাসীদের তালিকায় মাসুদ আজহারকে অন্তর্ভুক্ত করতে। শুক্রবার এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিন্তু চীন সবসময় এই উদ্যোগ আটকে দিয়েছে।


বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা বন্ধের জন্য পাকিস্তানের প্রতি দাবি জানানো হয়। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানের হাই কমিশনার সোয়াইল মাহমুদকে ডেকে পাঠায় ভারত। তাকে কড়া রাজনৈতিক শাস্তির বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।


সরকারি সূত্রে জানা যায়, ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং প্রমাণ সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের অভ্যন্তরে তৎপর বা সহায়তা পাওয়া সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও সতর্ক করা হয় তাকে। এছাড়া আলোচনার জন্য ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় দূত অজয় বিসারিয়াকে ডেকে পাঠিয়েছে দিল্লি।


পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাশ্মীরের হামলাকে গভীর উদ্বেগের’ বিষয় উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। সংক্ষিপ্ত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত সরকার বা সংবাদমাধ্যমে তদন্ত ছাড়াই এই ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানকে জড়িত করার যেকোনো পরোক্ষ ইঙ্গিতের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।


কাশ্মীরে হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যেকোনো সময় যেকোনো পদক্ষেপ নেয়ার স্বাধীনতা ও অনুমতি দেশটির সেনাবাহিনীকে দেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে বিশ্লেষকরা বলছে, কাশ্মীর হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রেও ভারতের সুযোগ সীমিত। বিশেষ করে তুষারে ঢাকা দীর্ঘ সীমান্ত ও পাকিস্তানের সেনারা সর্বোচ্চ অবস্থায় থাকার কারণে এই সামরিক পদক্ষেপের সুযোগও কমে এসেছে।


২০১৬ সালে উরিতে ভারতীয় সেনা ঘাঁটিতে জয়েশ-ই-মুহাম্মদের নামে হামলার পর পাকিস্তানের ভেতরে এক সামরিক অভিযান চালায় ভারত। নয়া দিল্লি তখন এই অভিযানকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হিসেবে অভিহিত করে।


বিবার্তা/মাইকেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com