আলোর ঝিলমিল নেই। টয়ট্রেনের কু ঝিকঝিক নেই। বড়দিনের আনন্দের প্রতীক ‘ন্যাশনাল ক্রিসমাস ট্রি’ যেন থমকে যাওয়া সরকারের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে। আর সব কিছুর মধ্যে তিনি একা! টুইটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তেমনই দাবি।
বড়দিনটা হোয়াইট হাউসে থেকে ট্রাম্প তার সমালোচকদের তুলোধোনা করেই কাটালেন। ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসোর্টে এবার তিনি ছুটি কাটাতে যাননি। সোমবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রতিবারের মতো এ বার আর সেখানে নয়, বড়দিন কাটবে হোয়াইট হাউসে, ডেমোক্র্যাটদের জন্য অপেক্ষা করে। কবে তারা এলে মীমাংসার মাধ্যমে সরকারে ‘শাট ডাউন’ ওঠে ভাবছেন ট্রাম্প।
আর টুইটে লিখছেন, হোয়াইট হাউসে আমি একেবারে একা (বেচারা)। ডেমোক্র্যাটদের জন্য অপেক্ষা করছি। যদি তারা সীমান্ত সুরক্ষার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সমস্যাটা মিটিয়ে নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ প্রান্তে মেক্সিকো সীমান্ত বরাবর প্রাচীর তুলতে বদ্ধপরিকর ট্রাম্প। তার জন্য সরকারের কাছ থেকে ৫৭০ কোটি ডলার চেয়েছেন তিনি। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা প্রাচীর তুলতে দিতে নারাজ। আর এই নিয়েই বিরোধের জেরে শাটডাউন বুধবার চতুর্থ দিনে পড়েছে। কিন্তু সে অচলাবস্থা কাটার কোনো লক্ষণ নেই।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বসে বসে একের পর এক টুইট আর ছবি পোস্ট করে চলেছেন। বোঝাতে চাইছেন, উৎসবের মরসুমে সব ভুলে তিনি কাজ করে চলেছেন আর বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা ছুটি উপভোগ করছেন। সোমবার সংবাদমাধ্যমের সামনে ট্রাম্প বলেছেন, শাটডাউন নতুন নয়। আমাদের সীমান্তে সুরক্ষা চাই।
আর টুইটও করেছেন, ডেমোক্র্যাটরা চুক্তি না করে যে বিপুল খরচের বোঝা দেশের উপরে চাপাচ্ছে, সেটা সীমান্তে প্রাচীর তোলার খরচের চেয়েও বেশি!
এক টুইটে তিনি বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা ভণ্ড। গণমাধ্যম মিথ্যা গল্প বানায়। বিদেশ নীতি নিয়ে ভুল করেন সিনেটররা, এমনকী প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসও।
এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ফের সরব প্রেসিডেন্ট, আমি ওভাল অফিসে। এইমাত্র টেক্সাসে ওই প্রাচীরের ১৮৫ কিলোমিটার লম্বা অংশের কনট্র্যাক্ট দিয়ে এলাম। প্রাচীরের বেশ কিছু অংশ এভাবে আমরা তৈরি করছি, সারাই করছি। কোথাও কোথাও কাজ শেষ। ডেমোক্র্যাটরা শাটডাউন তুলে নিন। কয়েক কোটি প্রাণ ও ডলার বাঁচবে।
এরপরে উত্তর কোরিয়া নিয়েও শীর্ষ স্তরের অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প এবং পোস্ট করেছেন ছবি। তিনি লিখেছেন, বড়দিনে উত্তর কোরিয়া নিয়ে আমার টিমের সঙ্গে কাজ চলছে। চেয়ারম্যান কিম জং উনের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছি।
সোমবার হোয়াইট হাউসে কার্যত একাই ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বড়দিনের ছুটিতে ক্যাপিটল হিলের বেশিরভাগ আইপ্রণেতাই বাড়ি চলে গেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও ক্রিসমাসের ছুটি কাটাতে চলে গেছেন নাভাল অবজারভেটরির বাসভবনে।
এদিকে সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের এসব টুইট এমন একজন জনবিচ্ছিন্ন নেতার চিত্র সামনে হাজির করছে, যার গভীর জখমের শুশ্রূষা প্রয়োজন।
রিপাবলিকান প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করা পিটার ওয়েনার বলেছেন, এটি একটি হারিয়ে যাওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত আত্মার ছবি। বিচ্ছিন্ন ও একাকী প্রেসিডেন্টের দুঃখজনক ও গ্লানিকর কিছুর ছবি। সুত্র: এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকা
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]