শিরোনাম
মিয়ানমারের কয়েকশ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ
প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:১০
মিয়ানমারের কয়েকশ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ
প্রতীকী ছবি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

‘সমন্বিত অনৈতিক আচরণ’ এবং সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে মিয়ানমারের আরও কয়েকশ অ্যাকাউন্ট, পেইজ ও গ্রুপ বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট ৪২৫টি পেজ, ১৭টি গ্রুপ ও ১৩৫টি অ্যাকাউন্ট এবং তাদের ইনস্টাগ্রাম ফটো-শেয়ারিং সার্ভিস থেকে ১৫টি অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নেয়া হয়েছে।


ফেসবুক আরও জানিয়েছে, অন্যান্য যেসব পেজ ‘যারা অন্যদের বিভ্রান্ত করছে অথবা তারা যা করছে’ তা কোম্পানির নীতি লঙ্ঘন করছে। সেগুলোর বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।


মিয়ানমারে ফেসবুকের এটি এ ধরনের তৃতীয় উদ্যোগ। এর আগে গত আগস্ট ও অক্টোবরে রোহিঙ্গাবিরোধী বিদ্বেষ ছড়ানোর দায়ে অনেক অ্যাকাউন্ট ও পেজ ডিলিট করে দেওয়া হয়।


বন্ধ হওয়া এবারের প্ল্যাটফর্মগুলো ছিল দৃশ্যত খবর, বিনোদন, রূপচর্চা ও লাইফস্টাইলভিত্তিক। তবে বাস্তবে এসব পেজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগসাজশ রয়েছে অথবা ইতোপূর্বে বন্ধ করে দেওয়া কোনো পেজের নতুন সংস্করণ।


প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক। দেশটিতে রোহিঙ্গা গণহত্যায়ও ফেসবুক ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সাধারণ বৌদ্ধদের উসকানি দেওয়া হয়েছিল। এ ধরনের উসকানি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য তখন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।


এ অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়াটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বার্মিজ ভাষায় কনটেন্ট পর্যালোচনায় সক্ষম অধিক সংখ্যক ব্যক্তিদের নিয়োগ দেন। একইসঙ্গে, ঘৃণা ছড়ানো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের শনাক্ত করা এবং তাদের ‘ব্যান’ করতে নাগরিক সমাজের সঙ্গে কাজ করার কথা জানান তিনি।


গত এপ্রিলে মার্কিন সিনেটের কমার্স এবং জুডিশিয়ারি কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার আগে এক ম্যারাথন শুনানিতে জাকারবার্গের কাছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ফেসবুকের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।


জাকারবার্গের কাছে মিয়ানমারের গণহত্যাকে উস্কে দেওয়ার জন্য ফেসবুকের ভূমিকাকে দোষারোপ করে জাতিসংঘের তদন্তকারীদের এক প্রতিবেদনের উল্লেখ করেন ভারমন্টের সিনেটর প্যাট্রিক জে লেয়াহি। ২০১৬ সালে ফেসবুকে এক বার্মিজ সাংবাদিককে হত্যার হুমকি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়েও আলোকপাত করেন এই সিনেটর।


প্যাট্রিক জে লেয়াহি বলেন, আপনার শনাক্তকরণ ব্যবস্থার মধ্যেও এই হুমকি ছড়িয়ে পড়েছিল। এটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর এ নিয়ে একের পর এক উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফেসবুক থেকে এটি সরিয়ে ফেলার আহ্বান জানাতে নাগরিক সমাজও এ ঘটনায় যুক্ত হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন এটি সরিয়ে ফেলা হয়নি?


মিয়ানমারের সহিংসতাকে ‘ভয়ানক ট্র্যাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করেন জাকারবার্গ। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সেজন্য তার কোম্পানি সুনির্দিষ্টভাবে তিনটি পদক্ষেপ নিয়েছে। ঘৃণাত্মক বক্তব্যের সঙ্গে ভাষার বিষয়টি জড়িত রয়েছে। ফলে ফেসবুক বার্মিজ ভাষায় পারদর্শী আরও কয়েক ডজন ব্যক্তিকে নিয়োগ দিচ্ছে যারা কনটেন্ট পর্যালোচনায় সক্ষম। কেননা, স্থানীয় ভাষায় পারদর্শী ব্যক্তিদের ছাড়া এসব কিছু পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন। এ ব্যাপারে আমাদের প্রচেষ্টা জোরদার করছি। ঘৃণা ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে মিয়ানমারের নাগরিক সমাজের সঙ্গে কাজ করছে ফেসবুক। এটা এজন্য করা হচ্ছে যেন, নির্দিষ্ট কিছু কন্টেটের বদলে বরং বিদ্বেষ ছড়ানো ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টই বন্ধ করে দেওয়া যায়। মিয়ানমার এবং অন্যান্য যেসব দেশে এ ধরনের ইস্যু রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এমন কিছু যেন না ঘটে সেজন্য ফেসবুকের একটি টিম সজাগ রয়েছে।


বিবার্তা/হাসান/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com