শিরোনাম
হামাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতিসংঘে প্রত্যাখ্যান
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:৪০
হামাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতিসংঘে প্রত্যাখ্যান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসকে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আনা এক নিন্দা প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ।


সাধারণভাবে অর্ধেকের বেশি ভোটে প্রস্তাব পাস হলেও, এই প্রস্তাবের ক্ষেত্রে শর্ত দেয়া হয় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের। খসড়া এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ৮৭টি, বিপক্ষে ৫৮টি। ৩২টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল আর অনুপস্থিত ছিল ১৬টি দেশ। খসড়া গ্রহণের পক্ষে ভোট দিয়েছে জার্মানি।


তবে খসড়া প্রস্তাবে ভোটের আগে আরেকটি ভোট অনুষ্ঠিত হয়। আরব দেশগুলোর দাবি অনুযায়ী, এই ভোটে অর্ধেকের বেশি নয়, শর্ত দেয়া হয় দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পাওয়ার। অল্প ভোটের ব্যবধানে এই প্রস্তাবটি পাস করে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য দাবি জানিয়েছিল অন্যান্য প্রস্তাবের মতোই এই প্রস্তাবটিও সংখ্যালঘুর মতের ভিত্তিতেই নির্ধারণ হোক।


‘দুই-তৃতীয়াংশ' শর্তের এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ৭৫টি, বিপক্ষে ৭২টি। ২৬টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। তবে বেশ কয়েকটি দেশ শেষ মুহূর্তে তাঁদের অবস্থান পরিবর্তন করে পক্ষে ভোট দেয়।


খসড়া প্রস্তাবে ভোটের আগে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি সাধারণ পরিষদকে বলেন, এই প্রস্তাব পাস হলে তা ইতিহাস হবে এবং হামাসের জন্য বড় একটি ধাক্কা হবে। হামাসকে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ‘উদ্ভট' জঙ্গি সংগঠন বলেও আখ্যা দেন।



হ্যালি বলেন, আজ জাতিসংঘ যে সিদ্ধান্ত নেয়, তাতেই পরিষ্কার হবে, ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিটি দেশ কতটা সোচ্চার। ইহুদি রাষ্ট্র ও ইহুদি জনগণের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসকে সন্ত্রাস না বলার চেয়ে বড় ইহুদিবিদ্বেষ আর কিছু নেই৷ হামাসকে আগেই ‘জঙ্গি সংগঠন' আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ।


এদিকে হামাস কর্মকর্তা সামি আমু জুহরি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, খসড়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় একটি চপেটাঘাত। এর ফলে এটাই প্রমাণ হয়েছে, আমাদের প্রতিরোধের বৈধতা রয়েছে।


ফিলিস্তিনের ক্ষমতা নিয়ে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ'র সাথে হামাসের দ্বন্দ্ব থাকলেও আব্বাস জাতিসংঘে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের ঘটনাটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের জাতীয় সংগ্রামকে নিন্দা জানায়, এমন কোনো কর্মকাণ্ডকে স্বাগত জানাবে না ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্সি।


আর জাতিসংঘে ইরানের উপ রাষ্ট্রদূত এসাগ আল হাবিব বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আসলে এই সংঘাতের মূল কারণ থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করছে।


ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করছেন, যদিও প্রস্তাবের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পড়েনি, তারপরও এই প্রথম সাধারণ পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হামাসের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে।


জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবের রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে কিন্তু এটি মানতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।


১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রথম হামাসের নিন্দা করে এ ধরণের একটি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেন হামাস এবং এর সামরিক শাখাকে একটি সন্ত্রাসাবাদী দল বলে গণ্য করে।


অন্যদিকে হামাসের সমর্থকরা মনে করে, এটি ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে একটি ন্যায্য ও বৈধ প্রতিরোধ আন্দোলন। সূত্র:ডয়চে ভেলে ও বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com