মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পৃক্ততার বিষয়ে ক্রমেই নিশ্চিত হচ্ছেন।
যদি সাংবাদিক খাশোগি হত্যায় যুবরাজ যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে তবে হোয়াইট হাউজের সঙ্গে সৌদি রাজ পরিবারের সখ্যতা টিকিয়ে রাখা দায় হয়ে যাবে। কর্মকর্তাদের মতে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো খাশোগি হত্যার সঙ্গে সৌদি যুবরাজের সম্পৃক্ততার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পায়নি। তবে মার্কিন গোয়েন্দারা ক্রমেই সালমানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ জড়ো করছেন।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ সরাসরি খাশোগিকে হত্যার আদেশ দিয়েছেন বা তাকে আটক করে সৌদি আরবে ফেরাতে চেয়েছিলেন কিনা সেই বিষয়েও নিশ্চিত নন তারা। তাদের মতে, সৌদি আরবের নিরাপত্তা বিভাগের ওপর যুবরাজের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে। আর এর মানে হলো তার অজান্তে এমন কিছু ঘটা সম্ভব নয়।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে উপস্থাপন করতে চায় যুবরাজ মোহাম্মদ সালমানের এই বিতর্কিত বিষয়গুলো। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সৌদি আরব সফরেও এই সঙ্কটের কোনো সমাধান না আসায় আমেরিকান ছয় কর্মকর্তা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সৌদি নাগরিক ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর প্রবেশ করেন তিনি। কনস্যুলেট থেকে আর বের হননি খাশোগি বলে তুরস্কের কর্মকর্তারা এবং খাশোগির পরিবার অভিযোগ করেন।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করে, সৌদি যুবরাজ দেশটির নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মুখ্য নিয়ন্ত্রক, তার জ্ঞানের বাহিরে এমন কোন অপারেশন পরিচালনা করতে পারেনা দলটি। সালমানের নিরাপত্তা প্রহরীদের খাশোগি অন্তর্ধানের সময়ে তুরস্কে অবস্থান গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের এই রহস্যে আরো স্পষ্টতা প্রমাণ করে।
খাশোগি সালমানের পলিসির বিরুদ্ধে একজন কট্টর সমালোচক, তাকে হটাতে সালমান যেকোনো ব্যবস্থা করতে পারে বলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘিরে খাশোগি রহস্যে তাই ক্রমেই মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনী সালমান সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে ক্রমেই নিশ্চিত হচ্ছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর কাছে গোয়েন্দাদের এমন প্রমাণাদি ও অনুমান উপস্থাপিত হলেও ট্রাম্প এ ব্যাপারে কি করতে যাচ্ছেন তা ধোঁয়াশাই রয়ে যাচ্ছে যেন। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এর প্রতিবেদনটিতে তারা জানায়, জনাব ট্রাম্প এইসব ক্লাসিফাইড তথ্য উপেক্ষা করতে পারেন, যেভাবে তিনি বিশ্বাস করেন আমেরিকার সুবিধা কোথায় আর কিসে।
ট্রাম্প খাশোগি হত্যায় ‘দুর্বৃত্তদের’ ওপর চাপিয়ে দিতে পারেন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরীক্ষিত প্রতিবেদনকে অগ্রাহ্য করেই, অনেক ক্ষেত্রেই তিনি যেমন করে এসেছেন। দুর্বৃত্ত তত্ত্বকে গোয়েন্দা সংস্থারা আগেই প্রত্যাখান করেছে।
খাশোগিকে সৌদি সরকার হত্যা করেছে এবং তাদের কাছে এর প্রমাণ আছে বলে তুর্কি কর্মকর্তাদের দাবি করে আসছে। এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে সৌদির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন সৌদ বিন নাইফ বিন আব্দুল আজিজ বলেন, খাশোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরই বের হয়ে যান। যদিও কোন তদন্তেই তাদের খাশোগির বের হয়ে যাবার কোন তথ্য মেলেনি।
বিবার্তা/সোহান
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]