শিরোনাম
​ এবার অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসও জেরুসালেমে!
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:০৪
​ এবার অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসও জেরুসালেমে!
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পবিত্র নগরী জেরুসালেমের ওপর ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিম - এ তিন ধর্মের মানুষেরই দাবি আছে। তাদের প্রত্যেকের কাছে এ নগরী পবিত্র। কিন্তু ইসরাইল একাই নগরীটি পেতে চায় এবং প্রায়ই বলে থাকে যে, এটা তাদের অবিনশ্বর রাজধানী। এ টানাপোড়েনের কারণেই বিশ্বের কোনো দেশ ইসরাইলের তথাকথিত ''অবিনশ্বর রাজধানী''তে তাদের দূতাবাস সরিয়ে নেয়নি। ব্যতিক্রম ঘটালেন কেবল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বছরের শেষ দিকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন এবং চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে স্থানান্তর প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়। এরপর প্যারাগুয়ে ও গুয়াতেমালাও দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু পরে প্যারাগুয়ে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।


সর্বশেষ ট্রাম্পের কাতারে শামিল হতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন মঙ্গলবার জানান, ইসরায়েলের তেল আভিভ থেকে দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়া হতে পারে। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার পেছনে আছে এক বিরাট রাজনৈতিক খেলা।


খেলাটি কী, তা পরে বলা যাবে। তার আগে প্রধানমন্ত্রী মরিসনের বক্তব্য শোনা যাক। মঙ্গলবার অপ্রত্যাশিতভাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্যালেস্টাইনে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে অঙ্গীকারাবদ্ধ। কিন্তু সত্যি বলতে কী, বিষয়টি সেভাবে এগোচ্ছে না। আপনি দিনের পর দিন একইরকম চেষ্টা চালিয়ে ভিন্ন ফল আশা করতে পারেন না।''


অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাস জেরুসালেমে স্থানান্তর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমি মনে করি, অস্ট্রেলিয়ার এ ব্যাপারে খোলা মন নিয়ে ভাবা উচিত। আমি এক্ষেত্রে খোলা মনের এবং আমাদের সরকারও এ ব্যাপারে খোলা মন নিয়ে ভাবছে।''


এদিকে অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য নীতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জেনে খুশিতে বাগ বাগ করছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি টুইটারে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রতি তিনি ‘খুব কৃতজ্ঞ' বোধ করছেন।


রাজনীতির খেলা


সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন আকস্মিক এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রভাব আছে কি না। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাঁর কোনো যোগাযোগ হয়নি।


তাহলে কেন এ সিদ্ধান্ত - জানতে চাওয়া হলে প্রধানমন্ত্রী মরিসন জানান, ইসরাইলে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত ডেভ শর্মাই এই প্রস্তাব করেন।
উল্লেখ্য, মরিসনের দলের প্রার্থী হয়ে সিডনির এক আসনে উপ-নির্বাচনে লড়ছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত শর্মা। আগামী শনিবারের এই নির্বাচন মরিসনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শর্মা যদি জিততে না পারেন তাহলে মরিসনের দল এক আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে।


সিডনির ওই আসনে বহু ইহুদির বসবাস। তাঁদের ভোট বাগাতেই মরিসন জেরুসালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের কথা ভাবছেন বলে সমালোচনা করেছে বিরোধী দল। বিরোধী দলের মুখপাত্র পেনি ওং-এর ভাষায় ‘‘স্কট মরিসন এখন তাঁর চাকরি বাঁচাতে এতই মরিয়া যে, সামান্য কিছু ভোট পাওয়ার জন্য তিনি যা খুশি বলছেন। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থের কথাও তিনি ভাবছেন না।''


এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দূতাবাস সরানো বিষয়ক মন্তব্যের পর ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, তারা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করতে পারে।


দেশে ও বিদেশে এমন প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে মরিসন সংসদকে জানিয়েছেন, দূতাবাস সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তিনি মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন। সূত্র : এপি/রয়টার্স


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com